<p style="text-align:justify">কোটা সংস্কারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের এক দফায় রূপ নিলে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এই আন্দোলনে অন্তত এক হাজার ৫৮১ জন শহীদ হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছে অগণন ছাত্র-জনতা। এর মধ্যে রাজধানীর তিনটি হাসপাতাল—পঙ্গু হাসপাতাল (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান), জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১১৯ জন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হুন্ডি বন্ধ হলে বছরে রেমিট্যান্স ৫০ বিলিয়ন করা সম্ভব!" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/30/1727664343-b977dbf7236550b78fb8c241bf896ed4.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হুন্ডি বন্ধ হলে বছরে রেমিট্যান্স ৫০ বিলিয়ন করা সম্ভব!</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/09/30/1430405" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এই তিনটি হাসপাতাল সরেজমিন ঘুরে আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে চিকিৎসা নিয়ে তাঁদের বিচিত্র দুঃখ-বেদনার কথা—        ‘দরিদ্র পরিবারের সামর্থ্য নেই আমার চিকিৎসার খরচ জোগাড়ের। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে বাবা তিন লাখ টাকা জোগাড় করেছেন। সেটা দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু অর্থসংকটে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারিনি।</p> <p style="text-align:justify">এ কারণে এরই মধ্যে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে, পঙ্গুত্ব নিয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকতে হবে। পুরোপুরি সুস্থ হতে অনেক টাকা প্রয়োজন। সেটা কোথায় পাব! বিদেশে নিলে হয়তো ভালো হয়ে যেতাম।’</p> <p style="text-align:justify">রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ভেজা চোখে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নুরুল আফসারের ছেলে কলেজপড়ুয়া মো. ইয়াসিন। তারুণ্যের উত্তেজনায় গত ২০ জুলাই ফটিকছড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। ওই মিছিলে দুর্বৃত্তদের রামদায়ের কোপে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাঁর হাত। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বর্তমানে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন (পঙ্গু হাসপাতাল) হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।</p> <p style="text-align:justify">গতকাল সরেজমিনে পঙ্গু হাসপাতালে গেলে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তখন ইয়াসিনের পাশে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রতিনিধি নিধির। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে হামলায় আহত ৬৯ জন বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে কেবিনে আছেন ছয়জন আর ওয়ার্ডে আছেন ৬৩ জন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পলকের যত অনিয়ম-দুর্নীতি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/30/1727663920-8f97a6e8c823ba448e182e0146cbcddf.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পলকের যত অনিয়ম-দুর্নীতি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/30/1430404" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এর বাইরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ৪৫ জন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন পাঁচজন।</p> <p style="text-align:justify">এই তিন হাসপাতালে ভর্তি ১১৯ জনের বেশির ভাগ গুলিতে আহত। অন্যদের অনেকে বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন। এতে অনেকে পঙ্গু হয়ে গেছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, এখনো যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের অবস্থা ভালো না। সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।</p> <p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেষ হয়েছে প্রায় দুই মাস হলো। কিন্তু এখনো আহতরা হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। থামেনি পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আহাজারি। আহতদের চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করলেও তাতে সন্তুষ্ট নন তাঁরা।</p> <p style="text-align:justify">আহতদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, সরকার চিকিৎসা ব্যয় বহনের ঘোষণা দেওয়ার আগেই অনেকের চিকিৎসা ব্যয় বাবদ ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে গেছে। এতে অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে সরকার ব্যয় বহন করলেও চলছে দায়সারা চিকিৎসা। উন্নত চিকিৎসার অভাবে অনেকের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আহতরা ভবিষ্যতে কর্মজীবনে ফিরতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। আবার পরিবারের উপার্জনক্ষম অন্য ব্যক্তি না থাকায় আহতদের অনেকে ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন।</p> <p style="text-align:justify">গতকাল রাজধানীর তিনটি হাসপাতাল ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>ভুক্তভোগীরা যা বলছেন  </strong></p> <p style="text-align:justify">পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ইয়াসিন বলেন, ‘২০ জুলাই অন্য অনেকের সঙ্গে আমিও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের মিছিলে যাই। হঠাৎ একদল লোক আমার ওপর হামলা চালায়। তারা আমাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। জ্ঞান হারিয়ে সড়কে পড়ে থাকি। উদ্ধার করে প্রথমে আমাকে নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিছুটা সুস্থ হলে সেখানে থেকে আমাকে পাঠানো হয় ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। এখন পঙ্গু হাসপাতালে আছি। এখনো আমার হাত স্বাভাবিক হয়নি। চিকিৎসকরা বলেছেন, অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে যাব। কিন্তু সেটা কত দিনে সম্ভব হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মনে হয় বিদেশে নিলে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারতাম। আমি ও আমার পরিবার চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।’</p> <p style="text-align:justify">গতকাল পঙ্গু হাসপাতালে কথা হয় আরেক আহত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ঝালকাঠির শাকিল খানের সঙ্গে। গত ২০ জুলাই উত্তর বাড্ডায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে বাঁ হাতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সরকারের চিকিৎসা ব্যয় বহনের ঘোষণার আগেই তাঁর এক লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে এই টাকা জোগাড় করেন তিনি। শুরুতে টাকার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে পারেননি। বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিলেও অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটছে তাঁর প্রতিটি মুহূর্ত।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="এখনো গ্রামে বাল্যবিবাহের শিকার ৯% কিশোরী" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/30/1727665166-e7b32c76ea63a66e2116398d282e6e4c.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>এখনো গ্রামে বাল্যবিবাহের শিকার ৯% কিশোরী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/30/1430409" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সেখানে কথা হয় আরেক আহত বরিশাল সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের শিক্ষার্থী মো. হাসিব মোল্লার সঙ্গে। ৪ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে সরকার পতনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। হাসিব বলেন, ‘শুরুতে আমার চিকিৎসা খরচ কেউ দেয়নি। পরিবার প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। এখন পঙ্গু হাসপাতালে সরকারের খরচে আমার চিকিৎসা চলছে।’</p> <p style="text-align:justify">৫ আগস্ট মিরপুর এলাকায় সরকার পতনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হন মো. দুলাল। ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। অনেক টাকা খরচ করে কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে বর্তমানে তিনি পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুলাল বলেন, ‘শুরুতে অর্থ সংকটে চিকিৎসা অবহেলায় আমার হাতের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখনো বুঝতে পারছি না হাতটি পুরোপুরি ঠিক হবে কি না।’</p> <p style="text-align:justify">দুলাল জানান, শটগানের গুলিতে তাঁর একটি হাত প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। বর্তমানে তাঁর পরিবার পথে বসার অবস্থা হয়েছে। টানাটানির সংসারের মধ্যেও প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে নিজের পকেট থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে ২০ জুলাই গাজীপুরের চৌরাস্তায় দুই পায়ে ভারী অস্ত্রের গুলিতে আহত হন পটুয়াখালীর আলমগীর হাওলাদারের ছেলে মো. মনির হোসেন। পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জানালেন চরম অনিশ্চয়তায় কাটছে তাঁর জীবন। শুরুতে অর্থের অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারেননি তিনি। এখন কী হবে তা-ও জানেন না।</p> <p style="text-align:justify"><strong>জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট</strong></p> <p style="text-align:justify">‘সামনে লোক আছে বোঝা যায়, কিন্তু স্পষ্ট কিছু দেখতে পাই না। এই চিকিৎসা দিয়েই পারলে হাসপাতাল থেকে খেদিয়ে দেয়।’ অনেক অনুতাপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষার্থী রানা হোসেন (২৪)। ১৯ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করার সময় পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই সময় তাঁর দুই চোখ, মাথাসহ দেহের বিভিন্ন অংশে ছররা গুলির আঘাত লাগে।</p> <p style="text-align:justify">রানা হোসেন বলেন, ‘এখন তো চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেবে। এরপর আর চিকিৎসা হবে কি না জানি না। চোখ ভালো হবে কি না তা-ও জানি না। আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই।’</p> <p style="text-align:justify">নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে আহত হন আরেক শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হক (২৭)। তাঁর দুই চোখ, বুক ও মাথায় অন্তত ৪০টি ছররা গুলি লেগেছে। এর মধ্যে দুই চোখে অপারেশন করা হয়েছে। মোজ্জাম্মেল বলেন, ‘এখন এক চোখে ঝাপসা দেখি। অন্য চোখ পুরোপুরি অন্ধকার।’ ১৯ জুলাই নরসিংদীতে আহত হয়ে ছররা গুলি শরীরে নিয়ে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ইবাদত হোসেন (১৭) নামের আরেক শিক্ষার্থী। তার দুই চোখ, মাথা, হাত, পা ও পিঠে লেগেছে অসংখ্য ছররা গুলি। বর্তমানে চোখের অপারেশন হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">ইবাদতের মা জানু বেগম বলেন, ‘চোখের কর্নিয়া ও রেটিনায় সমস্যা হয়েছে। ডাক্তার আমাদের বাসায় চলে যেতে বলেছেন।’</p> <p style="text-align:justify">চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন লিটন মিয়া (২১) নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট বগুড়া সাত মাথা এলাকায় পুলিশের ছররা গুলিতে চোখ ছাড়াও আমার মাথায় তিনটি আর বুকে একটি ছররা গুলি গেঁথে আছে।’</p> <p style="text-align:justify"><strong>ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল</strong></p> <p style="text-align:justify">‘গলার এক পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। ক্ষতটা ছড়িয়ে ইনফেকশন হয়েছে। বর্তমানে গলা থেকে কোমর পর্যন্ত পুরোটা অবশ প্রায়। বাঁচার সম্ভাবনা অনেক কম।’ কথাগুলো বলছিলেন গুরুতর আহত মুরাদ ইসলামের (৪০) বাবা আমিনুল ইসলাম।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমি অবসরে যাওয়ার পর মুরাদ সংসারের হাল ধরে। গত ১৮ জুলাই অফিস বন্ধ থাকায় ঘটনাক্রমে সে কাজীপাড়া যায়। সেখানে আন্দোলনতদের ওপর পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। তার একটি মুরাদের গলা ভেদ করে চলে যায়। প্রথম এক মাস ধারদেনা করে তাঁর চিকিৎসা করিয়েছি। এরপর সরকার দায়িত্ব নেয়। তবে এখনো আমাদের আশঙ্কা কাটেনি। মুরাদ সুস্থ হবে তো! আবার সংসারের হাল ধরতে পারবে তো! এসব প্রশ্ন আমাদের আতঙ্কিত করছে।’</p> <p style="text-align:justify">‘গুলির আঘাতে স্বামীর মাথার খুলিতে গুরুতর জখম হয়েছে। এখন বাচ্চাদের মতো ব্রেনের মুভমেন্ট (নড়াচড়া) দেখা যায়। ডাক্তার বলেছেন, তাঁকে বাঁচাতে হলে কৃত্রিম খুলি লাগাতে হবে। আবার লাগানোও অনেক রিসকের। একইভাবে এনেস্থেশিয়া দেওয়া নিয়েও সংকট তৈরি হয়েছে। এভাবে কত দিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’</p> <p style="text-align:justify">কথাগুলো বলছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজল মিয়ার (২৭) স্ত্রী সিন্থিয়া। গত বছর ১ আগস্ট তাঁরা বিয়ে করেন। গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হন কাজল।</p> <p style="text-align:justify">সিন্থিয়া বলেন, ‘সরকার ব্যয় বহন করলেও অনেক সময় হাসপাতালে অনেক ওষুধ থাকে না। সেগুলো বাইরে থেকে কিনতে হয়। এর মধ্যে বাইরে থেকে একটি ইনজেকশন কিনতে হয়, যার দাম দুই হাজার টাকা। উন্নত চিকিৎসা পেলে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু দেশের বাইরে নেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই।’</p>