<p>টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং (৪১) চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকার শীর্ষ স্থান দখল করেছেন। বর্তমানে তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ৪৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা তাকে ‘হুরুন চায়না রিচ লিস্ট ২০২৪’-এর প্রথম স্থানে নিয়ে এসেছে।</p> <p>ঝাং ইমিং-এর বাবা-মা সরকারি চাকরিজীবী। তারা আগেই হয়তো বুঝেছিলেন ছেলে বড় হয়ে বিশাল কিছু করবেন। নয়তো তাঁর নাম ‘ঝাং ইমিং’ রাখতে যাবেন কেন? চীনে ‘ঝাং ইমিং’ অর্থ প্রথম প্রচেষ্টায় সবাইকে অবাক করে দেওয়া। চীনের সেরা ধনী হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো কাজই করেছেন ঝাং। বর্তমানে তাঁর সম্পদের মূল্য চার হাজার ৫৬০ কোটি ডলার। টিকটকের মূল কম্পানি বাইটড্যান্স থেকে পদত্যাগ করলেও এখনো কম্পানিটিতে ২০ শতাংশ মালিকানা আছে তাঁর।</p> <p>গত বছর বাইটড্যান্সের আয় ৩০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি ডলার। ফলে বাইটড্যান্সের পাশাপাশি তাঁর সম্পদও বেড়েছে। ২০১৮ সালেও তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬০০ কোটি ডলার। সে হিসাবে ছয় বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১০ গুণ।</p> <p>সারা বিশ্বে টিকটক জনপ্রিয় হলেও প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিংয়ের নাম খুব বেশি মানুষ জানে না। মার্ক জাকারবার্গ, ইলন মাস্ক বা জেফ বেজসের মতো তিনি পরিচিত মুখ নন। আড়ালে থাকতে পছন্দ করেন বলে চীনের বাইরে খুব একটা পরিচিতি নেই তাঁর।</p> <p>মুখচোরা ঝাংয়ের চ্যালেঞ্জ পছন্দ : ২০০৫ সালে ঝাং স্নাতক পাস করেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তবে তিনি প্রথমে ভর্তি হয়েছিলেন মাইক্রোইলেকট্রনিকসে।</p> <p>তিয়ানজিনের নানকাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই খণ্ডকালীন কাজ শুরু করেন। ওয়েবসাইট তৈরি করে ও শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারের সমস্যা ঠিক করে আয় করতেন তিনি। এ ছাড়া এয়ারফেয়ার টিকিটের জন্য সার্চ ইঞ্জিন ও মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফরম তৈরি করেছিলেন ঝাং। পড়াশোনা শেষে যোগ দেন মাইক্রোসফটে। সেখানে কাজ করেন ছয় মাস। তবে মাইক্রোসফটে তেমন কিছু করার ছিল না। তিনি বলেন, মাইক্রোসফটে চাকরির সময় অর্ধেক দিন কাজ করতাম আর বাকি সময় বই পড়ে কাটাতাম। খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং কাজ থাকত না বলে বেশির ভাগ সময়ই অলস বসে থাকতাম।<br /> মাইক্রোসফটের চাকরি ছাড়ার পর ২০১২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাইটড্যান্স। কম্পানিটির যাত্রা শুরু হয়েছিল চার রুমের একটি অ্যাপার্টমেন্টে। এর চার বছর পর বাইটড্যান্সের অধীন চালু হয় টিকটক। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও টিকটকের জনপ্রিয়তা তুমুলভাবে বাড়ে কভিড মহামারির সময়।</p> <p>কয়েক বছর ধরেই চীন সরকার দেশটির প্রযুক্তি খাতের ওপর কড়া নজরদারি করছে। সে দেশের প্রযুক্তি খাতের শত কোটিপতিরাও সরকারি চাপের মুখে পড়েছেন। এরই জের ধরে ২০২১ সালে বাইটড্যান্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ঝাংও পদত্যাগ করেন।</p> <p>তবে পদত্যাগের আসল কারণ কখনো সামনে আনেননি। বিদায়কালে কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি খুব বেশি সামাজিক নই। একা একা যেসব কাজ করা যায়, সেগুলো করতেই পছন্দ করি। যেমন—অনলাইনে থাকা, পড়া, গান শোনা এবং ভবিষ্যতে কোন কাজগুলো করা সম্ভব হতে পারে, তা নিয়ে চিন্তা করা। সত্যিটা হলো, আদর্শ ম্যানেজার হওয়ার জন্য যেসব গুণের প্রয়োজন, সেগুলোর সবটি আমার মধ্যে নেই। আমার আসলে কম্পানির এমন কোনো পদে থাকা উচিত, যেখানে সরাসরি ম্যানেজমেন্টের কাজ নেই।’ দায়িত্ব ছাড়ার পর দেশও ছাড়েন তিনি।</p>
