<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পতিত হাসিনা সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জিডিপি, বিনিয়োগ, রপ্তানিসহ বিভিন্ন পরিসংখ্যানে জালিয়াতি হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা হয়েছে, তবে যেভাবে দেখানো হয়েছে, ততটা নয়। মূল্যস্ফীতি বিভিন্ন সময়ে অর্ধেক কম দেখানো হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্র কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনা সরকারের আমলে মূল্যস্ফীতি কম দেখানো হতো। প্রকৃত মূল্যস্ফীতির হার সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। প্রকৃত মূল্যস্ফীতির হার যেখানে ছিল ১৫ থেকে ১৮ শতাংশের মধ্যে, সেখানে বিগত সরকারের আমলে মূল্যস্ফীতির অদৃশ্য উচ্চ সীমা ছিল ১০ শতাংশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্বেতপত্র কমিটির হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৫ শতাংশ, মে মাসে ১৫.৩ শতাংশ, জুনে ১৫ শতাংশ, জুলাইয়ে ১৮.১ শতাংশ, আগস্টে ১৬.২ শতাংশ ও সেপ্টেম্বর মাসে ১৫.৩ শতাংশ ছিল। ফলে দরিদ্র মানুষের জীবনে এর চরম অভিঘাত পড়ছে। বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস্তবে মূল্যস্ফীতির হার সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে সরকারি সংস্থা বিআইডিএস ও ২০২২-২৩ সালে সানেমের জরিপেও এই বিষয়ের সত্যতা উঠে এসেছে। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে সরকারি পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক বেশি। এতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হারেও প্রভাব পড়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিবিএসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে শ্বেতপত্র কমিটির মনে হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে মূল্যস্ফীতির অদৃশ্য উচ্চ সীমা ছিল ১০ শতাংশ, এটা মনে করা ভিত্তিহীন নয়। এ ছাড়া পদ্ধতিগত সমস্যা তো আছেই।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে যে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত চিত্র সরকারি পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হচ্ছে না, তার সপক্ষে বেশ কিছু উদাহরণ দিয়েছে শ্বেতপত্র কমিটি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) হিসাবে দেখা যায়, সেই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৫ শতাংশ। যদিও সেই মাসে বিবিএসের হিসাব ছিল ৭.৯ শতাংশ। এ ছাড়া বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বেশ কিছু নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য হিসাব করে দেখিয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের গ্রামাঞ্চলের খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১১.৭ শতাংশ। যদিও এই সময় সরকারি হিসাব হচ্ছে ৬.৭ শতাংশ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনের ভূমিকায় মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় উৎপাদনের তথ্য জালিয়াতি করা হয়েছে এবং চাল, ভোজ্য তেল ও গমের মতো মৌলিক কিছু পণ্যের চাহিদা কম দেখানো হয়েছে। ফলে অস্থির হয়েছে বাজার। ক্ষমতাবান ব্যবসায়ী গ্রুপকে বিভিন্ন নীতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হলেও ক্রেতার কষ্ট বেড়েছে। মজুদের বিষয়টি যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ না করায় দুরবস্থা আরো বেড়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেশি দেখানো হয় : প্রতিবেদনে</span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলা হয়েছে, গত দশকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেশি মাত্রায় ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে। রপ্তানির তথ্য যে বেশি দেখানো হয়েছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তথ্যও বেশি দেখানো হতো, যা আইএমএফের হস্তক্ষেপে পরে সংশোধন করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার ভাতা দেওয়া হয়নি। ২০২২ সালে ৭৩ শতাংশ ভাতাভোগী দরিদ্র ছিল না। দেশের দুই কোটির বেশি মানুষ যদি দুই দিন কাজ করতে না পারে, তাহলে দারিদ্র্যের সীমারেখার মধ্যে পড়ে যাবে। এ অবস্থা থেকে বৈষম্যের চিত্র বোঝা যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকঢোল পেটালেও কমেনি দারিদ্র্য : উন্নয়নের</span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গুণগান গাইলেও দেশে কার্যকরভাবে দারিদ্র্য কমাতে পারেনি হাসিনা সরকার। কিন্তু ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করেছে দারিদ্র্য কমছে। অথচ ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মাঝারি আকারের থাকলেও, দেশে দারিদ্র্য কমেছে দ্রুতগতিতে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে ১৯৯০ সালের পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য কমার তুলনা করা হয়। এতে দেখা গেছে, ১৯৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসের গতি ছিল খুবই ধীর। অন্যদিকে ২০০০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল মাঝারি এবং দারিদ্র্য হ্রাস হয়েছে দ্রুত। আর ২০১০ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেও দারিদ্র্য হ্রাস ছিল ধীরগতি। এই তথ্য থেকে স্পষ্ট যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের মধ্যে একটি বিভাজন পরিলক্ষিত হয়েছে, যা সামগ্রিক উন্নয়নপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে দারিদ্র্যের হার ৩৮ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছে, যা ৫৬.৭ শতাংশ থেকে কমে ১৮.৭ শতাংশে নেমে এসেছে, যা বার্ষিক গড়ে প্রায় ১.২ শতাংশীয় পয়েন্ট কমেছে। গত দশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছে। ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। দারিদ্র্য সবচেয়ে দ্রুতগতিতে কমেছে ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে। যেখানে প্রতিবছর গড়ে দারিদ্র্য কমেছে ১.৭৪ শতাংশীয় পয়েন্ট।</span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>