<p>চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাস শ্রমিক নিয়ে গঠিত জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকদের সঙ্গে জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের জেরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মালিকদের বাস চলাচল তিন দিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। তবে বাস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে রয়েছেন যাত্রীরা।</p> <p>শ্রমিক সূত্র জানায়, সব ধরনের মোটর শ্রমিকদের নিয়ে জেলা ট্রাক ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নামে একটি সংগঠন ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৮ সালে পণ্য পরিবহন (ট্রাক) ও যাত্রী পরিবহন (বাস) শ্রমিকদের পৃথক করে সরকার। প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রমিকদের দুটি সংগঠন। জেলা ট্রাক, ট্যাংক লরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। বিষয়টি ২০১৬ সালে কার্যকর হয়। কিন্তু জেলার প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের অধিকাংশ নিজ নিজ সংগঠনে না গিয়ে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের উত্তরাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া ট্রাক সমিতিতেই থেকে যান। অল্প কিছু সদস্য চলে যান বাস সংগঠনে। বাস সংগঠনটি তেমন অগ্রগতি লাভ করতে পারেনি। তবে এ নিয়ে শ্রমিকরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন ও প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়।</p> <p>এই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে সাধারণ সভা ডাকে বাস শ্রমিক সংগঠন। সেখানে ডাক না পেলেও সভা শুনতে যান ট্রাক সংগঠনে যুক্ত বাসের কিছু শ্রমিক। সৃষ্টি হয় কোন্দল। মারামারিতে আহত হন সভা শুনতে যাওয়া পাঁচ-ছয়জন শ্রমিক। সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। আহতদের সহকর্মী শ্রমিকরা ব্যারিকেড দেন রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে যান চলাচল শুরু হয়। কিন্তু বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল।</p> <p>এ নিয়ে গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেন মারধরের শিকার হয়েছেন দাবিকারী শ্রমিকরা। তারা বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া ট্রাক শ্রমিক সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তারা বাস শ্রমিকদের ট্রাক সংগঠনে রাখতে চান না। কিন্তু এত বছর যাবৎ ট্রাক সংগঠনে থাকা বাস শ্রমিকদের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ওই সংগঠনে যেতে হবে। এ জন্য সমঝোতা করতে হবে। জোর-জুলুম করলে হবে না। বাস সংগঠনের কার্যক্রম হতে হবে পরিষ্কার ও প্রকাশ্য। কিন্তু তারা বেআইনি অনেক কিছু করছে।</p> <p>বাস শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ জুলমত বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা মারধরের অভিযোগ সত্য নয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সাধারণ সভা ভণ্ডুল করতে বাসযোগে যাওয়া কিছু শ্রমিককে প্রতিরোধ করলে কেউ আহত হতে পারেন। বাসের ওই শ্রমিকরা ও তাদের পক্ষের ট্রাক শ্রমিকরা যা করছেন বা বলছেন তা আইনসম্মত নয়। এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। চলমান বাস বন্ধের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।</p> <p>জেলা বাস মালিক গ্রুপ সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু ও সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান শামিম বলেন, তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানে শ্রমিক ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছেন।</p> <p>সদর থানার ওসি রইস উদ্দিন বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>