<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা একত্র হয়ে যমুনা নদীর ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে নীতিমালা লঙ্ঘন করে বালু উত্তোলন করছেন। ফলে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, জনবসতি এলাকাসহ আবাদি জমি। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্তরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতারা গত ১৬ বছর যমুনা নদীর বালু বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন। বৈধ বালুমহাল থেকে বালু তোলার পাশাপাশি আইন লঙ্ঘন করে তাঁরা ইজারা এলাকার বাইরে থেকে বালু তোলেন। সরকারের পতনের পর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতারা বালু বাণিজ্যে ভাগ বসিয়েছেন। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে আদর্শিক বিভেদ থাকলেও বালু বাণিজ্যে তাঁরা এক হয়েছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন ২৫ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে যমুনা নদীর চৌবেড় মৌজার ৩৯ একর বালুমহালটি ৫৭ লাখ টাকায় আট মাসের জন্য ইজারা বন্দোবস্ত নেন। তাঁরা চৌবেড় মৌজা থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী শহড়াবাড়ী, শিমুলবাড়ী, বানিয়াজান, বৈশাখী ও কৈয়াগাড়ি মৌজা থেকেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে একইভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এসব এলাকা থেকে ২০ থেকে ২৫টি ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত বালু তোলা হচ্ছে। ফলে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে চরের আবাদি জমি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, স্পার ও বিভিন্ন অবকাঠামো। অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধসহ যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্য থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বালুমহালসহ অবৈধ বালু উত্তোলনের সাম্রাজ্য সমঝোতার ভিত্তিতে ভাগাভাগি করে নেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা। এর মধ্যে যুবলীগের নেতা বেলাল হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রাসেদুজ্জমান উজ্জ্বল, উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বাবু ও ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম ১৫ শতাংশ করে মোট ৬০ শতাংশ ভাগ করে নিয়েছেন। বাকি ৪০ শতাংশের ২০ শতাংশ ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান এবং বিএনপির সমর্থক কবির ও হালিম, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম, ইউনিয়ন যুবদলের নেতা বিপ্লব, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শহিদুল ইসলামের মধ্যে ২০ শতাংশ ভাগাভাগি হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যুবলীগের নেতা বেলাল হোসেন বলেন, সরকারের পতনের পর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বালু ব্যবসার ভাগাভাগি হয়েছে। লিখিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী এখন ব্যবসার ১৫ শতাংশ তাঁর নিয়ন্ত্রণে আছে। বাকিটুকু বিএনপি নেতাদের মাঝে ভাগাভাগি হয়েছে। তবে ইজারা এলাকার বাইরে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বাবু বলেন, সিরাজগঞ্জের আব্দুস সাত্তার নামের এক ব্যবসায়ীর ছেড়ে দেওয়া ৩০ শতাংশ অংশ দলীয় লোকজনের মধ্যে ভাগাভাগি করে দিয়েছি। বালু ব্যবসায় আমার নিজের কোনো অংশ নেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, চৌবেড় মৌজার যমুনার তলদেশের ৩৯ একর আয়তন থেকে ৫৫ লাখ ঘনফুট বালু তোলার ইজারা পেয়েছেন বেলাল হোসেন। ইজারাদারের ব্যবসায় কেউ অংশীদার আছেন কি না, তা জানা নেই। তবে অন্য কাউকে উপইজারা দেওয়ার বিধান নেই। এমন হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span></span></span></p>