<p>দুই বছর আগেও গ্রামের বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ভাড়ায় ফুটবল খেলতেন। সে আয় দিয়ে কোনো রকম খেয়ে বেঁচে থাকতেন। ধীরে ধীরে সেই ফুটবলার থেকে এলাকায় পরিচিতি পান অনলাইন জুয়াড়ি হিসেবে। সবাইকে জানান ভালো আয়ের কথাও। বলছি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা ইউনিয়নের কুতুরা গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের পুত্র রনির (৩৫) কথা।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত আফাজ উদ্দিন তিন সন্তানের জন্য রেখে যান মাত্র ২ একর ফসলি জমি। সেই জমিতে আবাদ করেই চলতো সংসার। কিন্তু দুই বছর আগে হঠাৎ করেই যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান রনি। পার্শ্ববর্তী দূর্গাপুর উপজেলা থেকে বালু কিনে, সেই বালু বিক্রি শুরু করা শুরু করেন তিনি। কিছুদিন পর সেই ব্যবসা ছেড়ে বাড়ির পাশে স্থানীয় চৌরাস্তা মোড় বাজারে একটি মোবাইল ফোন বিক্রয়ের শো-রুম খুলে বসেন। বেশ জমকালো আয়োজনে করেন শো-রুমের উদ্বোধন। যেখানে হালুয়াঘাট পৌরশহরেই মোবাইলের ভালো শো-রুম নেই, সেখানে কিভাবে গ্রামের বাজারে এতো বড় শো-রুম দেওয়া যায়। তা নিয়ে তখন জনমনে ছিল প্রশ্নের উদ্রেক।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বসুন্ধরা কিংস সভাপতির নামে ফেসবুকে প্রতারণা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/23/1729687816-1dcef8dc39e39b208b42471a92e25bf4.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বসুন্ধরা কিংস সভাপতির নামে ফেসবুকে প্রতারণা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/23/1438340" target="_blank"> </a></div> </div> <p>কিছুদিন পর সেই শো-রুমটি বন্ধ করে শুরু করেন গরুর খামার ও মাছের ব্যবসা। খামারের জন্য বাড়িতে নির্মাণ করেন নতুন ঘর। সেই খামারে রাখেন বিদেশি জাতের অন্তত ২০ টি গরু। যেগুলোর বাজার মূল্য অন্তত ৪০ লাখ টাকা। পাশাপাশি বিভিন্ন পুকুর ও মাছের ঘের লিজ নিয়ে সেখানে শুরু করেন মৎস্য চাষ। পাশাপাশি সুদে বিভিন্নজনের কাছে লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট করেন। চলাফেরার জন্য কিছুদিন পরপর ক্রয় করেন দামি মোটরবাইক, ব্যবহার করেন দামি মোবাইল ফোনও। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এ যেন এক আয়েশি জীবন।</p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিজ এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর অনেকটাই অর্থহীন ছিল রনিসহ তার পরিবার। বিগত কয়েক মাসের মধ্যে গড়ে তোলেন ডেইরি খামারসহ মাছের ঘের। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতেন, অনলাইনে জুয়া খেলে প্রচুর আয় হচ্ছে তার। সে টাকা দিয়েই নাকি করছেন আয়েশি জীবন। এলাকায় সে অনলাইন জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিতিও পান। কিন্তু কে জানতো এই রনিই প্রতারণার মাধ্যমে নিরীহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বসুন্ধরা কিংসের আরেকটি স্বপ্নপূরণ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/06/1728157756-c5cc461ddf10dc8d28615c14cc6ba647.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বসুন্ধরা কিংসের আরেকটি স্বপ্নপূরণ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2024/10/06/1432263" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জানা যায়, বসুন্ধরা কিংসের সভাপতির নাম ও ছবি ব্যবহার করে প্রতারক রনি তৈরি করেন ভুয়া ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে সভাপতি সেজে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ফুটবলে আগ্রহী সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ করতেন তিনি। বসুন্ধরা কিংসের ফুটবল টিমে জায়গা করে দেওয়া ও জাতীয় দলে সহজেই খেলার সুযোগ সহ নানা লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হতো আগ্রহীদের। সেই ফাঁদে ফেলেই বিকাশ কিংবা রনির লোক এসে বসুন্ধরা কিংসের পরিচয় দিয়ে নিয়ে যেত টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই চলছিলো রনির এই প্রতারণা। </p> <p>তার এমন প্রতারণার শিকার হন যাত্রাবাড়ি এলাকার কবির গাজী। তার ছেলের ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ পাঠান এই প্রতারক। জানান তার ছেলেকে বসুন্ধরা কিংসে সুযোগ দিবেন। তার জন্য দিতে হবে টাকা। পরে জসিম নামের একজন সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিদেশ পাঠাতে পাসপোর্ট করাসহ বিভিন্ন অযুহাতে হাতিয়ে নেন কয়েক হাজার টাকা। এরপর কবির গাজী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অভিযোগ দিতে আসেন বসুন্ধরা কিংসে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বসুন্ধরা কিংসের ফুটবল একাডেমির যাত্রা শুরু" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/05/1728134914-bb4e8d232664ecec79ecb111b50e4d61.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বসুন্ধরা কিংসের ফুটবল একাডেমির যাত্রা শুরু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2024/10/05/1432100" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এমন অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে বসুন্ধরা কিংস। দীর্ঘদিনের চেষ্টায় বেরিয়ে আসে প্রতারক রনির নাম। গত ২২ অক্টোবর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি টিম রনির বাড়িতে যান। খবর পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান রনি ও তার ভাই জনি। পরে হালুয়াঘাট থানায় বিষয়টি অবগত করা হয়। </p> <p>জানা যায়, রনির পরিবার ইতোমধ্যেই বাড়িতে থাকা খামারের গরুগুলো সরিয়ে ফেলেছে। তার ঘনিষ্টজনেরা জানান, বসুন্ধরা থেকে কর্মকর্তারা আসার পর থেকেই রনি পলাতক। কেউ কেউ বলছেন গোপনে সে দেশ ত্যাগের চেষ্টা করছে। রনির এমন প্রতারণায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।</p> <p>এ বিষয়ে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইয়াসিন হোসেন পাভেল বলেন, ‘দীর্ঘ ৬ মাস নজরধারীর পর আমরা প্রতারক রনির বাড়ি ও গ্রামের সন্ধান পাই। আমরা এর আগেও বিভিন্ন থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছি। যারা দেশের স্বনামধন্য ফুটবল ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের নামে প্রতারণা করেছে তাদের যেন আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হয়।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বসুন্ধরা কিংসের নতুন ইতিহাস গড়ার অপেক্ষা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/02/07/1707275565-8973d3f939fb892c31e71af3a5cf00a9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বসুন্ধরা কিংসের নতুন ইতিহাস গড়ার অপেক্ষা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous/2024/02/07/1361490" target="_blank"> </a></div> </div> <p>হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের জানান, ‘এই প্রতারকের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তদন্ত করে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>