<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বালু ফেলে খালের মুখ বন্ধ করায় কৃষকের কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে খালে মাছ না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় জেলেরা। স্থগিত আছে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন শোলারতাইড় সেতুর কাজ। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও বন্ধ খালের মুখ উন্মুত্ত করতে পারেনি ভুক্তভোগীরা। সর্বশেষ খালের মুখ উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবিতে গত বুধবার দুপুরে উপজেলার কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন একটি অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমানের কাছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর বাজারের পাশ থেকে বাঁশহাটা বাঙালি নদী পর্যন্ত খালটি ১০০ বছরের পুরনো। আগে এটি পানি নিষ্কাশনের নালার মতো ছিল। পরবর্তীতে যমুনা নদী ভাঙনের ফলে ওই নালা খালে পরিণত হয়। বর্ষার সময় উপজেলার চারটি বৃহৎ ইউনিয়ন কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, ভেলাবাড়ী, কামালপুরের বিভিন্ন গ্রামের বৃষ্টির পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঙালি নদীতে পড়ে। খাল দিয়ে কুতুবপুর বাজার থেকে নৌকাযোগে মানুষ সারিয়াকান্দি, গোলাবাড়ী, পোড়াদহসহ বিভিন্ন পথে যাতায়াত করতেন। যেহেতু বাঙালি নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ছিল, সেজন্য প্রতি বছর বর্ষার সময় প্রচুর দেশিয় মাছ এই খালে উঠে আসতো এবং খালের ওপর নির্ভর করে কুতুবপুর বাজারের পিছনে গড়ে ওঠে জেলে পল্লী। প্রায় ৫শ একর এলাকাজুড়ে বোরো মৌসুমে বীজতলা হতো। প্রায় ১শ একর এলাকাজুড়ে রবি ফসল আবাদ হতো। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় তিন বছর আগে বাঙালি নদী খননের সময় ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের বাঁশহাটা গ্রামে বালু ফেলে এ খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময় কৃষকরা এ কাজে খননকারী কম্পানিকে বাঁধা দেন। কিন্তু তারা পাইপ দিয়ে পানি বের করে দেওয়ার কথা বললেও পরবর্তী সময়ে তা আর করেননি। ফলে খালের পানি বাঙালি নদীতে না পড়ে খালেই আটকে যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এতে করে নদীতে কোন মাছও পাওয়া যাচ্ছে না এবং কচুরিপানা হয়ে খালটি ব্যবহারে অনুপযোগী হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষকরা ইরি মৌসুমে বীজতলা তৈরি ও রবি ফসলের আবাদ করতে পারছেন না। এছাড়া খালের মুখ বন্ধ থাকার কারণে প্রায় ৬ কোটি টাকার ব্যয়ে শোলারতাইড় ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও এখনো কোনও সুরাহা পাননি কৃষকরা। এদিকে গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সঙ্গে নিয়ে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক সেখানে অভিযান পরিচলনা করলেও তা ব্যর্থ হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের শোলারতাইড় গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত কয়েক বছর ধরে অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি। কিন্তু আজও খালের মুখ খুলেনি। প্রশাসনের কাছে আমরা অতি দ্রুত খালের পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা চাইছি। না হলে এ এলাকার প্রায় ৩শ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বিঘা আমন ধান নষ্ট হচ্ছে । এছাড়া ২০ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান আমরা লাগাতে পারবোনা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে কৃষকরা আমাকে মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার অভিযোগ দিয়েছেন। খালের মুখ বন্ধ থাকায় বিশাল এলাকার আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশাল এলাকার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। তাই নিরুপায় হয়ে আমি নিজেই ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগের ভিত্তিতে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে কৃষকদের সুবিধার্থে দ্রুত খালের মুখ খুলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>