<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সংকটের ভেতরই রয়েছে। উত্তরাধিকার সূত্রে যে রাষ্ট্রটি পাওয়া গেছে, সেটি ব্রিটিশের তৈরি। তার চরিত্র ছিল আমলাতান্ত্রিক; পাকিস্তানি শাসনে সে আরো অধিক আমলাতান্ত্রিক হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা দর-কষাকষির ভেতর দিয়ে ঘটেনি, যেমনটি ঘটেছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘটেছে মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে, যে মুক্তির একেবারে প্রথম শর্ত ছিল রাষ্ট্রটিকে কেবল আয়তনে ছোট করা নয়, চরিত্রগতভাবে বদলে ফেলা অর্থাৎ ভেঙে ফেলে তাকে গণতান্ত্রিক চরিত্র দেওয়া। বাস্তব সত্য হচ্ছে এটা যে ওই কর্তব্য পালনটি সম্ভব হয়নি। উল্টো বরং রাষ্ট্র আগের চেয়েও অধিক আমলাতান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। একাত্তরে কেউ কি ভাবতে পেরেছিল যে স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো দিন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটবে? সেটি ঘটেছে। প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সামরিক বাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থানে সপরিবারে নিহত হয়েছেন। তার পরে অভ্যুত্থানকারীরা অল্প সময়ের জন্য খন্দকার মোশতাককে ক্ষমতার দৃশ্যমান শীর্ষে বসাল। এরপর জিয়াউর রহমান এলেন। মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার উল্লেখযোগ্য একটি ভূমিকা ছিল; তখন এবং পরেও তিনি সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং ওই বাহিনীর একাংশের হাতেই নিহত হয়েছেন। জিয়াউর রহমানের পরে এলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই আগমনটিও ঘটল সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই। ১০ বছর ছিলেন, আরো কিছুদিন টিকতে চেয়েছিলেন। বিক্ষুব্ধ জনগণের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে তিনি মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার উপায় খুঁজছিলেন; সেনা কর্মকর্তারা রক্তপাত ঘটাতে রাজি হননি বলেই তাঁকে সরে যেতে হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন" height="339" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/12-11-2024/Untitled-1.jpg" style="float:left" width="321" />এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে দুর্নীতির। সাজাও হয়েছিল। কিন্তু মামলা হওয়া দরকার ছিল কমপক্ষে দুটি। একটি রাষ্ট্রদ্রোহের, অপরটি জেনারেল মঞ্জুর হত্যায় সংশ্লিষ্টতার। দ্বিতীয়টি তবু হয়েছে, জেনারেল মঞ্জুরের ভাই করেছেন। তবে সে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। কারণ রাষ্ট্রের শাসকরা যথোপযুক্ত উৎসাহ দেখাননি। মামলাটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এরশাদের প্রধান অপরাধটি হচ্ছে রাষ্ট্রদ্রোহের, তা নিয়ে মামলা কিন্তু করাই হলো না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাকিস্তানের শাসকরা পাকিস্তানকে ইসলামী চেহারা দিতে চেয়েছিলেন, বাঙালিরা তা মেনে নেয়নি। যে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা সেটি ধর্মনিরপেক্ষ, বাংলাদেশ রাষ্ট্র কখনোই পুরোপুরি ধর্মবিযুক্ত হতে পারেনি, উপরন্তু সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার যে উল্লেখ ছিল তাকে জব্দ করা হয়েছে এবং এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সংযোজন ঘটিয়েছেন। একাত্তরের যুদ্ধের সময়ে এমনটি ঘটার কথা ছিল অকল্পনীয়। বোঝা যাচ্ছে রাষ্ট্র চেহারায় তবু বদলেছে, কিন্তু স্বভাব-চরিত্রটি একেবারেই বদলায়নি, ভেতরে সেই আগের মতোই অগণতান্ত্রিক রয়ে গেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর প্রাথমিক প্রয়োজনগুলোর একটি ছিল সংবিধান প্রণয়ন। যে সংবিধান গৃহীত হয়েছে, তা-ও কিন্তু অক্ষত থাকেনি। সামরিক অভ্যুত্থানের পরিণামে সংবিধান স্থগিত হয়েছে, নাগরিক অধিকার কার্যকর থাকেনি, রাজনৈতিক কাজ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে এবং পরে নির্বাচন দেওয়া হয়েছে অবৈধ শাসকদের বৈধতা দেওয়ার আবশ্যকতায়। এমনকি সেনা সমর্থিত বেসামরিক শাসনও তো সহ্য করতে হয়েছে দেশবাসীকে। নির্বাচিত সরকার যখন এসেছে, তখনো কিন্তু সংসদীয় ব্যবস্থা কাজ করতে পারেনি। একসময়ে জাতীয় সংসদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধি পাস করেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাজও করেছে, কিন্তু আদালতের রায়কে ব্যবহার করে সেই ব্যবস্থাকে আবার নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। আদালত সাহায্য করেছেন শাসন বিভাগকে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইতিহাস তাৎপর্যপূর্ণ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সত্য উন্মোচক ঘটনা হলো শাসনকারীদের দ্বারা বিচারপতিদের ব্যবহার করার ঘটনা। সবটাই ঘটেছে রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা যাদের দখলে ছিল, সেই শাসক শ্রেণির ইচ্ছা অনুযায়ী। ক্ষমতাকে কিভাবে ও কতটা সুচারুরূপে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে তাদের মধ্যে একটি অস্থিরতা ছিল, যে জন্য সংবিধান দ্রুত যেমন প্রণীত হয়েছে, তেমনি তাতে একের পর এক সংশোধন ঘটেছে। বিভিন্ন ধরনের সরকার এসেছে এবং শাসকদের প্রয়োজনে বেশ কয়েকবার বিচারপতিদের খুঁজে আনা হয়েছে রাষ্ট্রপতির পদে বসিয়ে রাখার জন্য। একাত্তর সালে প্রবাসে যে সরকার গঠিত হয়েছিল, তার চরিত্র হওয়ার কথা ছিল রাষ্ট্রপতিশাসিত; শেখ মুজিবুর রহমানকে করা হয়েছিল রাষ্ট্রপতি, কিন্তু দেশে ফেরার পরে সরকারের চরিত্র বদলে যায়, শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতির পদ ত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রীর পদ নেন। রাষ্ট্রপতির আসনের জন্য তখন একজন নির্দলীয় মানুষের দরকার পড়ে এবং তাঁকে পাওয়া যায় বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর মধ্যে। রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিচারপতি চৌধুরীর কার্যকাল কিন্তু দুই বছরও পুরো হয়নি। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে পদ নিয়ে ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে তিনি পদত্যাগ করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানকে সংশোধন করে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার প্রবর্তিত হয় এবং পুনরায় রাষ্ট্রপ্রধান হন শেখ মুজিবুর রহমান। চলে আসে একদলীয় শাসন। রাষ্ট্র হয়ে পড়ে পুরোপুরি কর্তৃত্ববাদী। ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির পরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে খন্দকার মোশতাক আহমদের শাসনকাল যখন শেষ হচ্ছিল তখন, অন্তিম মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়ে আসা হয় তখনকার প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে। এখানে একটি অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে, সেটি হলো যিনি ছিলেন প্রধান বিচারপতি, তিনিই একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হয়ে গেলেন। তবে এই দ্বৈত ভূমিকাটি ছিল নিতান্তই বাইরের দৃশ্য; ভেতরের ঘটনা হলো সামরিক বাহিনীর প্রধান জিয়াউর রহমানের হাতেই তখন রাষ্ট্রক্ষমতা চলে গিয়েছিল। ব্যাপারটি অবশ্যই গোঁজামিলের, তবে ঘটনা ওই একই; ক্ষমতাই হলো বৈধতার উৎস। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সাবেক বিচারপতি এবং তখনকার ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হন। এরপর ঘটে তাঁর </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বেচ্ছাপ্রস্থান</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আগমন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এরশাদ প্রথমে রাষ্ট্রপ্রধান ও সামরিক আইন প্রশাসক উভয় পদ নেন। এর তিন দিন পরে বিচারপতি আ ফ ম আহসানউদ্দিন চৌধুরীকে খুঁজে এনে বসানো হয় রাষ্ট্রপতির পদে, এরশাদ নিজে রইলেন প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে। কিন্তু সামরিক প্রশাসকের পদ যথেষ্ট সম্মানজনক না ঠেকায় রাষ্ট্রপতি পদে তিনি বসে যান বছর দেড়েক পরে। সব সিদ্ধান্ত তাঁর নিজের। আন্দোলনের মুখে তাঁর পতন ঘটে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে, তখন নিরপেক্ষ লোকের খোঁজ শুরু হয়। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য অন্য কাউকে না পেয়ে আন্দোলনকারী দলগুলো দ্বারস্থ হয় প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রপতি হতে সম্মত হলেন, কিন্তু শর্ত দিলেন যে তিনি কাজ করবেন তত্ত্বাবধায়ক হিসেবেই এবং নির্বাচিত নতুন সরকার এলে তিনি প্রধান বিচারপতির পদে ফেরত চলে যাবেন। সেটি তিনি করেছিলেনও। প্রধান বিচারপতি থেকে রাষ্ট্রপতি হলেন, রাষ্ট্রপতি থেকে আবার প্রধান বিচারপতি হলেন। সবই কর্তাদের ইচ্ছায়। তবে অবসর নেওয়ার পরও তিনি অব্যাহতি পাননি। ১৯৯৬ সালে বিএনপিকে হটিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নতুন রাষ্ট্রের কর্তারা আবার তাঁকে রাষ্ট্রপতির পদে আসীন করান। শাসকরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে ক্ষমতায় এসেছেন, এসে প্রয়োজনমাফিক বিচার বিভাগের সদস্যদের ব্যবহার করেছেন। এতে আদালতের মর্যাদা যে বেড়েছে, তা মোটেই নয়; বরং কমেছেই। বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা নতুনভাবে বিপদগ্রস্ত হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেখা যাচ্ছে, বিচারপতিরাই শুধু নন, কখনো কখনো আদালতের রায়ও শাসকদের জন্য উপকারে আসে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের ঘটনা একটি বড় ব্যাপার। কিছুদিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য ছাত্ররা যখন আন্দোলন করছিল, শেখ হাসিনা তখন বলেছিলেন যে কেবল সংস্কার নয়, কোটা ব্যবস্থাই তুলে দেওয়া হবে, কিন্তু পরে তিনিই আবার জানিয়েছেন যে সেটি করা সম্ভব নয়। কারণ আদালতের রায় রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের জন্য কোটার পক্ষে। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য আপিল করা চলে, সুযোগ আছে করার, শাসন বিভাগ তার নিজস্ব প্রয়োজনে সেটি করেও, তবে প্রয়োজন না হলে করে না। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে শাসন বিভাগ প্রয়োজন বোধ করে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা সব সময়ই বলা হয়। ওই ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নিয়ম-কানুন মোটেই যথেষ্ট নয়। উপযুক্ত শিক্ষক ছাড়া যেমন শিক্ষার মানোন্নয়ন হয় না, মেরুদণ্ডসম্পন্ন বিচারক না থাকলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তেমনি অসম্ভব। বিচারপতিদের নিয়োগের ব্যাপারটি তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতি নিয়োগ পান রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে। অধস্তন আদালতে বিচার বিভাগীয় পদে ও বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগও রাষ্ট্রপতিই দিয়ে থাকেন। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাঁর সব দায়িত্বই পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসারে। সংবিধানের ভাষায়, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেবল প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাঁহার দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি তাঁর পদে আছেন ঠিকই, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীই হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে মাঝেমধ্যে যে দাবি ওঠে, তার ভেতর প্রধান উত্কণ্ঠার বিষয়টি হচ্ছে উচ্চ এবং অধস্তন আদালতে নিয়োগ, পদোন্নতি, কর্মস্থল নির্ধারণ, ছুটি ইত্যাদি বিষয় শাসন বিভাগের হাতে না রেখে সুপ্রিম কোর্টের হাতে রাখা। কখনো কখনো শোনা গেছে যে পৃথক্করণ অত্যাসন্ন, বিচার বিভাগ স্বতন্ত্র ও স্বাধীন হয়ে গেল বলে, কিন্তু সেটি আজ পর্যন্ত ঘটেনি। এ ব্যাপারে সর্বশেষ ঘটনা ছিল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার উদ্যোগ। মনে হয়েছিল ওই লক্ষ্যে তিনি বেশ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও পারেননি। ছুটি নিয়ে তিনি বিদেশে চলে গিয়েছিলেন এবং বিদেশে থেকেই পদত্যাগ করেছেন। শাসন বিভাগ জানিয়ে দিয়েছে যে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ছিল, যে জন্য অন্য বিচারকরা তাঁর সঙ্গে আর কাজ করতে সম্মত হননি। ফলে তাঁর পক্ষে বিদায় নেওয়া ছাড়া অন্য কিছু করার ছিল না। বিচারপতি সিনহা অবশ্য বিদেশে গিয়ে বই লিখে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য হলো তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছিলেন, যে কাজ শাসন বিভাগের মোটেই পছন্দ হয়নি। তাঁর জায়গায় নতুন একজন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ পেয়েছেন, কিন্তু নিয়োগে জ্যেষ্ঠতা মানা হয়নি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই বিবেচনায় বিচারপতিদের একজন পদত্যাগও করেছিলেন। বলা বাহুল্য এসব ঘটনা বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> লেখক : ইমেরিটাস অধ্যাপক</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p>