<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নবীনন্দিনী ফাতেমা (রা.) ও আলী (রা.)-এর দুই পবিত্র সন্তান হলেন হাসান-হুসাইন (রা.)। একজন তৃতীয় ও অপরজন চতুর্থ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। এ দুজন আহলে বায়তে রাসুল (সা.)-এর মূলধারা। প্রিয় নবী (সা.)-এর স্নেহ ও সান্নিধ্যের পরশে লালিত-পালিত হওয়ার কারণে তাঁরা অনন্য মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হতো, আপনার পরিবারে কে আপনার কাছে সবচেয়ে প্রিয়? তিনি বলতেন হাসান ও হুসাইন। তিনি তাঁদের নাক টিপে দিতেন এবং জড়িয়ে ধরতেন। (তিরমিজি,  জামেউল কাবির, হাদিস : ৩৭৭২)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুফাজ্জাল (রহ.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আপন দুই নাতির নাম হাসান ও হুসাইন রাখার আগ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এই দুই নাম গোপন রেখেছিলেন, অর্থাৎ এ দুটি নাম পৃথিবীর কেউ জানত না। (উসদুল গাবা ফি মারিফাতিস সাহাবা, ২/১৩)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই দুজন পৃথিবীতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দুটি সুগন্ধময় ফুল। নবীজি বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসান-হুসাইন দুজন এ পৃথিবীতে আমার দুটি সুগন্ধময় ফুল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৭০)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বাভাবিকভাবে শিশুদের খুব আদর করতেন। তাদের চুমু খেতেন, কোলে তুলে নিয়ে আদর করতেন। হুসাইন (রা.)-কেও কোলে নিয়ে আদর স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতেন। ইয়ালা ইবনে মুররাহ (রা.) বর্ণনা করেন, একবার তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে এক ভোজসভায় যোগদান করেন। এ সময় হুসাইন (রা.) রাস্তার ধারে খেলাধুলায় মশগুল ছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, নবীজি (সা.) লোকদের সামনে এগিয়ে গেলেন এবং তার দুই হাত প্রসারিত করেন। তখন ছেলেটি (হুসাইন) এদিক-ওদিক পালাতে লাগল এবং নবীজিও তার সঙ্গে কৌতুক করতে করতে তাকে ধরে ফেলেন। এরপর তিনি তার এক হাত হুসাইনের চোয়ালের নিচে রাখলেন এবং অন্য হাত তার মাথায় রাখলেন এবং চুমু খেলেন। আর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হুসাইন আমার থেকে এবং আমি হুসাইন থেকে। যে ব্যক্তি হুসাইন (রা.)-কে ভালোবাসে, আল্লাহ তাআলা তাকে ভালোবাসেন। হুসাইন (রা.) আমার বংশের একজন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪৪)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসান-হুসাইন প্রিয় নবী (সা.)-এর আহলে বায়তের অন্তর্ভুক্ত। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একদিন এমন অবস্থায় প্রত্যুষে বের হলেন, তার শরীর মোবারক নকশা করা চাদর দ্বারা আবৃত ছিল। তখন হাসান (রা.) এলে নবীজি তাকে নিজের চাদরের মধ্যে শামিল করে নিলেন। এরপর হুসাইন (রা.) এলে তাকেও নবীজি (সা.) চাদর মোবারকে জড়িয়ে নিলেন। অতঃপর ফাতেমা (রা.) এলে নবীজি (সা.) তাঁকে চাদরের মধ্যে শামিল করে নিলেন। সর্বশেষে আলী (রা.) এলে তাকে চাদরের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে নিলেন।  অতঃপর কোরআনে কারিমের সুরা আহজাবের ৩৩ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করেন, যেখানে আল্লাহ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হে নবী-পরিবার! আল্লাহ তাআলা তো শুধু চান তোমাদের হতে নাপাকি দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (মুসলিম, হাদিস : ২৪২৪; মুস্তাদরাক হাকেম, হাদিস : ৪৭০৯)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসান (রা.) ছিলেন অনুপম ও অমায়িক স্বভাবের অধিকারী। প্রিয় নবী (সা.)-এর চেহারা মোবারকের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিল ছিল হাসান (রা.)-এর। হুসাইন (রা.) হলেন পূতঃপবিত্র ও বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী এক অসাধারণ মহাপুরুষ। তাঁরা উভয়ে প্রিয় নবীজির নবুয়তের সাক্ষ্যদাতা, জান্নাতি যুবকদের সরদার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : সিনিয়র শিক্ষক (ইসলাম শিক্ষা) </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ</span></span></span></span></p>