<p>আজ ৪ নভেম্বর, বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে প্রাণ হারায় ২৮ নিরীহ বাঙালি। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে এই গণহত্যার স্বীকৃতি মেলেনি এবং নিহতদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম এই দিবসের গুরুত্ব জানে না, আর অনেকেই ঘটনা জানলেও সঠিক ইতিহাস জানে না। গণকবরটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে।</p> <p>১৯৭১ সালের ৪ নভেম্বর, রাত প্রায় সাড়ে ১১টা। স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা বিভিন্ন গ্রাম থেকে ২৮ বাঙালিকে আটকে শহরে একত্রিত করে। এরপর শুরু হয় তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন। এক পর্যায়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গুলি করে একসঙ্গে হত্যা করা হয় তাদের। পরে তাদের মৃতদেহ ধুনট থানা ভবনের প্রায় ২০০ গজ পূর্ব দিকে পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামে দুটি গণকবরে সমাধিস্থ করা হয়।</p> <p>নিহতদের মধ্যে ধুনট উপজেলার ভরনশাহী গ্রামের জহির উদ্দিন, কান্তনগর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান, মাজবাড়ী গ্রামের ফরহাদ আলী ও পর্বত আলী, জিল্লুর রহমান এবং চাঁন্দারপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফ, শিয়ালী গ্রামের নুরুল ইসলাম রয়েছে। গণকবরে এসব শহীদদের নাম লেখা রয়েছে। তবে একই সময় পাকিস্তানি সেনাদের বুলেটের আঘাতে নিহত আরো ২১ মুক্তিযোদ্ধার নাম ও পরিচয় এখনো জানা যায়নি। স্বাধীনতার পর সরকারের পক্ষ থেকেও তাদের নাম ও পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয়নি। তাই আজও গণহত্যার ইতিহাস অজানা রয়ে গেছে।</p> <p>একাত্তরে গণহত্যার শিকার পরিবারের সদস্যরা জানান, এখনো শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। তারা সেদিনের গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং শহীদ পরিবার হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে সরকারের কাছে আবেদন করেন।</p> <p>বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ধুনট উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি সহায়তার পাশাপাশি নিহতদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদাপ্রাপ্তির জন্য তারা সরকারের কাছে বিভিন্ন সময়ে দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে বর্তমান সরকারকে এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’</p>