<p>ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহের গ্রামগুলোতে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ-নগদে টাকা পরিশোধের পর মাদক বাসায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মাদকের বড় চালানের দিকে নজর দিলেও এসব খুচরা বিষয়ে নজর দিচ্ছে না। ফলে ঘরে বসে নিশ্চিন্তে মাদক পাচ্ছে আসক্তরা।</p> <p>অভিযোগ রয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় এ মাদক ব্যবসা চলে আসছে। তারা নিয়মিত মাসোয়ারা পাচ্ছেন। নতুন এই কৌশলে মাদক কারবারিরা আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপার শেখপাড়া বাজার এলাকার প্রভাবশালী মাদক কারবারি বকুল জোয়ার্দার খুচরা বিক্রেতাদের মাধ্যমে উপজেলার ফুলহরি, মির্জাপুর,কাঁচেরকোল, দিগনগর, ত্রিবেণী ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নতুন কৌশলে এ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সদরের মধুপুর এলাকার মাদক কারবারি দীপ্ত মণ্ডল খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে শহরের আদর্শপাড়া, পাগলাকানাই, কাঞ্চননগর, গোয়ালপাড়া ও হাটগোপালপুর এলাকায় মাদক বিক্রি করছে। এ ছাড়া শহরের আরাপপুর এলাকার কারবারি জাহিদুল ইসলাম ও মিলন হোসেন জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে এ মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। কালীগঞ্জের আলোচিত নারী মাদক কারবারি তানিয়া খাতুন খুচরা বিক্রেতাদের মাধমে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও উপজেলার সুন্দরপুর-দূর্গাপুর, আড়পাড়া, মল্লিকপুর ও কোলা এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করছে। এরা একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক কারবার।</p> <p>সূত্র বলছে, ঝিনাইদহ শহরে ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রি করছে কিছু ভাসমান কারবারি। বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের পর ইয়াবা ও গাঁজা বাসায় পৌঁছে দেয় তারা। এ ছাড়া জেলার ছয় উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে সহজে ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক মিলছে।</p> <p>কাঞ্চননগর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বলেন, ‘জেলাজুড়ে হঠাৎ করেই মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফলে প্রকাশ্যে নানা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে তাঁরা। প্রকাশ্যে চুরি-ছিনতাইয়ের মত ঘটনাও ঘটছে। প্রশাসনের এদিকে নজর দেওয়া জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’</p> <p>সচেতন নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত হোসেন জানান, যতদিন যাচ্ছে মাদক কারবারিরা ততই নতুন নতুন কৌশলে বেছে নিচ্ছে। সম্প্রতি মাদকের এই সহজলভ্যতার কারণে নতুন করে মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য সুখকর হবে না।</p> <p>এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, মাদকের হোম ডেলিভারির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মাদকের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।</p>