<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টানা বৃষ্টিতে বরগুনার আমতলী উপজেলায় এক হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। এক মাস ধরে চলা বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে বীজতলার চারা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে চলতি মৌসুমের আমন আবাদ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে অত্র উপজেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৩২৫ হেক্টর এবং ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ হাজার ৯৭৫ মেট্রিক টন ধরা হয়েছে। জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে আমনের বীজতলা করা হয়। উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় এক হাজার ৮৯৯ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাসব্যাপী টানা বর্ষণ। ২৬ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে আমনের বীজতলা তিন থেকে চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বীজতলা পানির নিচে থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেতের বীজতলা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারি হিসাবে ৪৭৫ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হলেও বাস্তবে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এক হাজার হেক্টর জমির আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, বর্তমানে আমন ধান রোপণের ভরা মৌসুম চলছে। মৌসুমের শুরু থেকেই টানা বৃষ্টিপাত চলছে। পানিতে ডুবে পচে গেছে আমনের অর্ধেকের বেশি বীজতলা। এ মুহূর্তে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কৃষকদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। বৃষ্টি এখনো থামেনি, জমি থেকে পানিও নামছে না। এ অবস্থায় নতুন করে বীজতলা তৈরি করাও কৃষকদের পক্ষে সম্ভব নয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া, আঠারগাছিয়া, হলদিয়া, চাওড়া, সদর ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে শুধু পানি আর পানি। এখনো শত শত হেক্টর আমনের বীজতলা তিন থেকে চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন মুসল্লি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুই এক কানি জমিত আমনের বীজ রোপণ হরছি। বৃষ্টির পানি জইম্যা হেইয়া সব পইচ্যা নষ্ট অইয়া গ্যাছে। অ্যাহন কুম্মে পামু বীজ ধান।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের আলম ডাক্তার ও খেকুয়ানী গ্রামের জহিরুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যামালা টাহা খরচ কইর‌্যা মোরা জমিতে আমনের বীজ চাষ হরছি। এক মাস ধইর‌্যা অতিরিক্ত দেওয়ইতে জমিতে পানি জইম্যা মোগো সব বীজ নষ্ট অইয়া পইচ্যা গ্যাছে। অ্যাহন মোরা নতুন কইর‌্যা ধানের বীজ লাগাইতে না পারলে সামনের দিনে পরিবার-পরিজন ও গুরাগারা লইয়া কী খামু হেই চিন্তায় আছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ঈসা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি আমন মৌসুমে মাসাধিককাল ধরে একটানা বৃষ্টি হওয়ায় রোপা আমন ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি হিসাবে ৪৭৫ হেক্টর আমনের বীজতলা পচে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমনের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>