<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দিল্লির লালকেল্লায় দেওয়া বক্তব্যে বললেন, ভারত সব সময় বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। ভারতীয়রা বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চায়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লালকেল্লায় ভারতের স্বাধীনতা দিবসে নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস ফোন করলেন নরেন্দ্র মোদিকে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা রক্ষার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেন। দুই নেতার মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে এক্স পোস্টে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে ফোন পেয়েছি। আমরা চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়েছি। তিনি আমাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, সহিংসতার খবরে ভারত সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। শুক্রবার ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোদি-ইউনূসের ফোনালাপ নিয়ে একটি বিবৃতিও দেয়। সেখানে বলা হয়, ড. ইউনূসকে ফোনে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূসকে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল সাউথ সামিটে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।   </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শপথগ্রহণের এক সপ্তাহ পর ড. ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করলেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, শেখ হাসিনার আমলে তাঁদের কাছে ভারত যতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এখন ভারতের প্রতি তাঁদের অনুভবে কোনো পরিবর্তন নেই। তাঁরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইছেন। এমনকি উনি এ কথাও বলেছেন যে তিনি ভারতবিরোধী নন। ইউনূস সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন কয়েক দিন আগে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নষ্ট করতে রাজি নয়। দুই দেশে শান্তি বজায় রাখতে এই সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারত পৃথক সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে কোনো রকম নাক না গলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষত, দক্ষিণ এশিয়ায় চীন যেভাবে তার প্রভাব বাড়াচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মজবুত রাখা ভারতের কাছে একটা মস্ত বড় দায়বদ্ধতা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক দশক আগে ক্ষমতায় আসার পর মোদি সরকার ঘোষণা করেছিল, তাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল সুরটাই হবে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করা। অর্থাৎ প্রথম প্রতিবেশী, তারপর অন্য সব রাষ্ট্র। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক বছরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে ভারতবিরোধিতা অনেক বেড়ে গেছে। এখন ভারতের বিরাট অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করা। সম্প্রতি মালদ্বীপের ভারতবিরোধিতার কথা তো সবারই জানা। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ইতিহাস না হয় আলোচনা না-ই করা হলো। উল্টে এখন দুর্বল পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে চাইছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এসসিও বৈঠকে পাকিস্তানের পাশাপাশি আফগানিস্তানও থাকছে। এখন এই পরিস্থিতিতে ভারত অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের লাইন না নিয়ে বরং সমন্বয় এবং বোঝাপড়ার লাইনে যেতে চাইছে। সামনে ব্রিকসের বৈঠক হবে রাশিয়ায়। সেখানে তো চীনের সঙ্গেও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যে প্রশ্নচিহ্ন একটা ঝুলিয়েছে, ড. ইউনূস মোদিকে ফোন করার পর সেই প্রশ্নের জবাব অনেকটা পাওয়া যাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডেলে যে কথা বলেছেন, তাতেও এটি স্পষ্ট যে ভারত কী চাইছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতের কূটনীতিক মহলের মধ্যেও এখন চলছে বাংলাদেশ নিয়ে নানা মন্থন। চলছে ময়নাতদন্ত। অনেক কূটনীতিক মনে করছেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের যে একদেশদর্শিতা তৈরি হয়েছিল, সেটি বোধ হয় ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ঘাটতি। গোটা বিষয়টিকে আওয়ামী লীগ ও বিজেপির দ্বিপক্ষীয় বিষয় না রেখে এটিকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রিজমে দেখা প্রয়োজন। সে জন্য বিএনপি এবং প্রতিটি শরিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলাদা করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল এনগেজমেন্টে যাওয়া। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে অনেক কূটনীতিক বলছেন, শেখ হাসিনা নিজে ভারতের পাশাপাশি চীনের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রেখেছিলেন। হাসিনা সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, ভীষণভাবে চীনপন্থী ছিলেন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। চীনের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং যে সাহায্য বাংলাদেশ নিয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে ভারত অবহিত থাকা সত্ত্বেও সেগুলো নিয়ে কখনো কোনো চাপ সৃষ্টি করেনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন আলোচনায় বলা হচ্ছে, বিএনপি নেতারাও বারবার ভারতকে বুঝিয়েছেন বাণিজ্যের প্রতি আস্থা রাখতে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যকে তাঁরা সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন, যদি চীনের সঙ্গে ভারত সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়। যখন প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করছেন, তখন বাংলাদেশের নতুন কর্তৃত্ব এবং নেতৃত্বের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক স্থাপন করবে না, এটি সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যে নতুন একটি অধ্যায় নরেন্দ্র মোদি সরকার গড়তে চলেছে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> লেখক : নয়াদিল্লিতে কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষ প্রতিনিধি</span></span></span></span></p>