<p>চরম অহংকারী ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটোয়ারী অভিযোগের পাহাড় নিয়ে এলাকা ছেড়ে গাঢাকা দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তার পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ। শনিবার (১৭ আগস্ট) পৌর মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।</p> <p>পরে পৌরসভার চত্বরে শিক্ষার্থীরা ২ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান এই কর্মসূচিতে ছাত্রসমাজের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শাকিল মুশফিক, ইমাম হোসেন, আতিক হোসেন, জিহাদুল ইসলাম প্রমুখ।</p> <p>এসময় তারা বলেন, পৌরসভাটি খ শ্রেণি থেকে ক শ্রেণিতে উন্নতি হলেও সেবার মান বাড়াতে ব্যর্থ হন মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী। বরং দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির জন্য তার কাছে সাধারণ মানুষ ছিল মূল্যহীন। তাছাড়া পৌরসভাবাসীর সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহারকারী মেয়র পৌরসভাকে অনিয়মের আখড়া হিসেবে গড়ে তুলে নিজে ও তার মেয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজমুন নাহার অনি মিলে তৈরি করেছেন কালো টাকার পাহাড়। </p> <p>বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে অটোরিকশা চালক থেকে শুরু করে এমন কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ নেই যাদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেনি। তাই আমরা এই ফ্যাসিবাদ মেয়রের পদত্যাগ দাবি করছি। একই সঙ্গে তার দোসর অর্থ কেলেঙ্কারির মূল হোতা পৌরসভার ক্যাশিয়ার গিয়াস উদ্দিনেরও পদত্যাগ দাবি করেন তারা। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের গণহত্যাকারী খুনিদের দ্রুত বিচার ও ফরিদগঞ্জের সকল দপ্তরের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। </p> <p>এদিকে একই সময়ে ছাত্র সমাজের ব্যানারে আরেকটি দল পৌরসভার সামনে অটোবাইক দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তারাও পৌর মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেন। </p> <p>মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ফরিদগঞ্জ বাজারের অটোচালকদের কাছ থেকে লাইসেন্সের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়, শুধুমাত্র দলীয় নেতাকর্মীদের মাস্টার রোলে পৌরসভায় চাকরির প্রদান, বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কমিশন বাণিজ্য, দুর্নীতি করে নিজের মেয়েকে দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করা, সালিস বাণিজ্য, দলীয় ক্যাডার দিয়ে চাঁদাবাজি, কালো টাকায় বিভিন্ন স্থানে একাধিক বহুতল বাড়ি নির্মাণ। জোর জবরদস্তি করে ইচ্ছেমতো মনগড়াভাবে বিভিন্ন স্থানে পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, মতের অমিল হলে যাকে তাকে পৌরসভা এবং তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাচন চালাতেন এই মেয়র। এলাকার ভদ্র এবং নিরীহ মানুষকে রাজাকারের সন্তান বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ছিল মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারীর স্বভাব। গত কয়েক বছরে ফরিদগঞ্জের বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী তার অপকর্ম তুলে ধরায় চরমভাবে নাজেহাল হন। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরিতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত।</p> <p>তার মেয়ে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজমুন নাহার অনি বিভিন্ন তদবির ও নিয়োগ বাণিজ্য করতেন। স্থানীয়রা তার পরিচয় দিয়েছেন মেয়ের তার বাবার অবৈধ টাকা ও সম্পদের ক্যাশিয়ার। তাই এখনই বাবা, মেয়ে এবং এই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার দাবি উঠেছে।</p> <p>এদিকে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাঝে এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে গাঢাকা দেন মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী। তারপর থেকে পৌরসভায় অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ভুক্তভোগীরা।</p>