<p>হাতুড়ি-পেরেকের ছন্দে নিরলসভাবে কাজ করছেন একদল নির্মাণ শ্রমিক। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম চত্বরে শ্রমিকদের কাজের গতিই বলে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে ইসলামী বইমেলা। বাকি আর কয়েক দিন। বইমেলা সফল করতে শ্রমিকদের মতো অনেকেই কাজ করছেন নিরলসভাবে।</p> <p>ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আগামী ২২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের বইমেলা জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেটের প্রশস্ত চত্বরে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণের বেশি জায়গা নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তাই এবারের মেলায় স্টল বরাদ্দ পেয়েছে প্রায় ৮৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। স্টলের সংখ্যা ও আকার বর্ধিত করার পাশাপাশি নকশায় আনা হয়েছে নান্দনিকতা। প্রকাশকরাও তাঁদের স্টলগুলোকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে সাজসজ্জায় যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন।</p> <p>নতুন আঙ্গিকে, বৈচিত্র্যময় সাজে সাজানো হচ্ছে এবারের বইমেলা। মেলাকে নান্দনিক ও উৎসবমুখর করতে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। যেমন—নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নান্দনিক ডিজাইনে স্থাপন করা হচ্ছে লেখকমঞ্চ। মেলার নিয়মিত প্রচার কার্যক্রমের জন্য থাকছে তথ্য ও মিডিয়াকেন্দ্র। লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা এবং দায়িত্বশীল নাগরিকদের আলাপচারিতা ও বসার জন্য থাকছে বিশেষ স্থান।</p> <p>অন্যদিকে ২০ দিনব্যাপী ইসলামী বইমেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলতে নিয়মিত সিরাত, ফিলিস্তিন, জুলাই অভ্যুত্থানসহ নানা বিষয়ে আলোচনা এবং জ্ঞানভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন থাকছে। শিশু কর্নারকে দৃষ্টিনন্দন অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হচ্ছে। বিশেষ বিশেষ দিনে তাদের জন্য থাকছে শিক্ষামূলক আয়োজন। এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেলা প্রাঙ্গনের শোভা বাড়বে অনেকটাই। এবারই প্রথম ইসলামী বইমেলা ঘিরে এমন সব আয়োজন দেখা গেল।</p> <p>নারীদের জন্য বায়তুল মোকাররম মসজিদে আলাদা নামাজের ঘর রয়েছে। বয়স্কদের জন্য হুইলচেয়ার সেবা দেওয়া হবে। মেলায় হাঁটতে হাঁটতে যাঁরা ক্লান্ত হয়ে যাবেন তাঁদের জন্য থাকবে মসজিদের পূর্ব সায়ানে খানিকটা জিরিয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত। আগের তুলনায় বেশি সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবী মেলার সব আয়োজন সহায়তা ও শৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত থাকবে। ছুটির দিন ছাড়া বইমেলা প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।</p> <p>মেলার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে ইফার মেলা কমিটির আহ্বায়ক রাশিদা আক্তার বলেন, মেলায় স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। আমরা একটি সুন্দর মেলা উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, এ বছর মেলায় অতীতের তুলনায় দশনার্থী বাড়বে।</p> <p>মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় স্টল নির্মাণে ব্যস্ত থাকা পড় প্রকাশের প্রকাশক আদি হাবিবুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে এবারের বইমেলা অনেকখানি আলাদা হবে। মেলাকে সাজানো হচ্ছে আকর্ষণীয় করে। মেলাকে নান্দনিক করতে এবারই প্রথম বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছেন প্রকাশকরা।</p> <p>মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ও রাহনুমার প্রকাশক দেওয়ান মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান তুষার বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই চেষ্টা করি নতুন আঙ্গিকে মেলাকে প্রকাশক-লেখক-পাঠক ও দর্শনার্থীদের সামনে উপস্থাপন করতে। কিন্তু বিগত সময়ে আমাদের সেই চাওয়া-পাওয়া পূরণ হয়নি। এবার তা সফল করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ফলে বৈচিত্র্যময় সাজসজ্জায় মেলাকে সাজানো হয়েছে।’</p>