<p>দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ‘হোঁচট’ খায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর চার লেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প। নির্মীয়মাণ ওই প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ৩৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরাপত্তার কথা বলে নিজ দেশে চলে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে ওই প্রকল্পের বিষয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ফিরছেন ভারতীয় ঠিকাদাররা। তবে কাজের ক্ষেত্রে চেয়েছেন নিরাপত্তা। চলতি মাসেই কাজ শুরুর আশা করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম এবং চার লেন সড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ।</p> <p>সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় নমনীয় ঋণচুক্তির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে করিডরের অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দরের সঙ্গে আখাউড়া স্থলবন্দরের সরাসরি যোগাযোগব্যবস্থার লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে একটি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৬ সালে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’ কাজটির বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়। ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্পের আওতায় ৫০.৫৮ কিলোমিটার চার লেন সড়ক, ১৬টি সেতু, দুটি রেলওয়ে ওভারপাস, তিনটি আন্ডারপাস, ১০টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করার কথা। ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২০ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে মহামারি করোনা, পণ্যের অপ্রতুলতাসহ নানা কারণে সেটি পিছিয়ে পড়ে। আট বছরে পাঁচ হাজার ৮৯১ কোটি টাকার এ প্রকল্পের গড়ে প্রায় ৫৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়। এরপর ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশের চলমান সার্বিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজ দেশে চলে যায় ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। পাশাপাশি সড়কের কয়েক কিলোমিটার অংশ বেহাল হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।</p> <p>এ অবস্থায় মহাসড়কের যেসব অংশে ভাঙা রয়েছে সেগুলো মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ শাখা থেকে এসংক্রান্ত একটি চিঠি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে দেওয়া হয়।</p> <p>জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম জানান, প্রকল্পের বিষয়ে ভারতীয় তিন ঠিকাদার ১৭ অক্টোবর ঢাকায় ও ২১ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসার কথা জানিয়েছেন। তাঁরা ফোনে যোগাযোগ করেছেন। ঢাকায় আসার বিষয়টি জানার পর তাঁদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।</p> <p>প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ জানান, চার লেন সড়ক নির্মাণের কাজ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ভারতীয় ঠিকাদারদের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল। তাঁরা কাজটি শেষ করতে আসবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করছি চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা আসবেন।</p> <p> </p> <p> </p>