<p style="text-align:justify">টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সব ধরনের সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এতে হতদরিদ্র মানুষসহ মধ্যবিত্তরাও পড়েছে মহাবিপদে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যসহ সবজির চড়া দামে নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে দেখা গেছে চরম অস্থিরতা।</p> <p style="text-align:justify">বিক্রেতা ও পাইকাররা বলছেন, বর্ষার কারণে কৃষকের খেতে সবজি নষ্ট হয়েছে। এতে সবজির উৎপাদন বিপর্যয় ঘটেছে। হাটে সবজির সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। তবে ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা, সরকারের বাজার তদারকি না থাকায় অতিরিক্ত মুনাফার সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। পাইকারি পর্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে খুচরা ক্রেতাদের।</p> <p style="text-align:justify">ক্রেতাদের দাবি, চলমান বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। ফলে খুচরা বাজারে সব ধরনের সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। সবজির এই বাড়তি দামের কারণে সাধারণ মানুষ আমিষের দিকে ঝুঁকছে। এতে ডিম ও মুরগির ওপর বাড়তি চাপ পড়ায় এই পণ্য দুটির দামও বেড়ে গেছে।</p> <p style="text-align:justify">তবে নিত্যপণ্য, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংস এমনকি মসলাজাত পণ্যের দাম দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। বিশেষ করে ডিম, ব্রয়লার মুরগী, কাঁচামরিচ, লাউ, কচু, গাজর, পটল, টমেটো, পেঁয়াজসহ কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। গরিবের প্রোটিন হিসেবে পরিচিত ডিম সরকারের বেঁধে দেওয়া প্রতিপিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সার স্থলে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলার ধলাপাড়া, গারোবাজার এবং সাগরদিঘী বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি করলা ১২৫-১৩০, ধুন্দল ১০০-১১০, ঢেড়স ১২০-১৩০, ঝিঙা ৮০-৯০, টাকা, পেঁপে ৩০-৩৫, পটল ৯৫-১০০, বরবটি ৭৫-৮০, কচুর লতি ৮০-৯০, কাঁচকলা হালি (৪টি) ৩০-৪০, কাঁকরোল ৭০-৮০, মিষ্টি কুমড়া ফালি (আধাকেজি) ৬০-৭০, শাকের আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">এছাড়া মাঝারি সাইজের একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। শীতের সবজি টমেটো প্রতিকেজি ২৫০-৩০০ টাকা, গাজর ২০০-২৫০, ধনেপাতা ৪০০-৪৫০, শিম ২৮০-৩২০, ফুলকপি ১২০-১৩০, বাঁধাকপি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ৩৮০-৪০০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০-১৩০, মাঝারি সাইজের গোলআলু ৬০-৭০ টাকা, আদা ২০০-২২০, রসুন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">সাগরদিঘী কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ভ্যানচালক মতি মিয়া বলেন, ‘৫শ টাকা নিয়া বাজার করতে আইছি। ৩শ টাকার মাছ আর ৯০ টাকার ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ কিনছি। এহন সবজি আর পিয়াজ রসুন কিনমু কি দিয়া।’</p> <p style="text-align:justify">ধলাপাড়া বাজারের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী আক্কাছ আলী জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক বন্যায় শাক-সবজির আবাদ নষ্ট হওয়ায় কৃষক ঠিকমতো জোগান দিতে পারছে না। ফলে শাক-সবজি অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">বাজারের এমন পরিস্থিতিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম-আয়ের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। সাধারণ মানুষ ও ভোক্তাদের দাবি, দ্রুত বাজার মনিটরিং করে অসৎ ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে হবে।</p>