<p style="text-align:justify">বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হবে, ছাদখোলা বাসে উদযাপন হবে না তা কী করে হয়! এমনই এক আবদার নিয়ে ২০২২ সালে সাফের ফাইনালের সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন সানজিদা আক্তার। মুহূর্তেই দাবানলের মতো সেটি ছড়িয়ে যায়। এরপর মাঠের খেলায় নৈপুণ্য দেখিয়ে মেয়েরা প্রত্যাশাও পূরণ করেন। দেশকে পাইয়ে দেন সাফের প্রথম শিরোপার স্বাদ।</p> <p style="text-align:justify">ফুলের মালা গলায় পরিয়ে সংবর্ধনা দিয়ে বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবন পর্যন্ত ছাদখোলা বাসে করেই চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হয়। সে যাত্রায় সাবিনা-সানজিদাদের সঙ্গী হয়েছিল হাজার হাজার দর্শক। দুই বছর আগের সেই দৃশ্য এখনো সতেজ ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকারের মনে। সেবার ফাইনালে জোড়া গোল করা এই ফুটবলার সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে ডুবে গেলেন রোমাঞ্চে।</p> <p style="text-align:justify">বললেন, ‘কী অবিশ্বাস্য একটি দিন ছিল আমাদের জন্য! এখনো নতুন মনে হয়। আমাদের জন্য সত্যি গর্বের ব্যাপার ছিল।’<br /> চ্যাম্পিয়ন সেই মেয়েরা আজ আরেকটি সাফল্যের দুয়ারে দাঁড়িয়ে। টানা দ্বিতীয় সাফের ফাইনালে দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে নামবেন মুকুট ধরে রাখার অভিযানে।</p> <p style="text-align:justify">আর তাতে ঘুরেফিরে চলে আসছে সেই প্রশ্ন। আবারও হবে নাকি ছাদখোলা বাসে উৎসব?  দুই বছর আগের ছাদখোলা বাসের অন্যতম কারিগর সানজিদা এবারও আশা করছেন তেমনটাই। গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুভূতি শেয়ার করে এই উইঙ্গার লিখেছেন, ‘দেশের সংস্কার ও নতুন জাগ্রত কর্মকাণ্ডকে প্রেরণা দিতে আমাদের ভালো করাটা গুরুত্বপূর্ণ। ট্রফি ধরে রাখার মিশন এবং দেশবাসীকে আরেকবার উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিতে আমরা এটি জিততে চাই। আর সেটি আমরা করে দেখাব ইনশাআল্লাহ।</p> <p style="text-align:justify">আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’ ছাদখোলা বাসের ব্যবস্থা নিয়ে অবশ্য অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এখনই মন্তব্য করতে রাজি নন। গতকাল দশরথ স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নে সাবিনার উত্তর, ‘ম্যাচটা আগে জিতি। তারপর না হয়...।’ তবে শিরোপা জিততে পারলে এমন কিছুর আশা তিনিও করছেন।</p> <p style="text-align:justify"><br /> আর এই উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিতে হলে মাঠে দেখাতে হবে সেরা নৈপুণ্য। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে সাবিনাকে। ১৪ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলা অভিজ্ঞ এই ফুটবলার সেই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছেন বলেই জানিয়েছেন, ‘দেখুন, আমি ২০১০ থেকে জাতীয় দলে খেলছি। এখন যে দলটা খেলছে, তাদের নিয়ে আমি খুব খুশি। এরা খুবই ভালো খেলছে। আমি তাদের নিয়ে সামনে এগোতে চাচ্ছি। দলটাকে প্রেরণা দেওয়া, মাঠে গোছালো রাখা এবং যত কিছুই হয়ে যাক না কেন, টিম যেন ঠিক থাকে, সেই চেষ্টাই করছি আমি। হ্যাঁ, আমিও সেরাটা দিতে প্রস্তুত আছি।’ শুধু সাবিনা নন, টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত দারুণ ছন্দে থাকা ঋতুপর্ণা চাকমা কিংবা পাঁচ গোল করা তহুরা খাতুনও ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারেন। তেমনি বাংলাদেশের রক্ষণে ভীতি ছড়াতে পারেন নেপালের সাবিত্রা ভাণ্ডারি। আগের দিন কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবিনা বলেছিলেন, সাবিত্রাকে আটকানো কঠিন হবে। ফ্রান্সের ক্লাব গুইনগামের হয়ে খেলা এই ফরোয়ার্ডের সাম্প্রতিক ফর্মও বলছে সে কথাই। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে চাপের মুখে তাঁর পা থেকে আসে মহা গুরুত্বপূর্ণ গোল। তবে তাঁকে আটকাতে বাংলাদেশের রক্ষণও সিদ্ধহস্ত। আফিদা খন্দকার, মাসুরা পারভিনরা যদি সাবিত্রা-প্রীতিদের আটকে দিতে পারেন আর সাবিনা-তহুরাদের পায়ে মিলে যায় গোল, তাহলে আরেকবার ছাদখোলা বাসের উৎসব তো হতেই পারে!</p>