<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজিদ নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রামে আন্দোলনে নিহত তানভীর ছিদ্দিকীর চাচা ও চাচাতো ভাইদের। যাঁদের আসামি করা হয়েছে, ঘটনার দিন তাঁরা কেউ ঢাকায় ছিলেন না বলে তাঁদের দাবি। সেদিন তাঁরা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও চকরিয়ায় ছাত্রদের সমর্থনে আন্দোলনে ছিলেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অভিযোগ উঠেছে, তানভীর ছিদ্দিকী হত্যা মামলার পলাতক আসামি ও কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন উসমান শরীফের ষড়যন্ত্রে ইকরামুল হত্যা মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে। এদিকে তানভীর ছিদ্দিকীর পরিবার ও স্বজনরা বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এমনকি এক আসামি রাজনৈতিক মামলায় ১২ বছর কারাবাস শেষে ঘটনার এক মাস আগে মুক্ত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাঁরা ঘরছাড়া হয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী ইকরামুল হক ৪ আগস্ট মিরপুর-১০ এলাকায় নিহত হন। ৭ সেপ্টেম্বর তাঁর বাবা জিয়াউল হক বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রধান আসামি করে এ মামলায় মোট ৭৩ জনকে আসামি করা হয়। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে। এর মধ্যে ২৯ নম্বর আসামি জিয়াউর রহমান (৪৫), ৪১ নম্বর আসামি মো. কামাল (৪৩), ৫৪ নম্বর আসামি মিজানুর রহমান মাতব্বর (৫৫) এবং ৬২ নম্বর আসামি নাজমুল হোছাইন (৩৪) তানভীরের আত্মীয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তানভীর গত ১৮ জুলাই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে শহীদ হন। তিনি চট্টগ্রাম আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। পাঁচ বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিলেও ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় তানভীর সিদ্দিকীর প্রাণ। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শহীদ তানভীর ছিদ্দিকীর পরিবারের অভিযোগ, ১৫ বছর আগে তানভীর ছিদ্দিকী হত্যার আসামি তারেক বিন উসমান শরীফ ও নোমান শরীফের সন্ত্রাসী বাহিনী ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে শহীদ তানভীরের বাড়িসহ স্বজনদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে এলাকা ছাড়া করে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তাঁরা বলেন, তাঁর ষড়যন্ত্রে শহীদ সাজিদ হত্যা মামলায় ঢোকানো হয়েছে শহীদ তানভীর ছিদ্দিকীর আত্মীয়দের নাম। এর মধ্যে মো. কামাল (৪৩) তানভীরের চাচা। তিনি কালারমার ছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সদস্য। কিন্তু মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীমের এপিএস। এ ছাড়া জিয়াউর রহমান জিয়া, মিজানুর রহমান মাতাব্বর ও নাজমুল হোছাইন তানভীরের চাচাতো ভাই। জিয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, কক্সবাজার জেলা যুবদলের সদস্য এবং কালারমার ছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি ছিলেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এজাহারে তাঁকে জলদস্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মিজানুর রহমান মাতাব্বর ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কালারমার ছড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতিও। আর নাজমুল হোছাইনও উপজেলা যুবদলের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শহীদ তানভীরের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় পরিবারের অনেক সদস্য পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে শতাধিক আত্মীয়-স্বজনকে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শহীদ তানভীর সিদ্দিকী পরিবারের সদস্য তারেক আজিজ সিদ্দিকী বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর যখন আমরা আমাদের হারানো বসতভিটায় বাড়িঘর নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করি, ঠিক তখনই এ রকম একটা হত্যা মামলায় আমাদের জড়ানো হয়েছে। এমন খবর পেয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়ি। এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে সঠিক তদন্ত ও নিরাপদ মানুষদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও কাফরুল থানার ওসির কাছে লিখিত আবেদন করেছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। যদি এই ঘটনায় তাঁরা জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্তে না আসে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ওই মামলার সাক্ষী মো. তরিকুল ইসলাম নামের একজন বলেন, তাঁর নাম কিভাবে আসছে, সেটি তিনি জানেন না।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার আরেক সাক্ষী অয়ন আল আশরাফী বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি যতদূর জানি, তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তারপর যেহেতু অভিযোগ করা হচ্ছে, তাঁরা ছিলেন না।  মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসবে তাঁরা আসলেই ছিলেন কি না। যদি ওই সময় চট্টগ্রামে তাঁরা থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই চার্জশিটে তাঁদের নাম বাদ যাবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p>