<p>পদত্যাগে রাজি না হওয়া প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসেছে ১৪ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে এমন একটি ছবি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।</p> <p>বুধবার দেবীদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করার পর পক্ষে-বিপক্ষে বাগবিতণ্ডা ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। পরে প্রশাসনের সহায়তায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।</p> <p>ছবিতে দেখা যায়, টেবিলের ওপর থাকা প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের নেম প্লেট সামনে রেখে তার চেয়ারে বসে আছে ওই শিক্ষার্থী। ছবিটি নিজের ফেসবুকে আপলোড করে সে ক্যাপশনে লিখে, ‘আমাদের সু-সম্মানিত আলমগীর স্যার কোথায়।’<br />   <br /> বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ করেন ও বিদ্যালয়ের অর্থে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে। </p> <p>দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুল ইসলাম এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির সভাপতি নিগার সুলতানা সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ না করেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। </p> <p>চেয়ারে বসা ওই শিক্ষার্থী বলে, ‘সবাই অফিসকক্ষ ত্যাগ করার পর আবেগে চেয়ারে বসে ছবি তুলি, এটা আমার ঠিক হয়নি, সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার ফেসবুক থেকেও তা বাদ দিয়েছি।’</p> <p>প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে একটি মহলের প্ররোচনায় ছাত্রদের মিথ্যে অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামিয়ে দেয়। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই, কোথায় এ দলের সদ্য পদও নাই। দেবীদ্বারে নাকি আমার দুটি বাড়ি আছে, তাও তাদের প্রমাণ দিতে বলেছি। ওরা প্রমাণ দিতে পারেনি।’ </p> <p>শুক্রবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, ‘ঘটনার দিন সংবাদ পেয়ে আমি সেনা সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে আনি।’ </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস থেকে বের হওয়ার পর শিক্ষার্থী চেয়ারে বসে যে ক্ষমাহীন ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। কোনো বিবেকবান ও সুস্থ ছাত্র এটা করতে পারে না।’</p>