<p>অবশেষে কক্সবাজারের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী উজ্জ্বল দাশ ও উৎপল দে বাহিনীর 'টর্চার সেলের' সন্ধান পেয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৫)। শহরের ভেতরেই বৌদ্ধ মন্দিরের পরিত্যক্ত ঘরে গড়ে তোলা ওই টর্চার সেলে পর্যটক ও সাধারণ মানুষদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো, আদায় করা হতো মুক্তিপণ। এই বাহিনীর চার সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। </p> <p>গ্রেপ্তারকৃত চারজন হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোনার পাড়ার এস এ ক্যাং এলাকার বান্টু দাশের ছেলে উজ্জ্বল দাশ (২৮), একই এলাকার তপোবন সড়কের উৎপল দে (২৯), একই এলাকার মৃত দুলাল ধরের ছেলে বিধান ধর (৩০) ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোনার পাড়ার মহেশখাইল্লা পাড়ার কাজল রুদ্রের ছেলে অন্তর রুদ্র (২২)। এদের মধ্যে উজ্জ্বল দাশ ও উৎপল দে এই বাহিনীর নেতৃত্ব দেন।  </p> <p>অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারে দায়িত্বরত র‍্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান। তবে তাদের নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।   </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="খাদ্য অধিদপ্তর : সিনিয়রের ওপরে বসানো হলো ৬৯ জুনিয়রকে" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/23/1729659539-7cfd585f2e482411a25da7b0bcb8f45a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>খাদ্য অধিদপ্তর : সিনিয়রের ওপরে বসানো হলো ৬৯ জুনিয়রকে</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/23/1438220" target="_blank"> </a></div> </div> <p>র‍্যাব কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, র‍্যাবের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্যঘোনা এসএ ক্যাং জাদিরাম পাহাড়ের ওপর ডাকাতদের একটি দল ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দেশীয় অস্ত্রসহ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। ওই সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব। </p> <p>তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাতদলের কাছ থেকে একটি কিরিচ, তিনটি ছুরি, দুটি প্লাস্টিকের পাইপের লাঠি, একটি কালো রশি ও তিনটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়।</p> <p>র‍্যাব কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্যঘোনা জাদিরাম পাহাড়ে ওই পরিত্যক্ত ঘরকে 'টর্চার সেল' বানানো হয়েছিল। সেখানে পর্যটক ও নিরীহ মানুষদের ধরে এনে বেধড়ক মারধরের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করতো সন্ত্রাসীরা। সেখানে মাদক সেবনের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে।   </p> <p>র‍্যাব জানিয়েছে, চারজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, কক্সবাজার শহরের নিরীহ  মানুষকে টার্গেট করে সুযোগ বুঝে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো। এ ছাড়াও ভিকটিমদের বিভিন্ন সময় টর্চার সেলে আটকে নির্যাতনের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে বিশাল অংকের মুক্তিপণ আদায় করতো। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হাসিনা-কাদেরের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আইজিপির কাছে: চিফ প্রসিকিউটর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/23/1729659625-68ea09bccee913009e8fc12261ff3578.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হাসিনা-কাদেরের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আইজিপির কাছে: চিফ প্রসিকিউটর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/10/23/1438219" target="_blank"> </a></div> </div> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, উজ্জ্বল ও উৎপল এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে শুরুর দিকে সাধারণ হিন্দুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালাতো। পরে তা একটি সন্ত্রাসী বাহিনীতে রূপ নেয়। উজ্জ্বল ও উৎপলের নেতৃত্বাধীন বাহিনী বৌদ্ধ মন্দিরের পরিত্যক্ত একটি ঘরকে টর্চার সেল বানিয়ে সাধারণ হিন্দুদের পাশাপাশি সাধারণ পথচারী এবং পর্যটকদের ধরে এনে নির্যাতন করতো। অবস্থা বুঝে মোটা অংকের টাকাও দাবি করতো। </p> <p>অনুসন্ধানে জানা যায়, উজ্জ্বল ও উৎপল ঘোনার পাড়া এলাকায় নিজেদের অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। তাদের নামে রয়েছে একাধিক মামলা। সাম্প্রতিক সময়ে উজ্জ্বল নিজের বাড়িতে গাঁজার চাষ ও মাদক বিক্রির অপরাধে বেশ কয়েকবার জেলও খাটে। কিন্তু জেল থেকে বের হয়ে কিছুদিন পর আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। </p> <p>সংশ্লিষ্টরা জানান, শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের বিপক্ষে সরাসরি অস্ত্র হাতে সক্রিয় ছিল এই সন্ত্রাসী বাহিনী।   </p> <p>কক্সবাজার শহরের হাসপাতাল সড়ক, বার্মিজ মার্কেট, গোলদীঘির পাড়, ঘোনার পাড়া ও বৈদ্যঘোনা এলাকায় যেসব ছিনতাই ও চাঁদাবাজি হয়ে থাকে, তা এই গ্রুপের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। </p> <p>সূত্রমতে, তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা মহেশখাইল্লা পাড়া, মোহাজের পাড়া, বৈদ্যঘোনাসহ অন্য বেশ কয়েকটি এলাকার সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অত্যাচার চালিয়ে যায়। ঘোনারপাড়ায় অধিকাংশ পরিবার হিন্দু হওয়ায় সাহস করে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না। </p> <p>র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল' অ্যান্ড মিডিয়া) মো. কামরুজ্জামান জানান, উদ্ধার করা আলামতসহ গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দেওয়া হয়েছে।</p>