<p style="text-align:justify">কতক্ষণ ঘুমালে সুস্থ থাকা যায়, এর উত্তর অনেকেই জানেন। চিকিৎসকদের মতে, গড়ে সাত ঘণ্টা ঘুম প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য যথেষ্ট। তবে মাত্রাটা প্রয়োজন অনুযায়ী কমবেশি হয়। কারো আট ঘণ্টা, কারো আবার পাঁচ ঘণ্টা ঘুমালেই হয়ে যায়।</p> <p style="text-align:justify">হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিশেষজ্ঞ এরিক ঝৌ বলেছেন, ‘আসলে ঘুম নয়, ঘুমের কোয়ালিটিটাই আসল।’ সবারই ঘুমের তারতম্য হয়। কেউ শুয়েই গভীর ঘুমে ডুবে যান। কারো আবার ঘুম খুব পাতলা। রাতে একাধিকবার উঠতে হয় বা ঘুম ভেঙে যায়। এই সময়টাই কমবেশি ঘুমের ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দেয়। যদি ঘুম থেকে উঠে মনে হয় একেবারে ঝরঝরে লাগছে, তাহলে ঘণ্টাপাঁচেক ঘুমালেও ঠিকঠাক ঘুম হয়েছে ধরে নিতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">ভালো ঘুম হওয়ার ওপর আসলে অনেক কিছুই নির্ভর করে। বিশেষ করে যাদের হৃদরোগের সমস্যা, ডায়াবেটিস, রক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ভালো ঘুম হওয়াটা খুব জরুরি। এমনকি ভালো ঘুমের ওপর মানসিক স্বাস্থ্য, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগের মতো সমস্যাও নির্ভর করে। অনেক সময়েই দেখা যায়, যারা মানসিক চাপে ভোগেন, তাদের ঘুমের সমস্যা হয়। তা ছাড়া রাতে ভালো ঘুম না হলে দিনে ঝিমধরা ভাব, গা ম্যাজম্যাজ করার সমস্যাও খুব বেশিমাত্রায় দেখা যায়। এ সমস্যাগুলো অফিসে হলেতো অবস্থা আরো অসহ্য হয়ে ওঠে।</p> <p style="text-align:justify">ঘুমের পেছনে মেলাটোনিন নামক এক জাতের হরমোনের বিশেষ ভূমিকা আছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত চারপাশ অন্ধকার হলে মস্তিষ্ক এই হরমোন নিঃসরিত করে। যার ফলে শরীরে ঘুম ঘুম ভাব তৈরি হয়। অত্যন্ত জরুরি এই হরমোনের নিঃসরণের ওপরেই ‘বডি-ক্লক’ নির্ভর করে থাকে। অর্থাৎ দিনের একটা বিশেষ সময়ে ঘুম চলে আসে, যা আনুষঙ্গিক শারীরবৃত্তীয় নানা কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। বয়স বাড়লে এই হরমোন ক্রমে কমে আসে। সে জন্যই দেখা যায়, অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সীরা চট করে খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠে পড়তে পারেন। কিন্তু অল্পবয়সীরা বেলা অবধি ঘুমায়। </p> <p style="text-align:justify"><strong>ভালো ঘুম না হলে কী করবেন</strong></p> <p style="text-align:justify">সহজ উপায় জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রথমত, দিনে না ঘুমানো। অনেকেরই দুপুরে ভাতঘুমের অভ্যাস আছে। কিন্তু দুপুরে আধাঘণ্টার বেশি কোনো অবস্থাতেই ঘুমানো উচিত নয়। পাশাপাশি রাতে একটা নির্দিষ্ট ঘুমের সময় বজায় রাখা। ঠিক ঘড়ি ধরে একটা সময় আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়ার অভ্যাস করতে পারলে ঘুমের সমস্যা অনেকটাই কাটানো যেতে পারে। এ ছাড়া শারীরিক কাজ বাড়াতে হবে। অফিসে বসে কাজ করতে হলে অন্তত মাঝামাঝি সময়ে বা বাড়ি ফেরার পথে একটু হাঁটাহাঁটি করা অত্যন্ত জরুরি। অনেকে বিকেলে বাড়ি ফিরে জিম করেন। জিম করে গা ঘামিয়ে নিলে ঘুমের জন্য ভালো।</p> <p style="text-align:justify">তবে ঘুম ভালো না হওয়া নিয়ে বেশি চিন্তা করতেও নিষেধ করছেন ডা. ঝৌ। তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে কয়েক দিন ভালো ঘুম না হওয়াটাই স্বাভাবিক। সব দিন তো আর সমান নয়। মাঝেমধ্যে অফিসে ঝামেলা, বাড়িতে মনোমালিন্য, পছন্দের ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়েও রাত জাগতে হয়। অনুষ্ঠানে বা পার্টিতে একটু বেশি খানাপিনা হলে ঘুম আসতে দেরি হতেই পারে। সেসব নিয়ে বেশি ভাবা যাবে না। এক সপ্তাহের মধ্যে অন্তত চার দিন ভালো ঘুম হলেই যথেষ্ট।’</p> <p style="text-align:justify">সূত্র : দ্য ওয়াল</p>