<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিয়ের ১৮ দিনের মাথায় ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী নওরিন নুসরাত স্নিগ্ধার। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। পরে মেয়েকে হত্যার অভিযোগে ঢাকার আদালতে মামলা করে পরিবার। আদালত অপমৃত্যুর মামলা এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে আশুলিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশনার ব্যত্যয় করে অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যা মামলাটির তদন্তকাজ শেষ করে প্রতিবেদন দেয় থানা পুলিশ। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী নওরিন আত্মহত্যা করেছেন। তবে পুলিশের এই প্রতিবেদন মানতে নারাজ ভুক্তভোগীর পরিবার। তাদের দাবি, আসামিপক্ষের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৩ সালের ২১ জুলাই ইব্রাহিমের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ইব্রাহিম একটি কম্পানিতে আশুলিয়ায় চাকরি করেন। নওরিনের পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর নওরিন পড়ালেখা করতে চাইলেও তাঁর স্বামী ইব্রাহিম ও শাশুড়ি আর লেখাপড়া করাতে চাননি। বিয়ের দুই দিন পর থেকেই নওরিনকে লেখাপড়া না করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। পরে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন স্বামী নওরিনকে তালাক দেওয়ারও হুমকি দেন। এরপর গত বছরের ৮ আগস্ট নওরিনের মৃত্যু হয়। ২০ আগস্ট ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালতে নওরিনের বাবা খন্দকার নজরুল ইসলাম হত্যা মামলা করেন। মামলায় নওরিনের স্বামী ইব্রাহিম খলিল ও শাশুড়ি শামসুন্নাহারকে আসামি করা হয়। আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক জি এম আসলামুজ্জামান অপমৃত্যু ও হত্যা মামলার তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নওরিন ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট বিকেল ৩টা ৫ মিনিটের দিকে তাঁর বাসার ষষ্ঠ তলার ছাদ থেকে লাফ দেন। এতে গুরুতর জখম হলে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক ৩টা ৫০ মিনিটে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার সময় তাঁর স্বামী ইব্রাহিম খলিল ও শাশুড়ি শামসুন্নাহার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তাই আদালতে অপমৃত্যু মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরে আদালত নির্দেশ না দিলেও হত্যা মামলার তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয় আশুলিয়া থানা পুলিশ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলাটি তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রতীয়মান হয়, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর জখম হওয়ায় নওরিনের মৃত্যু হয়েছে। তদন্তকালে অপরাধের কোনো উপাদান বা কোনো নিরপেক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওরিনের বাবা খন্দকার নজরুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি। তাঁকে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আদালতে করা হত্যা মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। আসামিপক্ষ থানা পুলিশকে প্রভাবিত করেছে। আমরা নির্ভরযোগ্য কোনো তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে সঠিক তদন্ত চাই। সরকারের কাছে আমার মেধাবী মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মহিউদ্দীন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হত্যা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পুলিশকে দেওয়া হয়নি। তবে অপমৃত্যু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে হত্যা মামলার তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছেন। তা ছাড়া ভুক্তভোগী নওরিনের মা, বাবা ও ভাই ১৬১ ধারায় কোনো জবানবন্দি দেননি। কিন্তু তাঁদের জবানবন্দি আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক জি এম আসলামুজ্জামান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে হত্যা মামলার তদন্ত করেছি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এখানে কিছু করা হয়নি। ঘটনা যেটা পেয়েছি সেটাই তুলে ধরেছি। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু করা হয়নি। যদি বাদীপক্ষের সন্দেহ থাকে তাহলে তারা এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>