<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাঙ্গায় জমে উঠেছে শতাধিক বছরের পুরনো নৌকার হাট। ভাঙ্গা দক্ষিণপার বাসস্ট্যান্ডের নিচে খাদ্যগুদামের সামনে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জমজমাট থাকে এই নৌকার হাট। সাপ্তাহিক হাটের দিন ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণে মুখরিত থাকে এ হাটটি। পাট কাটার সময়ে নৌকার চাহিদা থাকায় এবং মাছ ধরার জন্য নৌকা কিনতে আসা মানুষের এ হাটে ভিড় লক্ষ করা যায়। এ হাটে নৌকা কিনতে ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের লোক ছাড়াও পাশের নগরকান্দা, সদরপুর ও মুকসুদপুর থেকেও গ্রাহকরা আসেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় লোকজন জানায়, হাটটি শতাধিক বছরের পুরনো। বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে হাতে গোনা যে কয়টি নৌকার হাট আছে, তার মধ্যে এ হাটটি অন্যতম। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার ভাঙ্গায় হাট বসে। মে মাস থেকে এ হাটে নৌকা ওঠা শুরু হয়। আগস্ট মাস পর্যন্ত চার মাস এ নৌকার হাটে নৌকা বিক্রি হয়। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে বিভিন্ন ধরনের শতাধিক নৌকা উঠেছে। নৌকার দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম বেশি। বিক্রেতাদের অভিযোগ, দাম কম। হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের জগদীশ মণ্ডল বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই মাস ধরে আমি একজন মজুর নিয়ে ৩২টি কোষা (ছোট নৌকা) বানিয়েছি। চাম্বল কাঠ দিয়ে এ নৌকাগুলো বানিয়েছি। আজ হাটে পাঁচটি এনেছি। তিনটি বিক্রি করেছি। একটি তৈরি করতে চার হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়। পাঁচ হাজার টাকার ওপরে বিক্রি করতে পারি না। লাভ তেমন হয় না বললেই চলে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাটেই কথা হয় পরিমল বাছাড়ির সঙ্গে। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আজ হাটে পাঁচটি নাও আনছি। দুপুর ১টা পর্যন্ত দুটি নাও ৯ হাজার ৪০০ টাকায় বেচছি। দেশে পানি নাই। তাই দাম কম। লসের মুহে আছি। ৪৫ বছর ধরে ভাঙ্গার হাটে নৌকা বেচি। আগে আমার বাবা-দাদাও এই হাটে নৌকা বেচছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নৌকার ব্যবসায়ী আমির খান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি নিজে নৌকা বানাই না। বরিশালের স্বরূপকাঠি উপজেলার একতা বাজার থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩০টি নৌকা কিনে আনি। ভাঙ্গার এই হাটে এক সপ্তাহে ৩০টি করে নৌকা বিক্রি করি। আবার আনি। সবই কোষা নৌকা। রেইন ট্রি ও চাম্বল কাঠের তৈরি। স্থানীয় কারিগরদের বানানো নৌকার চেয়ে আমার নৌকার মান ভালো। আমি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিটি নৌকা বিক্রি করে থাকি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাটের ইজারাদার হাফিজুল মিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এবার এ এলাকায় পানি কম হওয়ায় ও মানুষের হাতে টাকা-পয়সা কম থাকায় নৌকা বেচাকেনা অন্যান্য বছরের চেয়ে কম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p> </p>