<p>মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর ঘিরে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকায়। এতে টেকনাফ পৌরসভা, হ্নীলা, সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।</p> <p>এদিকে টেকনাফ- সেন্টমার্টিন নৌপথে এবার রড ও সিমেন্ট বোঝাই দুটি ট্রলারসহ ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মঙ্গলবার বিকেলে নাফ নদের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ট্রলার মালিক এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ। এ ঘটনার পর থেকে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।</p> <p>এর আগে ৩ নভেম্বর ওই এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর মোটামুটি শান্তই ছিল সীমান্ত পরিস্থিতি।</p> <p>টেকনাফ সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টার পর থেকে বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত মংডু শহর এলাকা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসতে থাকে। একই সময়ে মিয়ানমারের মংডু এলাকায় রাতদিন যুদ্ধবিমানের চক্কর দিতে দেখেছেন টেকনাফ পৌরসভা, হ্নীলা, সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের বাসিন্দারা।</p> <p>ভেসে আসা বিস্ফোরণের শব্দ মংডু শহরের আশপাশের উকিলপাড়া, ফয়েজীপাড়া, সুধাপাড়া, নাপিতের ডেইল, নয়াপাড়া, সিকদারপাড়া ও হারিপাড়া এলাকা থেকে আসছে।</p> <p>সীমান্তের বাসিন্দা ও রোহিঙ্গাদের অনেক স্বজন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রয়েছেন। মাঝে মাঝে তাদের কাছ থেকে যুদ্ধের তথ্য পান এপারের বাসিন্দারা।</p> <p>সেসব তথ্যের ভিত্তিতেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের ভাষ্য, মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংঘাতে রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এতে পিছু হটেছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী। ফলে এখন তারা বিমান থেকে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।</p> <p>সাবরাং ইউনিয়নের আছারবুনিয়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাবের বলেন, ‘এমন বিকট বিস্ফোরণের শব্দ কখনো শোনা যায়নি। ফজরের নামাজের সময় বোমার শব্দে থরথর করে কেঁপে উঠে পুরো মসজিদ।’<br /> শাহ পরীর দ্বীপের সংবাদকর্মী জসিম মাহমুদ বলেন, “নয় মাস ধরে এলাকার মানুষের চোখে ঘুম নেই। দিনের বেলা তো যেমন-তেমন, রাত হলেই বাড়ে দুশ্চিন্তা। মিয়ানমারের সমস্যার কারণে এপারের বাসিন্দারা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে।</p> <p>‘যুদ্ধ বিমানগুলো আমার বাড়ির ওপর দিয়ে গিয়ে বোমা নিক্ষেপ করছে এমন মনে হয়।’</p> <p>হ্নীলার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নাফ নদীর জালিয়ার দিয়া ও লাল দিয়া নামে এ দুটি চরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী দুটি গোষ্ঠী অবস্থান করছে। তাদের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলির পাশাপাশি মংডু শহর থেকে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। সব মিলিয়ে সীমান্তের মানুষগুলো ভালো নেই। সবসময় আতঙ্কের মধ্যে জীবনযাপন করতে হচ্ছে।’</p> <p>হ্নীলার ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী ও সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে। লোকজন শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। বিশেষ করে, শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে খুবই বিপাকে পড়তে হচ্ছে।</p> <p>টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এর ফলে সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের নানান ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।<br /> ‘এ সংঘাতের জেরে কেউ যাতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’</p> <p>এদিকে রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এলাকাই এখন আরাকান আর্মির দখলে। ফলে স্থলভাগে যেসব যুদ্ধের খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।</p> <p>তাদের ধারণা, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ) এবং আরো কয়েকটি গোষ্ঠীর এখন সংঘাত পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। যদিও এসব তথ্যের কোনোটার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।</p> <p><strong>আরাকান আর্মি এবার ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে </strong></p> <p>টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে এবার রড ও সিমেন্ট বোঝাই দুটি ট্রলারসহ ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মঙ্গলবার বিকেলে নাফ নদের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এ অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী ট্রলার মালিক এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ।</p> <p>তিনি জানিয়েছেন, তার মালিকানাধীন এসবি রাসেল ও আব্দুর রবের মালিকানাধীন এসবি ফারুক নামে দুটি সার্ভিস ট্রলার টেকনাফ থেকে রড ও সিমেন্ট ভর্তি করে সেন্টমার্টিন নেওয়ার সময় নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে নিয়ে গেছে আরকান আর্মির সদস্যরা। ট্রলার দুটিতে ছয় জন মাঝিমাল্লা রয়েছেন। বিষয়টি  বিজিবি, কোস্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়ে ট্রলারসহ ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি।</p> <p>টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে এবার রড ও সিমেন্ট বোঝাই দুটি ট্রলারসহ ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মঙ্গলবার বিকেলে নাফ নদের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ট্রলার মালিক এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ।</p> <p>তিনি জানিয়েছেন, তার মালিকানাধীন এসবি রাসেল ও আব্দুর রবের মালিকানাধীন এসবি ফারুক নামে দুটি সার্ভিস ট্রলার টেকনাফ থেকে রড ও সিমেন্ট ভর্তি করে সেন্টমার্টিন নেওয়ার সময় নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে নিয়ে গেছে আরকান আর্মির সদস্যরা। ট্রলার দুটিতে ছয়জন মাঝিমাল্লা রয়েছেন। বিষয়টি বিজিবি, কোস্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। </p> <p>টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কেউ আমাদেরকে বিষয়টি অবহিত করেননি। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। </p> <p>কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিনের স্টেশনের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি জানার পর মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তাছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। </p>