<p>রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার (৫৯ হাজার কোটি টাকা) আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান, তদন্তে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।</p> <p>অবিলম্বে অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু এবং অনুসন্ধানে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।  </p> <p>সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ববি হাজ্জাজের পক্ষে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করেন। পরে আবেদনকারী সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টের অবকাশের পর হাইকোর্টের এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চে রিটটির শুনানি হবে।</p> <p>বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালযয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালযয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ খানসহ ১৪ জনকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।</p> <p>রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাত ঠেকাতে এবং কথিত অভিযোগ অনুসন্ধান বা তদন্তে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানাতে রিটে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।</p> <p>সেই সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে আত্মসাতসহ বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালযয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুদককে প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এসব বিবাদীদের তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।</p> <p>রিটে বলা হয়েছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব দুদকের। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পরও দুদক সে অভিযোগ অনুসন্ধানে নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছে।</p> <p>ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের (৫৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে দেশের গণমাধ্যমগুলো। টাকা আত্মসাতের কাজে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছন তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ান রোসাটমের কাছ থেকে সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক চুল্লি কিনতে পাঁচ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ ব্যয় ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার।</p> <p>মালয়েশিয়ার ব্যাংকে রক্ষিত বিভিন্ন রাশিয়ান স্ল্যাশ ফান্ড থেকে এই পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তরে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছিল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। যাতে মধ্যস্ততা করেন সজিব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক।</p> <p>গণমাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অনৈতিক আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রকাশিত/প্রচারিত উস্কানিমূলক সংবাদ প্রত্যাখ্যান করছে রসাটম।</p> <p>রসাটম তার সকল প্রকল্পে উন্মুক্ত কর্মপন্থা, দুর্নীতি প্রতিরোধ নীতি এবং ক্রয় পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্যবসা প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ততা বাহ্যিক নিরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিতভাবে নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। রসাটম তার নিজস্ব সুনাম ও স্বার্থ রক্ষায় আদালতের শরণাপন্ন হতেও প্রস্তুত।</p> <p>আমরা গণমাধ্যমে প্রকাশিত/প্রচারিত অসত্য তথ্যগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে কলঙ্কিত করার একটি প্রয়াস হিসেবে বিবেচনা করছি। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি সমস্যার সমাধান এবং জনগণের কল্যাণের স্বার্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে।</p>