<p>চাকরির নিশ্চয়তাসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইএলএসটি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৪ বুধবার) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।</p> <p>শিক্ষার্থীরা জানান, গাইবান্ধা জেলায় যাত্রা শুরুর পর সারাদেশে এখন এ ধরনের ইনস্টিটিউট আছে সাতটি। তবে এ ইনস্টিটিউট থেকে পড়ালেখা করে চাকরির কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা এটিকে ‘বেকার তৈরির কারখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। </p> <p>তারা আরো জানান, গাইবান্ধা জেলা থেকে এ পর্যন্ত চারটি ব্যাচের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী পাস করে বেরিয়েছেন। নাসিরনগর থেকে বেরিয়েছেন ৯০ জনের মতো শিক্ষার্থী। আগামী বছর সব কয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৩০০ বেশি শিক্ষার্থী পাস করে বের হওয়ার কথা। তবে তাদেরকে কোথায় চাকরি দেওয়া হবে সেই বিষয়ে এখনো সরকারি কোনো সঠিক নির্দেশনা আসেনি।</p> <p>এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক স্টুডেন্ট ফেডারেশনের (বিডিএলএসএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়াতুল্লাহ খান শিহাব, নাসিরনগর শাখার সভাপতি আহসান হাবিব, সাধারণ সম্পাদক তাহমিদ নিশাত, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল হক আরফান ও ফারাহ সাদিয়া পুতুল।</p> <p>শিক্ষার্থীরা জানান, ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক (আইএলএসটি) অধিদপ্তরের ২০২০ সালে গঠিত অর্গানোগ্রামে দুই হাজারের ওপরে নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। যা ডিপ্লোমাধারীদের জন্য মুখ্য পদ। কিন্তু এ পদে তাদের বাদ দিয়ে নন-টেকনিক্যাল প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ২০২৩-এর অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের জন্য ৭২টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেখানেও তাদের নিয়োগ না দিয়ে নন-টেকনিক্যাল প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ পর্যন্ত গাইবান্ধা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি ব্যাচ আইএলএসটি থেকে পাস করে চাকরি পায়নি। তারা এখন বেকার। আরো কয়েকটি ব্যাচ বের হবে। তাদেরও চাকরির নিশ্চয়তা নেই। এটি মূলত বেকার তৈরির একটি কারখানায় পরিণত হয়েছে।</p> <p>মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাবা মায়ের লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়ালেখা করেও চাকরি না পেয়ে বিপথগামী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যদি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হয় তাহলে সার্টিফিকেট আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হোক। সরকার আরো নতুন নতুন ইনস্টিটিউট স্থাপনের কাজ করছে। এসব করে কোনো লাভ নেই। </p> <p>চার দফার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগবিধি মোতাবেক উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (কৃত্রিম প্রজনন ও প্রাণিস্বাস্থ্য) পদে দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা কার্যকর করা। ভিএফ ও সমমানের পদে ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক থেকে পাস করে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে ৭০ শতাংশ পদে অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম চূড়ান্ত করা। ওভারশিয়ার (কৃষি, বায়ার এবং ডেইরি) বায়ার ওভারশিয়ার ও ডেমনস্ট্রেটর পদসমূহে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। নবসৃষ্ট গ্রেড-৩, গ্রেড-৫, গ্রেড-৬ ও গ্রেড-৯ পদ সমূহের বিপরীতে খসড়া নিয়োগবিধির আলোকে পূরণকৃত সব নিয়োগ এবং পদোন্নতি বাতিল করা।</p> <p>বিডিএলএসএফ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়াতুল্লাহ খান শিহাব বলেন, ‘আমরা এখান থেকে পাস করে চাকরি পাব, এমন নিশ্চয়তা নেই। আমাদের আগে যারা পাস করে বের হয়েছে তারা সবাই এখনো বেকার। আমাদের জন্য নিয়োগ দেওয়া পদে নন-টেনিক্যাল পার্সনদের নেওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’</p> <p>নাসিরনগর শাখার সভাপতি আহসান হাবিব বলেন, ‘কিছুদিন আগে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন ঘটিয়েছি। কিন্তু আমাদের আইএলএসটির শিক্ষার্থীরা এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমাদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নন-টেকনিক্যালদেরকে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের কী অপরাধ? শত শত শিক্ষার্থী বেকারত্ব নিয়ে হতাশায় দিন পার করছেন। যদি আমাদের দাবি সাত দিনের মধ্যে মানা না হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাব।’</p> <p>ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক (আইএলএসটি) অধ্যক্ষ ডা. কাজী রফিকুজ্জামান সাংবাদিকদেরকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবিই যৌক্তিক। কিন্তু ওপর মহলকে তাদের দাবির গুরুত্বটি বুঝতে হবে এবং বুঝাতে হবে। কিছু কিছু দাবির বিষয়ে আলোচনা চলমান আছে বলে জানান তিনি।</p>