<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কানাইপুকুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জলিলের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২১)। তাঁর পেটে ও দুই পায়ে চারটি গুলি লাগে। এ অবস্থায় তাঁকে সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তির পর গুলি বের করে ব্লাডার ইনজুরির অপারেশন করে ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা। তখন তাঁকে অন্য ওয়ার্ডে শিফট করা হয়। ১৫ দিন পর তাঁকে সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে চার দিন আইসিইউতে রাখা হয়। ২২ আগস্ট সেখানে তাঁর অপারেশন হয়। এ জন্য ১৪ দিন তাঁকে আবারও আইসিইউতে থাকতে হয়। এক মাস ১৭ দিন উন্নত চিকিৎসা দিয়ে জহেদুলকে বাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু বাড়ি এসে তাঁর জটিলতা বেড়ে যায়। এখন ঠিকমতো খেতে ও প্রস্রাব করতে পারছেন না জাহেদুল। সব সময় ব্যথা হয়। রাতে ঘুম হয় না। শরীর ক্রমেই শুকিয়ে যাচ্ছে। গুরুতর আহত জাহেদুলের চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই তাঁর পরিবারের। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, আব্দুল জলিলের তিন ছেলের মধ্যে জাহেদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে ছোটবেলা থেকে নিজের খরচ নিজেই চালিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে জাহেদুল বগুড়ার দুপচাঁচিয়া জেকে কারিগরি কলেজে ম্যানেজমেন্টে স্নাতকে ভর্তি হন। কিন্তু সংসারের অভাব দূর করতে জাহেদুল পাড়ি জমান নারায়ণগঞ্জে। সাইনবোর্ড এলাকায় দুই বন্ধু প্রিন্ট অ্যান্ড প্যাকেজিং প্রতিষ্ঠানে সুপারভাইজার পদে ১৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকরি হয় তাঁর। সেখান থেকে প্রতি মাসে সংসার খরচের জন্য জাহেদুল তাঁর বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা পাঠাতেন। সেই থেকে ভালোই চলছিল তাঁদের পরিবার। কিন্তু হঠাৎ করে ছন্দঃপতন ঘটে তাঁদের সংসারে। গত ৫ আগস্ট সাইনবোর্ড এলাকায় মিছিলে যোগ দেন জাহেদুল। মিছিলে জাহেদুলের দুই পা ও পেটে চারটি গুলি লাগে। জাহেদুল বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসপাতালেই ভালো ছিলাম। বাড়ি আসার পর কিছু খেতে পারছি না। সংসারে আমিই ছিলাম একমাত্র ভরসা। কিন্তু অসুস্থতার কারণে আমিই এখন সংসারের বোঝা হয়ে গেলাম। সমন্বয়ক সারজিস আলম ভাই হাসপাতালে দেখতে এসে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গেছেন। এরপর আর কোনো সহযোগিতা মেলেনি। দরিদ্র বাবার পক্ষে আমার চিকিৎসা মেটানো সম্ভব নয়। ঢাকায় যে আবার চিকিৎসা নিতে যাব অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার মতো সামর্থ্যও আমাদের নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাহেদুলের বাবা আব্দুল জলিল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি গরিব মানুষ। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। ছেলেটা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমি ঢাকায় ছিলাম। তখন আমার পরিবার খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটিয়েছে। টাকার অভাবে ছেলেটাকে বোধ হয় আর বাঁচাতে পারব না। দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার ভালো খাবারের কথা বলেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে ছেলেটাকে ভালো খাবার দিতে পারি না। আমি এখন কী করব ভেবে পাচ্ছি না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>