<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সংরক্ষিত বনের ভেতর গাছপালা ও পাহাড়ি টিলা সাবাড় করে সেখানে গড়ে উঠেছে ইজি বাইকসহ (টমটম) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চার্জিং স্টেশন। এমনকি বিশালায়তনের বনভূমি দখলে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মুরগির ফার্মও। আর যাতায়াতের সুবিধার্থে সেখানে পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তাও। খোদ বন বিভাগের কার্যালয়ের অদূরে অবৈধভাবে জবরদখলের পর সেখানে স্থাপন করা চার্জিং স্টেশন ও মুরগির ফার্মে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংরক্ষিত বনের ভেতরের এই দৃশ্য সরেজমিন চোখে পড়বে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ইসলামনগর এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইলিয়াছ সাঈদীর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট সংরক্ষিত বনের জমি জবরদখলের পর সেই বনভূমি প্লট আকারে বিক্রি করে আসছিল। অভিযুক্ত ইলিয়াছ সাঈদী গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে তিনি ইউনিয়ন যুবদলের অর্থ সম্পাদক ছিলেন। এরপর ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামনগর এলাকার কয়েকজন কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ইলিয়াছ সাঈদী কবজা করে নেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। এরপর তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের নলবিলা বনবিটের সংরক্ষিত বনভূমিতে রাজত্ব কায়েম করতে থাকেন তিনি। গত ১০ বছরে ইলিয়াছ সাঈদী সংরক্ষিত বনভূমি জবরদখলে নিয়ে উঁচু-নিচু, টিলা শ্রেণির পাহাড় কেটে সাবাড়ের পর তা বসবাস উপযোগী করে প্লট আকারে বিক্রি করেছেন মোটা অঙ্কের টাকায়। এরপর অবৈধভাবে সেখানে গড়ে তোলা হয় শত শত বসতি। একইভাবে ইলিয়াছ সাঈদীর সেই সিন্ডিকেট থেকে মোটা অঙ্কের টাকায় দখল কেনার পর সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে ইজি বাইক (টমটম) চার্জিং স্টেশন, মুরগির ফার্মও। এমনকি নিজের অনেক প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলা হয় সেই সংরক্ষিত বনভূমিতে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে সংরক্ষিত বনের ভেতর স্থাপন করা ইজি বাইক (টমটম) চার্জিং স্টেশনে গেলে কথা হয় একাধিক কর্মচারীর সঙ্গে। এ সময় তাঁরা জানান, ইলিয়াছ সাঈদীর কাছ থেকে জায়গা কেনার পর এখানে স্থাপিত এই চার্জিং স্টেশনের মালিক হচ্ছেন বাদশা মিয়া। তিনি বর্তমানে প্রবাসে থাকলেও তাঁরই স্ত্রী এই চার্জিং স্টেশন পরিচালনা করছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই চার্জিং স্টেশন ঘেঁষেই স্থাপন করা হয়েছে বিশালায়তনের মুরগির ফার্ম। এই ফার্মের মালিক হচ্ছেন মুবিনুল ইসলাম। তবে এ নিয়ে তাঁরা গণমাধ্যমের কাছে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা গেছে, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন নলবিলা বনবিটের একেবারে কাছের এই সংরক্ষিত বনের ভেতর গগনচুম্বী শতবর্ষী মাদার ট্রিও (গর্জন) দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব অবৈধ বসতি স্থাপনের কারণে সেই মাদার ট্রিও চরম হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক স্থানে গোড়ালির ছাল তুলে সেখানে এক ধরনের ওষুধ (তুঁত) ব্যবহার করে মেরে ফেলা হচ্ছে শতবর্ষী মাদার ট্রি। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে সংরক্ষিত বনের মাদার ট্রি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংরক্ষিত বনভূমি দখলের পর তা প্লট আকারে বিক্রি করা নিয়ে মোবাইলে কথা হয় ইলিয়াছ সাঈদীর সঙ্গে। এ সময় তিনি দাবি করেন, সংরক্ষিত বনভূমি জবরদখল বা প্লট করে বিক্রির সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন। এটি সম্পূর্ণ তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মেহরাজ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংরক্ষিত বনের ভেতর যদি কেউ অবৈধ বসতি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে, তা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিয়ম রয়েছে জমির মালিকানার কাগজপত্রসহ আবেদনের পর বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু সংরক্ষিত বনের জমিতে ইজি বাইক চার্জিং স্টেশন ও মুরগির ফার্ম কিভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পেল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন প্রশ্নে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চকরিয়া জোনাল কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাদিকুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হয়তো ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>