<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভ্যাট ফাঁকি রোধ এবং ভ্যাট আদায়ে গতিশীলতা আনতে চট্টগ্রামের আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফাস্ট ফুড, মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, বিউটি পার্লার, তৈরি পোশাকের দোকান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জুয়েলার্স, জিমসহ বিভিন্ন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চার হাজার ৮৬৭টি ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন বসিয়ে ছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার বেশি সেসব প্রতিষ্ঠানে মেশিনগুলো বসানো হয়। কিন্তু বসানোর পর থেকে এসব মেশিন নষ্ট হতে শুরু করে। এখন চট্টগ্রামে ২৪ শতাংশ ইএফডি মেশিন নষ্ট। আর যেসব মেশিন সচল রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে চট্টগ্রামে ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায় দিন দিন কমছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভ্যাট বিভাগ ব্যবসায়ীদের কাছে ইএফডি মেশিন ধরিয়ে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। কোন সমস্যা হলেই ভ্যাট কর্মকর্তাদের খোঁজে পাওয়া যায় না। যার কারণে এ মেশিন ব্যবহার করতে অনীহা তৈরি হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইএফডি হলো এক ধরনের ইলেকট্রনিক সিস্টেম, যা প্রাথমিকভাবে ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিক্রির রিয়েল-টাইম লেনদেন লিপিবদ্ধ, নিরীক্ষণ এবং সংরক্ষণ করতে ব্যবহৃত হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রামে ভ্যাট আদায় বাড়াতে ২০২০ সাল থেকে ইএফডি মেশিন বসায় চট্টগ্রাম কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়। চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বসানোর পর দুই বছর বেশ ভালোই চলছিল ভ্যাট আদায় কার্যক্রম। বিশেষ করে ২০২৩ সালে এ মেশিন নষ্ট হতে শুরু করেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নষ্ট হয়ে মেশিনের সংখ্যা কমে এক হাজার ১৭৭টি। শতকরা হিসাবে নষ্ট হয়েছে ২৪ শতাংশ। আর সচল থাকা তিন হাজার ৬৯০টি মেশিনে চার্জার ও নেটওয়ার্ক-সংক্রান্ত জটিলতা, ব্যাটারি চার্জ না হওয়া, রেস্ট্রিকটেড টিকিট সাবমিশন, চালান কাটা যায় না, ব্যাটারির চার্জ বেশি সময় থাকে না, মেশিনের চার্জার পাওয়া যায় না, চালান কাটার সময় মেশিন বন্ধ হয়ে যায়, মেশিনের বাটন ঠিকমতো কাজ করে না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে ইএফডি থেকে ভ্যাট আদায় কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের আগস্ট থেকে। ওই বছরের পাঁচ মাসে ইএফডি থেকে ভ্যাট আদায় হয়েছিল ১৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ১২ মাসে ইএফডি থেকে ভ্যাট আদায় হয়েছিল ৩৩ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের জানুয়ারি এক মাসে ইএফডি থেকে রাজস্ব আয় হয় পাঁচ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এরপর প্রতি মাসে রাজস্ব আয় কমতেই থাকে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ইএফডি থেকে ভ্যাট রাজস্ব আদায় হয় এক কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সর্বশেষ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইএফডি থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে মাত্র এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখানকার অধিকাংশ দোকানি ইএফডি মেশিন চালাতে পারেন না। এ ছাড়া এ মেশিন বসাতেও অনেক সমস্যা। আর যাঁরা ইএফডি মেশিন ব্যবহার করেন তাঁরা অনেক ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন। তাই ব্যবসায়ীদের মাঝে আস্থা তৈরি হচ্ছে না। এর ব্যবহার ও বসানোটা সহজ করতে হবে। তাহলে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায় বাড়বে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রামের টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের মার্কেটের কয়েকটি দোকানে ইএফডি মেশিন আছে। সবগুলোতে নেই। আমরা কয়েক মাস পর এ মেশিন বসানোর জন্য সবাইকে জানাব। এ বিষয়ে ভ্যাট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খুরশীদ আলম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারিগরি ত্রুটির কারণে ইএফডি মেশিন নষ্ট হয়ে গেলেও তা ঠিক করতে ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তাদের পাওয়া যায় না। মেশিনে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে সময়ক্ষেপণ হয়। ইএফডিতে একটি ইনভয়েস দিতে গেলে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট সময় লাগে। গ্রাহকরা এই সময় দিতে চান না। অনেকে ভ্যাট পরিশোধ করেও ইনভয়েস নেন না। ভ্যাট আদায়যোগ্য সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসানো না হলে এর সুফল আসবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁঞা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক ইএফডি মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট ইএফডি মেশিন ঠিক করার জন্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠাকে চারবার চিঠি দেওয়া হলেও তারা সাড়া দেয়নি। খুব শিগগির এ ব্যাপারে এনবিআর উদ্যোগ নেবে। এ ছাড়া ইএফডির মাধ্যমে ভ্যাট আদায় বাড়াতে আমরা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি। তাদের পক্ষ থেকে উদ্যোগের আশ্বাস দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। অধিকাংশ ব্যবসায়ী এ মেশিন ব্যবহার করতে চান না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>