<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশি কর্মীদের পছন্দের শ্রমবাজারের মধ্যে চারটি শ্রমবাজারই চলতি বছর বন্ধ হয়ে গেছে। এই শ্রমবাজারগুলো হলো ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও মালদ্বীপ। এর মধ্যে গত ১৭ অক্টোবর সর্বশেষ বন্ধ হয় ইতালির শ্রমবাজার। আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনশক্তি রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন করে ওই দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আন্দোলন করার পর থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবে ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মতে, ২০১১ সালে ইরাকের শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার মধ্য দিয়ে গত বছর পর্যন্ত ৯টি শ্রমবাজার বন্ধ। চলতি বছর বাদে গত ১২ বছরে বন্ধ হয়েছে পাঁচটি শ্রমবাজার। এগুলো হলো ওমান, বাহরাইন, মিসর, লিবিয়া ও ইরাক। এদিকে ২০১৮ সালে ঢাকঢোল পিটিয়ে নতুন ৫৩টি দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ শ্রমবাজার গবেষণা সেল গঠন করা হয়। কিন্তু সাত বছর ধরে নিষ্ক্রিয় এই শ্রমবাজার গবেষণা সেল। অভিবাসনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বন্ধ ও স্থবির হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার নিয়ে বিদেশি মিশনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ আর সমন্বয়ের অভাবই এ জন্য দায়ী।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইতালির শ্রমবাজার : চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ইতালির শ্রমবাজার। গত ১৭ অক্টোবর ঢাকায় ইতালি দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বন্ধের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিপুলসংখ্যক জাল নথি বা ডকুমেন্টের কারণে ইতালি সরকার এই বছরের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত সব কর্ম অনুমোদনের (ওয়ার্ক পারমিট) বৈধতা স্থগিত করেছে, যা যথাযথ যাচাইকরণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইতালির ভিসাপ্রত্যাশী ইয়াছিন আরাফাত কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর তিন মাসের চেষ্টায় ফাইল জমা দিতে পেরেছি। এখন চার মাস হয়েছে। ভিসা হবে কি না, ফলাফল কবে পাব, জানি না। অথচ ইতালি সরকারের এসব ফাইল তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার কথা। ওয়ার্ক পারমিট আনাসহ এ পর্যন্ত সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভিসা না হলে সব মাটি হয়ে যাবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরব আমিরাতের শ্রমবাজার : আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে এই দেশটিতে মাত্র ৬৭৬ জন কর্মী গেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত জুলাই-আগস্ট মাসে যেসব কর্মী সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেতে পারেননি, তাঁরাই সেপ্টেম্বরে গেছেন। সেপ্টেম্বরে কোনো ভিসাই দেয়নি দেশটি। জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশটির শহর দুবাইয়ে কয়েক বছর ধরে কর্মী নেওয়া বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে প্রবাসীরা অংশ নেওয়ায় এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। তবে এই শ্রমবাজার অনানুষ্ঠানিকভাবেই ভিসা বন্ধ রেখেছে। আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার : বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সৌদি আরবের পর সবচেয়ে জনপ্রিয় শ্রমবাজার হিসেবে পরিচিত ছিল মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত চার লাখ ৯৪ হাজার ১৮০ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন। কিন্তু সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে চলতি বছরের ৩১ মে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এতে বিএমইটির ছাড়পত্র হওয়ার পরও ১৬ হাজার ৯৯০ জন কর্মী যেতে পারেননি। তবে সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসে এই কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমস্ত অভিবাসন ডিপো থেকে বাংলাদেশিসহ ৩৩ হাজার ৮০৭ জন প্রবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। তবে এর মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন, তা জানা যায়নি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মালদ্বীপের শ্রমবাজার : দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হয় মালদ্বীপের শ্রমবাজার। কিন্তু চালু হওয়ার তিন মাস পরই বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের শ্রমবাজার। এতে ভোগান্তিতে পড়েন দালালের হাতে টাকা দেওয়া কর্মীরা। গত ২২ মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এতে বলা হয়, মালদ্বীপ সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। তবে কোটা বাড়ানো ও ভিসা চালু করতে হাইকমিশন চেষ্টা করছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১২ বছরে পাঁচ শ্রমবাজার বন্ধ : ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১২ বছরে পাঁচটি শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। এগুলো হলো ওমান, বাহরাইন, মিসর, লিবিয়া ও ইরাক। এর মধ্যে গত বছরের অক্টোবরে ওমান, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে বাহরাইন, ২০১৭ সালে একই মাসে মিসর, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে লিবিয়া এবং ২০১১ সালের জুলাই মাসে বন্ধ হয়ে যায় ইরাক। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৮ সাল থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় গবেষণা সেল গঠন করলেও এই শ্রমবাজারগুলো চালু করতে পারেনি গবেষণা সেল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের যগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথমত গবেষণা সেল ইন-অ্যাক্টিভ। তারা কোনো কাজ করছে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের শ্রমবাজারের বিষয়টি কখনো নিয়মতান্ত্রিকভাবে করা হয়নি। বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আমাদের পরামর্শ ছিল, শ্রমবাজারের জন্য একটি গবেষণা উইং তৈরি করা হোক। এই উইং নিয়মিত গবেষণা করবে। কিন্তু সেটি কখনোই তৈরি হয়নি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>