<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সম্প্রতি বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাল উৎপাদন কম হবে। তাই আমদানি করে দেশের বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানো না গেলে খাদ্যে ঘাটতির শঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><img alt="চাল সরবরাহ না বাড়লে খাদ্যঘাটতির শঙ্কা" height="680" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/01-11-2024/Untitled-1f.jpg" style="float:left" width="346" />গত আগস্টে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে আমন চাষে প্রভাব পড়ার পর থেকে খুচরা বাজারে চালের দাম বাড়তি। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফসলের ফলন কমে যাওয়ায় চালের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুল্ক কমিয়ে আমদানিকে উৎসাহিত এবং স্থানীয় মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও বাজারে উত্তাপ কমছে না। গত এক মাসের ব্যবধানে খুচরায় প্রতি কেজি চালের দাম ৪ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গরিব মানুষের খাদ্য ব্যয়ের একটি বড় অংশ যায় চালের পেছনে। নতুন করে চালের মূল্যবৃদ্ধিতে সংসার সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৬ আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে দুই দফা বন্যা দেখা দেয়। এতে আট লাখ ৩৯ হাজার টন চালের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি চাল আমদানিতে শুল্ক-কর ৬২.৫ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এর পরও বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, চাল আমদানি করা হলে বর্তমান বাজারের চেয়ে বেশি দামে ক্রেতাদের কিনতে হবে। বেশি দামের কারণে দেশের ব্যবসায়ীদেরও মুনাফা হবে না। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ পরিস্থিতিতে বাজারে ভোক্তাদের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে চালের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি তুলে নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিসি)।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খাদ্য অধিদপ্তরও বলছে, তাদের গুদামে এখন চালের মজুদ ১০ লাখ টনের নিচে, যা গত ১৫ আগস্ট ছিল প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টন। সরকারিভাবে বিতরণ বাড়ানোয় মজুদ কমছে। যে হারে চাল বরাদ্দের পরিকল্পনা রয়েছে, এতে আগামী বছরের জুলাই নাগাদ প্রয়োজনের তুলনায় ১১ লাখ টন চালের ঘাটতি হতে পারে। নিরাপত্তা মজুদ এবং সম্ভাব্য ঘাটতি বিবেচনায় ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা দরকার। বেসরকারি খাতকেও চাল আমদানি বাড়াতে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার এবং এক মাস আগের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে মোটা চাল (ব্রি-১৮ ও পাইজাম) কেজিপ্রতি খুচরায় ৬.৯৬ শতাংশ দাম বেড়ে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিকন চাল (মিনিকেট ও নাজিরশাইল) কেজিপ্রতি ৪.১৭ শতাংশ দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক মাসে রাজধানীর বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বৃদ্ধি ও রাইস মিল থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কারওয়ান বাজারের ফাতেমা রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী মো. মাহফুজ আলম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বেশ কয়েক মাস ধরেই চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। পাইকারি পর্যায়েই গত এক মাসে কয়েকবার দাম বেড়েছে। চলতি সপ্তাহেও বস্তাপ্রতি দাম ৫০ টাকা বেড়েছে। এখন মানভেদে মিনিকেট চাল বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) তিন হাজার ৩৫০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল ব্রি-২৮ প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২৫ টাকায়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার চালের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করে আমদানি বাড়াতে শূন্য শুল্ক করার জন্য এনবিআরকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার চালের সম্ভাব্য ঘাটতি বিবেচনায় গত ২০ অক্টোবর শুল্ক-কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনে। তবে ওই হ্রাসকৃত শুল্কে থাইল্যান্ড থেকে চাল আমদানি করলে প্রতি কেজির দাম দাঁড়াবে ৯২ থেকে ৯৫ টাকা। পাশের দেশ ভারত থেকে আমদানি করলে স্থানীয় বাজারে দাম দাঁড়াবে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। এই দামে চাল আমদানি করলে তা স্থানীয় বাজারের দামের চেয়েও বেশি পড়বে। এ অবস্থায় আমদানি আরো সহজ করতে এবং আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে চালের শুল্ক শতভাগ তুলে নেওয়া জরুরি বলে মনে করছে ট্যারিফ কমিশন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত মোট চালের কমবেশি ৪০ শতাংশ চালই আসে আমন থেকে। খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকা ময়মনসিংহ অঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় অনেক জমির আমন ধান নষ্ট হয়েছে। এর প্রভাব দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় পড়বে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। তাই এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক সময়ে বাজারে চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ না নিলে দেশে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমনের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে বাইরের দেশগুলো থেকে খাদ্য আমদানি করা দরকার। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যে দরে চাল বিক্রি হচ্ছে, আমদানিতে যে শুল্ক রয়েছে এটি দিয়ে ব্যবসায়ীরা লাভ করতে পারবেন না। এ কারণে ব্যবসায়ীরা আমদানি করছেন না। তাই চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি তুলে দেওয়া হলে ব্যবসায়ীরা আমদানিতে উৎসাহী হবেন। দেশের বাজারেও চালের সরবরাহ বাড়বে। একই সঙ্গে জিটুজির (সরকার থেকে সরকার) মাধ্যমেও চাল আমদানির উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ক্যাবের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শুল্ক-করমুক্ত সুবিধায় চাল আমদানি করা হলে বাজারে চালের দাম কিছুটা কমবে। তবে আমদানির পরিমাণ বা নির্ধারিত সময় বেঁধে দিতে হবে। এটি না করলে দেশের কৃষকরা নিরুৎসাহ হবেন। তবে সরকার জিটুজি পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে চাল আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করতে পারলে আরো ভালো হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বন্যার কারণে এবার চাল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। চালের মজুদ বৃদ্ধির বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক হওয়ার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করছি, মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, বছরে দেশে চার কোটি টনের মতো চাল উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে দেড় কোটি টনের মতো হয় আমনে। সপ্তাহ তিনেক পর থেকে আমন চাল বাজারে আসা শুরু করতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, পেঁয়াজ-মুরগি চড়া</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। এখন বেশির ভাগ সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেও পেঁপে ও আলু ছাড়া ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি কিনতে পারেনি ভোক্তারা। এখনো পেঁয়াজ ও মুরগির দাম চড়া। টিসিবির তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৩০ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৮ শতাংশ বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৮ শতাংশ বেড়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং ভারতের পেঁয়াজ কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>