<p style="text-align:justify">চালু হলো খুলনা থেকে যশোর হয়ে ঢাকামুখী ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’। তবে প্রথম দিন যশোর জংশন থেকে এক ছটাক সবজিও ওঠেনি ট্রেনটিতে। যদিও দেশে সবজি উৎপাদনে যশোরের অবস্থান বরাবরই শীর্ষে।</p> <p style="text-align:justify">অভিযোগ রয়েছে, তেমন কোনো প্রচার ছাড়াই ট্রেনটি চালু করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। যদিও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বলছেন, সবজিবাহী ট্রেন চালুর কোনো খবর তারা গতকাল সোমবার পর্যন্ত জানতেন না।</p> <p style="text-align:justify">প্রলম্বিত বর্ষাসহ নানা কারণে এখন সবজির দাম আকাশছোঁয়া। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে সবজির দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্তের আওতার বাইরে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ১৫টি উৎপাদক অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী সহজে সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল।</p> <p style="text-align:justify">এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় সবজির প্রথম ট্রেনটি খুলনা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। সকাল সোয়া ১১টায় এটি যশোর জংশনে আসার কথা থাকলেও ৪০ মিনিট বিলম্বে পৌঁছায়।</p> <p style="text-align:justify">ট্রেনটি যশোর জংশন ছাড়ে কোনো সবজি ছাড়াই। চাষি বা ব্যবসায়ীদের কেউ সবজি নিয়ে এখানে অপেক্ষায় ছিলেন না। অভিযোগ রয়েছে, সবজিবাহী স্পেশাল ট্রেন চলাচলের তথ্য সাধারণের মাঝে প্রচার করেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। এমনকি স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছেও এই সম্বন্ধে কোনো তথ্য ছিল না। কৃষিভিত্তিক রিপোর্ট সবচেয়ে বেশি প্রচার পায় যে টেলিভিশনে সেই চ্যানেল আইয়ের যশোর প্রতিনিধি আকরামুজ্জামানও এই বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">তবে রেলওয়ে যশোর জংশনের মাস্টার আয়নাল হোসেন দাবি করেন, সবজিবাহী স্পেশাল ট্রেনের ব্যাপারে তারা ব্যবসায়ী পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। পাশাপাশি কৃষি বিভাগকেও নতুন সার্ভিসটি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার এই বিশেষ ট্রেনটি খুলনা থেকে যশোর হয়ে ঢাকায় যাবে।</p> <p style="text-align:justify">জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ড. সুশান্তকুমার তরফদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। অথচ কৃষক-ব্যবসায়ী-ভোক্তাদের মধ্যে লিংকেজ তৈরি করা আমাদের অন্যতম কাজ। তবু আমি আজ যখন জানতে পেরেছি, তখন এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি স্টেশনে লোকও পাঠিয়েছি।’</p> <p style="text-align:justify">যশোর জংশনের মাস্টার আয়নাল হোসেন জানান, প্রতি কেজি সবজি বা কৃষিপণ্য এক টাকা ৪০ পয়সা ভাড়ায় যশোর থেকে ঢাকা পাঠানো যাবে। সাশ্রয়ী হওয়ায় কৃষকরা এই সার্ভিস ব্যবহার করবেন বলে তিনি আশাবাদী।</p> <p style="text-align:justify">বারীনগর সবজি ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন ভুট্টো জানান, তিনি কৃষিপণ্যের স্পেশাল ট্রেন সম্বন্ধে গতকাল জানতে পেরেছেন। আজ কোনো সবজি ট্রেনযোগে পাঠানো হয়নি জানিয়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজিহাটের এই ব্যবসায়ী বলছেন, ট্রেন সার্ভিস তাদের জন্য লাভজনক হবে না। কারণ তারা মাঠ বা হাট থেকে সরাসরি ট্রাকে উঠিয়ে সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট বা অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেন। ট্রেনে সবজি পাঠাতে শ্রমিক খরচ অনেক বাড়বে।</p> <p style="text-align:justify">যশোর থেকে ফুল, সবজিসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য ট্রেনযোগে ঢাকায় পাঠানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে ‘বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি’। এই প্ল্যাটফরমের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ভিটু জানান, কৃষিপণ্যবাহী ট্রেন চালানোর কোনো সংবাদ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়নি।</p> <p style="text-align:justify">স্পেশাল ট্রেনে সবজির প্রধান জোন যশোর থেকে কেন সবজি উঠল না, তা জানার জন্য রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার মামুনুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি কেটে দিয়ে টেক্সট পাঠাতে বলেন। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠালে তিনি সরাসরি জবাব না দিয়ে মঙ্গলবার স্পেশাল ট্রেনটিতে বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু সবজি উঠেছে বলে লিখিতভাবে জানান। </p> <p style="text-align:justify">তার দেওয়া তথ্য মতে, এদিন ট্রেনটিতে খুলনা থেকে ৬৪০ কেজি, ঝিনাইদহের সাফদারপুর থেকে ৫০০, আনসারবাড়িয়া থেকে ৩৫০ এবং চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে ১০০ কেজি কৃষিপণ্য উঠেছে।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে সবজিবাহী ট্রেনটির পরিচালক জুলহাস উদ্দিন জানান, যশোর জংশনে ১০ মিনিটের যাত্রাবিরতি ছিল। কিন্তু এখানে কোনো পণ্য পাওয়া যায়নি। তবে আগামীতে পণ্য মিলবে বলে তিনি আশাবাদী।</p>