<p>রান্না ও ওষুধ হিসেবে আদার শক্তিশালী একটি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যুগ যুগ ধরে এই মশলাটি স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে এবং নির্দিষ্ট কিছু রোগের চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছে অধিক পরিচিত। এই আদা অনেকভাবেই খাওয়া যায়। এবারের প্রতিবেদনে কাঁচা আদা জলের উপকারিতা তুলে ধরা হলো।</p> <p><strong>কেন আদা-জল খাবেন </strong></p> <p>আদা ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। সেই সঙ্গে জিঞ্জেরল ও শোগাওলের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে আদায়। এই পুষ্টি ও যৌগগুলো শরীরের জ্বালাপোড়া প্রতিরোধ, হজম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবদান রাখে। এ ছাড়া এটি বমি বমি ভাব কমায়, ইমিউন ফাংশনকে সমর্থন করে এবং ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আদা অন্তর্ভুক্ত করার আরো কিছু কারণ রয়েছে।</p> <p><strong>হজমশক্তি বাড়ায়</strong></p> <p>কাঁচা আদার মধ্যে জিঞ্জেরল ও শোগাওলের মতো সক্রিয় যৌগ রয়েছে। এটি হজমকারী এনজাইমগুলোকে বৃদ্ধি করে। আর এই এনজাইমগুলো খাদ্যকে আরো ভাঙ্গতে সাহায্য করে। এছাড়া পেট ফুলে যাওয়া, গ্যাস ও বদহজমের ঝুঁকিও কমায়। খাওয়ার পরে আদা জল পান করলে হজম আরো ভালো হয় এবং অস্বস্তি দূর হয়।</p> <p><strong>বমি বমি ভাব কমায়</strong></p> <p>বমি বমি ভাব কমাতে আদা ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়। কাঁচা আদার জলে থাকা যৌগগুলো পেটের আস্তরণকে ঠাণ্ডা করতে এবং বমি বমি ভাব বন্ধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে পেট ফোলাভাব ও অস্বস্তির দূর করে। প্রতিদিনের রুটিনে আদা জল যোগ করে এসব সমস্যা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেতে পারেন।</p> <p><strong>পেটের জ্বালাপোড়া কমায়</strong></p> <p>পেটে জ্বালাপোড়ায় ভোগা রোগিদের জন্য কাঁচা আদার জল প্রশান্তির কারণ হতে পারে। আদা পাকস্থলীর অ্যাসিডের উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে এবং নিম্ন খাদ্যনালীর স্ফিঙ্কটারের সঠিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। খাবারের পরে আদা জল খেলে বেশি উপকার পাওয়া যেতে পারে।</p> <p><strong>পরিপাক ক্ষমতা বাড়ায়</strong></p> <p>আদার থার্মোজেনিক বৈশিষ্ট্য পরিপাকে হার বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। খাওয়ার পর কাঁচা আদার জল শরীরের ক্যালোরি বার্ন করার ক্ষমতা বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ ছাড়া খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করতে সাহায্য করে। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা থেকেও বাঁচাতে পারে।</p> <p><strong>রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়</strong></p> <p>আদা হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি পাওয়ার হাউস। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁচা আদার পানিতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ অসুস্থতার বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া সাধারণ সর্দি ও ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে।</p> <p><strong>শরীরকে বিষমুক্ত করে</strong></p> <p>কাঁচা আদার পানি শরীর থেকে টক্সিন নির্মূল করার মাধ্যমে ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করতে পারে। আদা প্রস্রাব উৎপাদনে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে খারাপ পদার্থ বের করে দেয়।</p> <p><strong>রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়</strong></p> <p>আদা রক্তনালীগুলোকে শিথিল ও প্রসারিত করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এর ফলে অক্সিজেন ও পুষ্টি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যুতে পৌঁছে যায়।</p> <p><strong>রক্তে শর্করার মাত্রায় ভারসাম্য রাখে</strong></p> <p>কাঁচা আদার জল রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সাহায্য করতে পারে। এটি ডায়াবেটিক বা প্রিডায়াবেটিক উপকারী। আদা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে ও গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া রক্তে শর্করার স্পাইক ও ক্র্যাশ কমিয়ে আনে। নিয়মিত সেবন রক্তে শর্করার মাত্রায় ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।</p> <p><strong>মাসিকের ব্যাথা কমায়</strong></p> <p>ঐতিহ্যগতভাবে মাসিকের অস্বস্তি দূর করতে আদা জল ব্যবহৃত হয়। মাসিকের ব্যথার তীব্রতা ও সময়কাল কমাতেও সাহায্য করতে পারে।</p> <p><strong>কাঁচা আদার জল তৈরি করবেন যেভাবে।</strong><br />  <br /> ১. এক টুকরো তাজা আদার মূল নিন।<br /> ২. আদা খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং ছোট টুকরো টুকরো করে নিন। <br /> ৩. ২-৩ কাপ পানি ফুটিয়ে আদা কুচি দিয়ে দিন।<br /> ৪. এটি ৫-১০ মিনিট সিদ্ধ করুন। <br /> ৫. আদার টুকরো ছেঁকে নিন এবং এবং কিছুটা ঠাণ্ডা করে পান করুন।</p> <p>সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া</p>