<p>যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাত মাইল পশুর হাটের খাজনা আদায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু ক্ষমতার জোরে পশুর হাট থেকে লাখ লাখ টাকা খাজনা আদায় করে নামমাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছেন।</p> <p>জানা গেছে, দক্ষিণ বঙ্গের সব থেকে বড় পশুর হাট শার্শার সাত মাইল পশুর হাট। এখানে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। দুই দিনের এই হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল বেচাকেনা হয়। সরকারিভাবে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকায় এ হাট ইজারা দেওয়া হয়। নতুন বাংলা ১৪৩১ সালে সাত মাইল পশুর হাটের কোনো ডাক বা ইজারা না হওয়ায় শার্শা উপজেলা প্রশাসন হাটের খাজনা আদায়ের জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়, যা স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, যশোর জেলা প্রশাসক, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও শার্শা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করা হয়। কমিটিতে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল খালেককে প্রধান করা হয়।</p> <p>হাটের ইজারার মেয়াদ গত চৈত্র মাসে শেষ হলেও উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া খাজনা আদায় কমিটি আজও হাটের খাজনা আদায় করতে পারেনি। যে কারণে আগের ইজারা কমিটি সরকারি নিয়ম অমান্য করে খাজনা আদায় করছে। হাটে বিক্রির জন্য প্রতিটি পশু থেকে ১৫০ টাকা খাজনা আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সেখানে প্রতিটি পশু থেকে খাজনা আদায় করা হচ্ছে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা করে। এ ছাড়া হাটে তিন হাজার ব্যবসায়ীকে প্রতি এক বছরের জন্য তিন হাজার পাস দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেও আদায় করা হয়েছে টাকা।</p> <p>যে কারণে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সাত মাইল পশুর হাটের খাজনা আদায়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি যশোর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংকু তাঁদের সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে নিয়ে জোর করে পশুর হাট থেকে লাখ লাখ টাকা খাজনা আদায় করে নামমাত্র টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছেন। প্রতি হাটে প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা আদায় করা হলেও সরকারের কোষাগারে জমা পড়ছে মাত্র দুই লাখ টাকা। জানতে চাইলে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবির বকুল বলেন, ‘সাত মাইল পশুর হাট সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।’</p> <p>তবে কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফিরোজ আহম্মেদ টিংক বলেন, ‘এ বছর সাত মাইল পশুর হাট ইজারা হয়নি। আমরা শার্শা উপজেলা প্রশাসনকে হাটের খাজনা আদায়ের ব্যাপারে কিছুটা সহযোগিতা করি। হাটের টাকা-পয়সার ব্যাপারে আমি জড়িত না।’ শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, নতুন বছরে সাত মাইল পশুর হাটের ইজারা হয়নি। যে কারণে খাজনা আদায় কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে জনবলের অভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খাজনা আদায় করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া হাটে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>