<p style="text-align:justify">চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির হাতে তিনিসহ তিনজন আটক হন। সন্ধ্যায় তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কারাগারে থাকা ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রামে হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) হতে পারেন। গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ফজলে করিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে দুটি মামলা করা হয়। ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম থেকে এসংক্রান্ত কাগজপত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রামের মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হলে সেখানে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে। ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার দায়ে আখাউড়া থানায় বিজিবির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। তবে তার কোনো রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।</p> <p style="text-align:justify">ফজলে করিমকে ভারতে পালাতে সহযোগিতা করার অভিযোগে মো. আব্দুল হান্নান নামের একজন ও পাচারকাজে জড়িত নাঈম চৌধুরী নামের আরো একজনকে আটক করে বিজিবি সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি)। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার আব্দুল্লাহপুর সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">আটক সাবেক ওই সংসদ সদস্যের কাছ থেকে একটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট (লাল), নগদ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা, একটি আইফোন, একটি রিয়ালমি ফোন, দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড (স্মার্ট ও পুরাতন) এবং ছবি, ওষুধসহ অন্য কাগজপত্র পাওয়া যায়। এ ছাড়া পালানোর কাজে সহযোগিতাকারীর কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, নগদ দুই হাজার ৩৯০ টাকা এবং মানবপাচারকারীর নিকট থেকে একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৩০ টাকা জব্দ করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">বিজিবির সূত্রটি আরো জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, মানবপাচারকারী মো. নাঈম ভারতে প্রবেশ করিয়ে দেবে বলে মোবাইল ফোনে জানায়। এ অবস্থায় ফজলে করিম ঢাকা হতে বাসযোগে আখাউড়ায় আসেন। পরে মো. হান্নান নামের আরেকজন তাকে সহযোগিতা করেন। চিকিৎসাকাজে ভারত যাচ্ছিলেন উল্লেখ করে ফজলে করিম জিজ্ঞাসাবাদে বিজিবিকে জানান, এভাবে যাওয়ার চেষ্টা করাটা তার ভুল হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">একাধিক সূত্র জানায়, বড় অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে ফজলে করিমকে ভারতে পাঠানোর চুক্তি করেন নাঈম। এরই ধারাবাহিকতায় ফজলে করিমকে আখাউড়ায় আসতে বলা হয়। পুলিশ ও বিজিবি বিষয়টি আগে থেকেই জানতে পেরে সতর্ক অবস্থান নেয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল ৭টার দিকে তিনজনকে আটক করে বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযোগ লিখে তাদের থানা পুলিশের হাতে সোপর্দের প্রক্রিয়া চলছে।</p> <p style="text-align:justify">আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদ কালের কণ্ঠকে জানান, বিজিবি কাছ থেকে বুঝে পাওয়ার পরই সাবেক এমপিসহ তিনজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। সাবেক এমপিকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম পুলিশ থেকে কাগজ পাঠানো হয়েছে। তবে আইনে না থাকায় আখাউড়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় ফজলে করিমের রিমান্ড আবেদন করা হয়নি বলেও জানান তিনি।</p>