<p>আর একদিন পর অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। ইতোমধ্যে পূজার আয়োজন প্রস্তুত। পূজা উপলক্ষে ৩৬টি মণ্ডপ পূজা উদযাপনের জন্য প্রস্তুত। তবে গত বছর ৫১টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলে এবছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ১৫টি কমেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বন্যা, লোকবল, আর্থিক ও  পারিবারিক কারণে এবছর পূজা উদযাপন করতে পারছে না বলে জানান মন্দির কর্তৃপক্ষরা। </p> <p>কেন্দুয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা যায়, এবছর যে ১৫টি পূজামন্ডপ পূজা উদযাপন হচ্ছে না। তার মধ্যে পৌরসভার সাউদপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দির, আইথর মেস্তরিবাড়ী দূর্গামন্দির, আশুজিয়া ইউনিয়নে গোবিন্দপুর দূর্গা মন্দির, সিংহেরগাও করবাড়ি দূর্গা মন্দির,দলপা ইউনিয়নে বুধপাশা দূর্গা মন্দির, গড়াডোবা ইউনিয়নে বাঁশাটি দূর্গা মন্দির, বান্দনাল দক্ষিণ পাড়া দূর্গা মন্দির,গন্ডা ইউনিয়নে ভাটলারা পূর্জা মন্দির, গাড়াদিয়া মজুমদারবাড়ী দূর্গা মন্দির সান্দিকোনা ইউনিয়নে সাহিতপুর বাজার রবিদাস দূর্গা মন্দির, বলাইশিমুল ইউনিয়নে রাজীবপুর সরকারবাড়ী দূর্গা মন্দির, রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নে ফতেপুর কর্মকারবাড়ী মন্দির, পাইকুড়া ইউনিয়নে পেমই মেস্তরিবাড়ী পূজা মন্দির, পেমই ভোমিকবাড়ী পূজা মন্দির এবং মোজাফরপুর ইউনিয়নে মোজাফরপুর পূর্বপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির উল্লেখযোগ্য। </p> <p>উপজেলা কান্দিউড়া ও মোজাফরপুর  ইউনিয়নে এবছর দুর্গাপূজা পালন করছে না বলে জানান কেন্দুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।</p> <p>এবছর দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত করতে না পারা পৌরসভার সাউদপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি নয়ন গুণ ও কান্দিউড়া ইউনিয়নের তাম্বুলিপাড়া দূর্গা মন্দিরের সভাপতি শ্রীবাস বর্মণকে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, আমাদের লোকবলসহ আর্থিক সমস্যার কারণে এবছর আমরা পূজা উদযাপন করতে পারছি না।</p> <p>উপজেলায় পৌরসভা, আশুজিয়া, দলপা, গড়াডোবা, গন্ডা, সান্দিকোনা, মাসকা, বলাইশিমুল, নওপাড়া, চিরাং, রোয়াইলবাড়ী ও পাইকুড়া ইউনিয়নে যথাযথ মর্যাদায় দূর্গাপূজা উদযাপনে প্রস্তত। এর মধ্যে উপজেলায় গতবারের চেয়ে পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়নে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে। কেন্দুয়ায় প্রতিমা তৈরির ভাস্কররা ব্যস্ত সময় পার করে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছে। উপজেলার দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুরসহ ১২টি প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে।</p> <p>পূজায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো প্রকার গুজব ছড়ালে আইন শৃংখলা বাহিনীকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য অনুরোধ জানান সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ পাশাপাশি শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন তারা। </p> <p>পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কে কেন্দুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অনিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, গত বছর ৫১টি পূজা মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, এবছর ১৫ পূজা মন্ডপ কমে ৩৬ মন্ডপে পূজা হবে। কারণ হিসেবে পারিবারিক সমস্যা, বন্যা এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি মনে করেন তিনি। </p> <p>কেন্দুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজল কুমার সরকার এবছর গতবছরের চেয়ে ১৫টি পূজামন্ডপে কম উদযাপনের কারণ হিসেবে বলেন, মা-বাবা মারা যাওয়া, লোকবল, মন্দির পূণ: নির্মাণ, হাওর এলাকায় বন্যা, পারিবারিক ভাবে যারা আগে পুজা করতেন এবার তাদের অনাগ্রহ সহ নানা কারণে পূজা মন্ডপের সংখ্যা কমেছে।</p> <p>তিনি আরো বলেন, আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দল সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। এজন্য প্রতিটি পূজা মন্ডপেই শান্তি -শৃঙ্খলা বজায় রেখে পূজা উদযাপিত হবে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণে বাঙালি সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হবে প্রত্যাশা করি। আশা করছি আগামী বছর গত বছরের তুলনায় আরো বেশি পুজা মন্ডপেই পূজা অনুষ্ঠিত হবে।</p> <p>কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুরক্ষিত রাখতে দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে পালনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার পূজার সময় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। প্রতিটি পূজামণ্ডপে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা, আনসার বাহিনীর সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও সেনাবাহিনীসহ যৌথবাহিনীর সদস্যরা পূজা চলাকালীন সময় টহল দেবে। প্রতিটি মণ্ডপে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে এবং আযান ও নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। </p> <p>কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আসন্ন দুর্গাপূজার সর্বাত্মক প্রস্তুতি  সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু ও শান্তি পূর্ণ ভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে।</p>