<p>প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সব বিচারকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিষয়টির ঘোষণা দিয়েছি।’</p> <p>রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাকক্ষে আইনজীবীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।</p> <p>ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, যে মহান আদর্শের ওপর ভিত্তি করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, যে প্রত্যাশায় আমাদের দেশের ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্টে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, এর লক্ষ্য ছিল দেশের সব স্তরে সামাজিক সম্মান, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা।</p> <p>তিনি বলেন, ন্যায়বিচার ও শোষণহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং সমাজের সর্বত্র সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের শাসনের কোনো বিকল্প নেই। </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘একজন বিচারপ্রার্থী ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা নিয়ে প্রথমেই একজন আইনজীবীর দ্বারস্থ হন। পরম বিশ্বাসে বিজ্ঞ আইনজীবীর ওপর তার স্বাধীনতা ও সম্ভ্রম রক্ষার ভার অর্পণ করেন তারা। আমি বিশ্বাস করি, বিচারপ্রার্থী এবং আইনজীবীদের এই সম্পর্ক নির্ভরতার একটি পবিত্র আমানত।</p> <p>তরুণ আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা সিনিয়রদের সম্মান করবেন। আপনারা যখন সিনিয়র হবেন তখন আপনারাও সম্মান পাবেন। আইন পেশায় সফল হওয়ার কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। আপনাদের স্মরণে রাখতে হবে, আপনারা মানুষকে আইনি সেবা প্রদানের জন্য এই মহান পেশায় এসেছেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার মহান লক্ষ্য থেকে কখনোই বিচ্যুত হবেন না। জাগতিক লোভ-লালসা আপনাদের যেন পেশাগত নীতিনৈতিকতা থেকে সরাতে না পারে, সেই বিষয়ে সব সময় সচেতন থাকবেন।</p> <p>তিনি আরো বলেন, নিজেকে সফল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে একজন আইনজীবী সারা জীবন নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। আইন পেশায় সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে প্রয়োজন একাগ্রতা, নিষ্ঠা, সততা, ধৈর্য ও পরিশ্রম। আইনের সর্বশেষ বিধান সম্পর্কে আপনারা নিজেরা আপডেট থাকবেন। আইন জানা ও নিয়মিত চর্চা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। একজন আইনজীবীর পড়াশোনার কোনো নির্দিষ্ট সীমা-পরিসীমা নেই।</p> <p><strong>গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় </strong>আইনজীবীদের গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড আখ্যা দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, সমাজের ভ্যানগার্ড হিসেবে আইন পেশার নীতি-নৈতিকতা যদি ধরে রাখতে পারি, তাহলে সমাজে এর সৌন্দর্য বিকশিত হবে। নিজেকে একজন সত্যিকারের আইনজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে শুধু আইনের ওপর সুদক্ষ দখল থাকলেই চলবে না, নিজেকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আইনজীবীদের কাছে আমার অনুরোধ, আইনি পেশাকে নিছক জীবিকা অর্জনের একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা না করে অধিকারবঞ্চিত মানুষের অধিকার নিশ্চিতে এবং তাদের কল্যাণে কাজ করবেন।</p> <p>সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল ইসলাম মোল্লা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, আইনজীবী নেতা সুবল চন্দ্র সাহা, সৈয়দ মোদাররেস আলী ইসা প্রমুখ।</p>