<p>ময়মনসিংহের ভালুকায় শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে উপজেলার ভরাডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সেনা সদস্য, র‌্যাব ও থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নেয়। </p> <p>মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ভরাডোবা পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।</p> <p>স্থানীয় বিভিন্ন জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিচালনা কমিটির এক সদস্যসহ ৫-৭ জন ব্যক্তি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক একেএম আসাদুজ্জামান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিরেন চন্দ্র রায় ও রফিকুল ইসলামকে অফিস কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যান। ওই সময় শিক্ষক বিরেন চন্দ্র রায়ের গায়ে হাত দেওয়া হয়। পরে স্থানীয়রা বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই শিক্ষকদের স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।</p> <p>পরে এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে এবং শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ ও লঞ্ছনাকারীদের বিচার দাবিতে বিক্ষুব্ধ করে। খবর পেয়ে নির্বাহী অফিসার আলীনূর খানসহ সেনা সদস্য, র‌্যাব ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে আশ্বাস দিলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ক্ষিার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে যায়।</p> <p>স্থানীয়রা জানান, দূর্নীতির অভিযোগে ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হককে বরখাস্ত করে সহকারী শিক্ষক বিরেন চন্দ্র রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর আজিজুল হক পুনরায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন শুরু করেন।</p> <p>বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘চলমান ক্লাশ থেকে শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে বের করে নেওয়া হয়েছে। আমাদের সামনে শিক্ষক বীরেন চন্দ্র রায় স্যারের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক বাবার সমতুল্য। আমরা শিক্ষকদের অপমান মেনে নিতে পারি না। আমার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই। বিচার করা না হলে আমরা আবারো রাস্তায় নামব।’</p> <p>সহকারী শিক্ষক একেএম আসাদুজ্জামান জানান, তিনি নবম শ্রেণীতে ক্লাস নিচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকজন লোক বর্তমান কমিটির প্রথম সভায় যোগদানের জন্য তাকেসহ কয়েকজন শিক্ষককে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জোরপূর্বক নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।</p> <p>বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক বলেন, ‘আমি বরখাস্ত থাকাবস্থায় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বীরেন চন্ত্র রায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাকে সভাপতি করে বোর্ডে পরিচালনা কমিটি জমা দেন। চলতি মাসে তিনি পুনরায় বিদ্যালয়ে যোগদানের পর আমাকে সদস্য সচিব করে কীভাবে কমিটি হয়েছে, তা আমার জানা নেই। গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) ওই কমিটির প্রথম সভা হওয়ার কথা ছিল। সভায় যোগদানের জন্য কমিটির কিছু লোক শিক্ষকদের নিয়ে আসতে চাইছিল। এর বেশি কিছু আমার জানা নাই।’</p> <p>উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী নূর খান জানান, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।</p>