<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাই, তুমি তো বেঁচে থেকে গাজি হয়েছ। দেখবা আমি শহীদ হব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গুলিবিদ্ধ বড় ভাই তোফায়েলকে এভাবেই বলেছিল মোনায়েল আহমেদ ইমরান। পরিবার তাকে তিন দিন ঘরে আটকে রাখে। তবে কোমল পানীয় আনার কথা বলে মাকে ফাঁকি দিয়ে ঠিকই বের হয়ে যায় সে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হয় হাফেজ মোনায়েল আহমেদ ইমরান। গুলিবিদ্ধ হন তার আপন বড় ভাই তোফায়েল আহমেদ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার রামপুরা গ্রামের বাসিন্দা তোফায়েল ও ইমরান। তোফায়েল ঢাকায় ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করতেন। ইমরান হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় নানার বাড়িতে থেকে একটি মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। এক স্বজনের বিয়ের দাওয়াত খেতে ইমরান মা-বাবার কাছে নারায়ণগঞ্জে আসে। এখানে থাকা অবস্থায়ই সে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তোফায়েল ১৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ২১ জুলাই একই এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় তাঁর ভাই ইমরান। নাসিরনগরের গ্রামের বাড়িতেই ইমরানের দাফন সম্পন্ন হয়। তোফায়েল তাঁর মা-বাবার সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জের সানাইপাড় এলাকায় থাকেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তোফায়েল ও ইমরানের বাবা সোয়াব মিয়া ঢাকায় পুরনো কাপড়ের ব্যবসা করেন। মা ইয়াসমিন আক্তার গৃহিণী। ওই দম্পতির দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। এক ছেলে এক মেয়ে নারায়ণগঞ্জে মায়ের সঙ্গে এবং বাকি দুজন নানার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সোয়াব মিয়া জানান, বেসরকারিভাবে অনেক সহায়তা তাঁরা পেয়েছেন। তবে সরকারি সহযোগিতা পাননি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তোফায়েলের গায়ে যে ১৮টি গুলি আছে এর দুটি খুলতে গেলে সমস্যা হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইয়াসমিন আক্তার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">“</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বড় ছেলে গুলি খাওয়ার খবর পাই এক আত্মীয়ের মাধ্যমে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আমার ইমরানও ছিল। তখন ইমরান তার ভাইকে বলে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেঁচে তো সে গাজী হয়েছে। আর আমি শহীদ হব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এরপর সে আন্দোলনে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">”</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর মধ্যে সে আত্মীয়ের বিয়েতে নারায়ণগঞ্জ আসে। তাকে এক প্রকার ঘরে আটকে রাখি। একদিন সে কোমল পানীয় আনার কথা বলে বেরিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় না ফেরায় এক জায়গায় গিয়ে দেখি লোকজনের জটলা। কাছে গেলে অনেকে মোবাইল ফোনে দেখায় একটি ছেলে গুলি খেয়েছে। এটাই ছিল ইমরান। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাকে মৃত দেখতে পাই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p> </p>