<p>চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান হয়েও আমি বহু কষ্টে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেছি। আমার ইচ্ছা ছিল চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কিছু করা, তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলা। এই উদ্দেশ্য নিয়ে যখনই আমি এখানে স্কুল করতে চেয়েছি, নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সব বাধা-বিপত্তি ঠেলে আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি, যেখানে এখন দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। চা শ্রমিকরা আসলে খুবই অবহেলিত। যে মজুরি তারা পান, তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। অনেকেই চা শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলেন, কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে কেউই এগিয়ে আসেন না। এবারই প্রথম ব্যতিক্রমভাবে নতুন ইতিহাস গড়ে চা শ্রমিকদের কল্যাণে এগিয়ে এসেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। দেশসেরা শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় ২০ জন তরুণীকে চার মাসের সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। এই তরুণীরা সবাই দরিদ্র চা শ্রমিকদের মেয়ে। বেশির ভাগই পড়াশোনা করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সময় পেলে বাগানে চা-পাতা তোলে। বহু কষ্ট করে তারা পড়াশোনা করছিল। হয়তো টাকার অবাবে তাদের পড়াশোনা থেমেও যেত। এই অবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। গত ১৬ নভেম্বর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাদের একটি করে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। সেলাই মেশিন তো নয়, তাদের হাতে স্বপ্নপূরণের হাতিয়ার তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। কত মানুষকে, কত বড় বড় শিল্প গ্রুপকে দেখেছি চা শ্রমিকদের নিয়ে কথা বলছে, তাদের অসহায়ত্ব দেখে হা-হুতাশ করছে, কিন্তু সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেনি কেউ। এবারই প্রথম সহায়তা এবং সাহস নিয়ে এগিয়ে এসেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রতিটি পরিবারকে সচ্ছল করে তোলার লক্ষ্যে তাদের প্রয়াস ছিল অত্যন্ত সময়োপযোগী। এই সেলাই মেশিন চালিয়ে মেয়েরা এখন নিজেদের পড়ার খরচ জোগাতে পারবে, পাশাপাশি সংসারেও কিছুটা সহযোগিতা করতে পারবে। লাখো চা শ্রমিকের পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। ভালো থাকুক বাংলাদেশের দরিদ্র মেহনতি মানুষ।</p> <p> </p>