<p>কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ আবু সাঈদ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার ৯০ দিন পর শিক্ষক নিবন্ধনের ফলাফল প্রকাশ হলো। তার ফলাফল পেয়ে তার বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই আবেগাপ্লুত। বিশেষ করে ছোট বোন সুমি খাতুন নিবন্ধনের ফলাফল দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।</p> <p>জানা গেছে, গত জুলাইয়ে দেশে সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এতে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের আবু সাঈদ গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। তার মৃত্যুতে দেশের ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা দাবিতে রাজপথে নেমে আসে। একপর্যায়ে গত ৫ আগস্ট সরকারের পতন হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="টঙ্গী পূর্ব থানায় ২ মাসে ৪ ওসি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/15/1728980334-49c140f4ea25640ec6a42d294ef333d0.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>টঙ্গী পূর্ব থানায় ২ মাসে ৪ ওসি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/15/1435358" target="_blank"> </a></div> </div> <p>অপরদিকে অসচ্ছল পরিবারের সন্তান শহীদ আবু সাঈদ চাকরির জন্য ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষা-২০২৩-এ ইবতেদায়ি সাধারণ শিক্ষক হিসেবে অংশ নেন। গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে আবু সাঈদ কৃতকার্য হন। এ ফলাফল পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা-মা, পরিবারসহ পুরো গ্রামের মানুষ আফসোস করছেন। কারণ অভাবী পরিবারের সর্বোচ্চ শিক্ষিত ছিলেন আবু সাঈদ। তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখত তার পরিবার। কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়ায় তার পরিবারের মনোবাসনা পূরণ না হওয়ায় তারা বুক চাপড়াচ্ছেন।</p> <p>আবু সাঈদের ছোট বোন সুমী আক্তার বলেন, ‘বলার মতো ভাষা নেই, আমরা বিশ্বাস করছিলাম ভাইয়ের চাকরি হবে, কিছু না কিছু একটা করবে। আমাদের আশা ছিল, আবু সাঈদ ভাই বিসিএস করবে। অনেক খারাপ লাগতেছে যে চাকরি হলো, সব কিছুই হলো; কিন্তু ভাই আর সেই চাকরিটা করতে পারল না। অনেক কষ্ট লাগতেছে। আমাদের চাকরি হইতেছে, কিন্তু ভাইয়ের জায়গাটা পূরণ হচ্ছে না।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="রংপুরে সারজিস-হাসনাতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/15/1728966724-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>রংপুরে সারজিস-হাসনাতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/15/1435304" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের চাকরি না হলেও ভাইয়া যদি চাকরি করত, তাহলে অনেক খুশি হইতাম। আজকে আমাদের এত কিছু আছে, কিন্তু মনে খুশি নাই। অনেক খারাপ লাগতেছে এই দিনটাতে। আমার ভাইয়ের সাথে যারা নির্মম অত্যাচার ও অবিচার করেছে, তাদের প্রত্যেকের শাস্তি ও ফাঁসি চাই। এটাই আমাদের দাবি। কারণ আমার ভাই কোনো সন্ত্রাসী ছিল না, কোনো অন্যায় করে নাই। একটা ন্যায্য অধিকার চাইছিল, ছাত্রদের অধিকার। সেই অধিকার চাওয়ার কারণেই আমার ভাইকে গুলি করে মারছে।’</p> <p>বেরোবির ভিসি অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, ‘আবু সাঈদ যে মেধাবী ছিল, শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় তার মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। কিন্তু আবু সাঈদ জীবদ্দশায় তা দেখতে পারল না। তার আত্মত্যাগের মূল্য আমরা তাকে দিতে পারব না। সারা বিশ্বে সে প্রমাণ করেছে, সে একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। তার জন্য দোয়া করছি, সে যেন জান্নাতবাসী হয়।’</p> <p>গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।</p>