<p>এ কাজটা নিশ্চিত মানুষরূপী কোনো জানোয়ার করেছে। এমন কাজ কোনো মানুষে করতে পারে! এমনটাই বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। গত জ্যৈষ্ঠ মাসে লেংড়া জাতের গাছটিতে কমপক্ষ পাঁচ মণ আম ধরেছিল। যার ভাগ আশে-পাশের শতাধিক ব্যবসায়ী পেয়েছেন। গাছটির বয়স প্রায় ১০ বছর হলেও যত্নের কারণে প্রচুর আমের ফলন আসে। বুধবার (২ আগস্ট) দিনগত রাতের কোনো এক সময় কে বা কারা গাছটির নিচে অর্ধেকটা অংশ কেটে রেখে যায়। রাত শেষে সকালে বাতাসের সাথে গাছটি হঠাৎ করে মাটিতে পড়ে যায়। এমন গাছটি কে কাটতে পারে, কারা কাটতে পারে, কোন উদ্দেশ্য কাটতে পারে- এমন নানা প্রশ্ন করছেন সবাই। ঘটনাটি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারের মাদ্দাহ্ খাঁ স্যানেটারি দোকানের সামনে। </p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৮-১০ বছর পূর্বে শেখ মার্কেটের পূর্ব পাশে মাদ্দাহ্ খাঁ স্যানেটারির মালিক রুহুল আমিন লেংড়া জাতের আমের চারাটি রোপণ করে চারপাশে বেড়া দিয়ে যত্ন শুরু করেন। রোপণের মাত্র এক দশক পার না হতেই গত বছর গাছটিতে বেশ কিছু আম ধরে। সর্বশেষ গেলো মৌসুমে প্রায় পাঁচ মণ আম আসে গাছটিতে। গাছের সব আম একত্রে পেড়ে পাশের সকল ব্যবসায়ীদের মাঝে ভাগ করে দেন রুহুল আমিন। স্যানেটারি ব্যবসায়ী হিসেবে খালি পানির ট্যাংকি এই গাছের সাথে শিকলে বেঁধে রাখতেন রুহুল আমিন। হঠাৎ করে গত রাতে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) দিনগত রাতের কোনো এক সময় কে বা কারা গাছের গোড়ায় অর্ধেকের বেশিরভাগ অংশ চিকন করাত দিয়ে কেটে রাখে। </p> <p>কাটা গাছের প্রত্যক্ষদর্শী ও পাশের ব্যবসায়ী পলাশ, রিয়াদ, আলমগীর, শরীফ, ছায়েদ, মাহবুব, ইউসুফসহ অনেকে জানান, গাছের পাশের কোনো দোকানি গাছটি কাটতে পারেন এ জন্য যে, তার দোকানের সাজানো মাল বাইরে থেকে দেখা যায় না। এছাড়া মাদ্দাহ্ স্যানেটারির যে জমিতে অবস্থিত, সেই মার্কেটের মালিকপক্ষের ভাইয়ে-ভাইয়ে মামলা চলমান। তাদের মধ্যেও কেউ এমন কাজ করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  </p> <p>প্রত্যক্ষদর্শী পত্রিকার হকার সুলতান পাটোয়ারী জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রাইভেট পড়তে আসা এক মেয়ের ওপর গাছটি পড়ার উপক্রম হয়। গোড়াটি ওপরে উঠে যায়। মেয়েটি দৌড়ে রক্ষা পায়। </p> <p>গাছ লাগানো রুহুল আমিন কান্নাজড়িত কণ্ঠ জানান, গাছটি আমি সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। আর আশোপাশের কাউকে বাদ দিয়ে আমি একটি আমও খাইনি। </p> <p>এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, গাছের প্রাণ আছে। যারা এমন জঘন্য কাজ করেছে তারা একদিন এর প্রতিফল পাবেই। এই গাছ কাটা নিয়ে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। </p>