<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর ওয়ারী থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল মেহবুব মিজুর খোঁজে লাঠিসোঁটা, রড, চাপাতি ইত্যাদি দেশি অস্ত্র নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন আওয়ামী লীগের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী। বাসায় মিজুকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা মিল্লাত হোসেন (৬৫) ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এক পর্যায়ে তারা মিল্লাত হোসেনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। হত্যার এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপে হত্যা মামলার পরিবর্তে অপমৃত্যুর মামলা নেয় পুলিশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঘটনার পরদিন ৮ ডিসেম্বর দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, মিল্লাত হোসেন স্ট্রোক করে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এতে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু ময়নাতদন্তে হত্যা প্রমাণিত হলে পরে থানা পুলিশ ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ নিজেরাই হত্যা মামলা করে। এ ছাড়া নিহতের ছেলে মিজু ওই বছরের ২১ মার্চ ওয়ারী থানার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোশাররফ হোসেন বাবুসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। এভাবে দুটি হত্যা মামলা হলেও রাজনৈতিক চাপে আসামি গ্রেপ্তার কিংবা মামলা তদন্তে অগ্রগতি ছিল না। দীর্ঘ ২৩ মাস পর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারসহ হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআইঅ্যান্ডও (অর্গানাইজড ক্রাইম, দক্ষিণ)। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হয়রানি, হুমকি ও মারধর করছিলেন। এরই অংশ হিসেবে যুবদল নেতা মিজুর বাসায় তাকে খুঁজতে যান তারা। মিজুকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ওই মামলা গতি পেলে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে হত্যারহস্য উদঘাটন করে পুলিশ।  পিবিআই সূত্র জানায়, নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর সে সময়ে ওয়ারী থানার এসআই শিহাব উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা বিবাদীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রায় ১৩ মাস পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পিবিআইয়ের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করলে পিবিআইয়ের এসআই জাহিদুল ইসলামের তদন্তে মামলাটি গতি পায়। গত ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তারের পর আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সহযোগী অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন, সিনিয়র কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে মামলাটির তদন্তকাজ শুরু করে ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও সিসি টিভি ফুটেজ দেখে তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যুবদল নেতা ফয়সাল মেহবুব মিজু বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি ও তার ছেলে স্থানীয় কাউন্সিলর আহম্মেদ ইমতিয়াজ মন্নাফি গৌরবের নির্দেশনায় আমাদের বাসায় হামলা এবং আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হয়েছেন আমার বাবা। যারা আমার নিরপরাধ বৃদ্ধ বাবাকে হত্যা করেছে, তাদের কঠিন বিচার চাই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পরদিন আসামিরা হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।</span></span></span></span></span></p>