<p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা সঞ্চিতির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। জরুরি আমদানি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াই কঠিন হয়ে উঠছে। এর ওপর বাড়ছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ৩৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের বেশি, যার মধ্যে শুধু আসল পরিশোধই বেড়েছে ২৬ কোটি ডলার। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতিও অনেক কমেছে।</span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত দেড় দশকে এমন অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যেগুলোর উপযোগিতা ছিল অনেক কম। এসব প্রকল্প চালু হলেও সেগুলো থেকে সরকারের আশানুরূপ আয় হচ্ছে না। এগুলো থেকে যে আয় হচ্ছে, ঋণ পরিশোধের পরিমাণ তার চেয়ে অনেক বেশি। তদুপরি, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হয় বৈদেশিক মুদ্রায়। তাই ঋণ পরিশোধের জন্য আরো বেশি বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে। এতে ঋণের পরিমাণ কেবল বাড়তে থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতিও কমছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বৈদেশিক ঋণ ছাড় হয়েছে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। অথচ এই সময়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে পরিশোধ করতে হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার।</span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের যে আমদানি ব্যয় আছে, তা কমানোর খুব বেশি সুযোগ নেই। জ্বালানি তেল, কিছু জরুরি খাদ্যপণ্য, সার, কীটনাশকসহ জরুরি কৃষিসামগ্রী, শিল্পের কাঁচামাল এবং এমনই আরো কিছু জরুরি পণ্য। এই আমদানি অব্যাহত না থাকলে বাজারে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। রপ্তানিও ব্যাহত হবে। অন্যদিকে চাইলেই আমরা আমাদের রপ্তানি বাড়াতে পারছি না। রপ্তানিতে আমাদের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। বরং আমাদের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে নানা ধরনের সংকট দেখা যাচ্ছে। রপ্তানির পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এখন একটিই ক্ষেত্র কিছুটা আশা জাগাচ্ছে, তা হলো প্রবাস আয়। সামান্য পরিমাণে হলেও প্রবাস আয় বাড়ছে। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈদেশিক ঋণ যেহেতু বৈদেশিক মুদ্রা দিয়েই পরিশোধ করতে হবে, তাই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি বাড়াতে হবে। কারণ সুদে-আসলে ক্রমান্বয়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। পণ্য ও সেবা রপ্তানি বাড়াতে হবে। প্রবাস আয় বাড়াতে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর ওপর জোর দিতে হবে। প্রবাসীরা যাতে বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ করেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্যের আমদানি কমাতে হবে। পাশাপাশি যেসব ঋণ নেওয়া হবে, তার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।</span></span></span></p>