<p style="text-align:justify">লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর ভুলুয়া নদীসহ সকল খাল দখলে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এতে ভুলুয়া নদীতে অবৈধ দখলের ঘটনা তদন্ত ও অবৈধ বাঁধ অপসারণে সময় বেঁধে আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ দখলের ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে হবে। </p> <p style="text-align:justify">তদন্তপূর্বক ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে দখল উচ্ছেদ করে ভুলুয়া নদীর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে হাইকোর্টকে প্রতিবেদন দিতে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। </p> <p style="text-align:justify">এর আগে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার পালোয়ান জনস্বার্থে ভুলুয়াসহ সব খাল অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করতে একটি রিট আবেদন করেন। এ প্রেক্ষিতে প্রথম শুনানিতে ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। </p> <p style="text-align:justify">অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, ভুলুয়া এলাকায় প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এজন্য প্রথমেই ভুলুয়া নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্ত শেষে নদী থেকে অবৈধ বাঁধ অপসারণের জন্য ১০ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। বাঁধ অপসারণের মাধ্যমে ভুলুয়ায় পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর জেলা প্রশাসককে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রিটের পূর্ণাঙ্গ শুনানিতে এই দুই জেলার সবগুলো খাল অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে মুক্ত করার জন্য আদেশ দিতে পারেন হাইকোর্ট। </p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, সাত্তার পালোয়ানের দায়ের করার রিটে নৌপরিবহণ সচিব, নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাত উপজেলার নির্বাহী অফিসারদেরকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটে নদী ও খাল দখল রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। একইসঙ্গে ভুলুয়া নদী ও সকল খাল দখলদারদের নিকট থেকে খরচ আদায় করে দখলমুক্ত করার জন্যে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">গত ২৩ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিক ‘ভুলুয়া নদীর দখল ও অব্যবস্থাপনা: পানিবন্দি লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর ৩ লাখ মানুষ’সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন রিটে যুক্ত করা হয়। নদীটি নোয়াখালী থেকে শুরু হয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার মাঝ দিয়ে দক্ষিণে গিয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে। নদীর দুই তীরে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার অন্তত ২০টি ইউনিয়ন অবস্থিত। নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ ইউনিয়নগুলোর মানুষ রয়েছেন চরম দুর্ভোগে।  </p> <p style="text-align:justify">পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার মধ্য দিয়ে মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ভুলুয়া নদীর লক্ষ্মীপুর অংশের দৈর্ঘ্য ৭৬ কিলোমিটার। জলাধারটি আগে গড়ে ৩০০ মিটার চওড়া হলেও এখন কমে গড়ে ১০০ মিটার হয়ে গেছে।</p>