<p>গত ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। হাজারো ছাত্র-জনতার মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে রংপুর শহর। এই মিছিলে যোগ দেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্দয়ভাবে গুলি ছোড়ে পুলিশ। তাৎক্ষণিক চারজনের মৃত্যুর খবর মিললেও আহত হন শতাধিক। এদেরই একজন রংপুর নগরীর নিউ জুম্মাপাড়া পাকারমাথা এলাকার বয়োবৃদ্ধ বাবু মিয়া (৬৩)। সেদিন পায়ে গুলি লাগায় লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও পায়ে বুলেট নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন যাচ্ছে তাঁর। অর্থাভাবে হচ্ছে না চিকিৎসাও।</p> <p>বাবু মিয়া জানান, ছাত্র-জনতাকে দমাতে পুলিশ এপিসি থেকে গুলি ছোড়ে এবং ছররা গুলি, রাবার বুলেটসহ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় তাঁর পায়ে গুলি লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তবে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে কিছুক্ষণ পরই পালিয়ে যান। এরপর  রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক পা থেকে দুটি গুলি বের করে ওষুধ লিখে দিলে বাড়ি চলে যান তিনি।</p> <p>তিনি বলেন, ‘অপারেশন করে কয়েকটি গুলি বের করলেও এখনো কিছু গুলি পায়ের ভেতরে রয়েছে। দিনভর পা ব্যথা করে, হাঁটতে পারি না। কবে আবার সুস্থ হয়ে বাজারে যেতে পারব এই চিন্তা সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ডাক্তার বলছেন, বড় ধরনের অপারেশন করে সেগুলো বের করতে হবে।’</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাবু মিয়ার পায়ের ভেতরে একাধিক বুলেট থাকায় থেমে থেমে রক্ত, পুঁজ বেরিয়ে আসছে সেখান থেকে। ব্যথা আর তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। হাঁটাচলা করতে পারেন না। পরিবারের সদস্যদের শঙ্কা, যেকোনো সময় পচে যেতে পারে বাবু মিয়ার পা।</p> <p>পরিবারের সদস্যরা জানান, ‘যে বাবু মিয়ার কাঁধে ভর করে চলত সংসার এখন তিনিই অর্থের অভাবে ওষুধ কিনে খেতে এবং চিকিৎসা করাতে না পারায় দিন দিন অবস্থার অবনতি হচ্ছে।’ তাঁর পরিবারে স্ত্রী, তিন ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনি রয়েছে। ছেলেরা দিনমজুর হওয়ায় বাবার পায়ের অস্ত্রোপচার ও ওষুধ কিনে খাওয়ানোর অর্থ জোগাড় করতে পারছেন না। তাই ধীরে ধীরে বাবু মিয়ার পায়ের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।</p> <p>বাবু মিয়ার ছেলে আশরাফুল হোসেন বলেন, ‘ডাক্তার বলছে, বাইরে বাবার অপারেশন করালে অনেক টাকা প্রয়োজন।’</p> <p> </p> <p> </p>