<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। এক দশক আগেও এ রোগে আক্রান্তের মূল কারণ ছিল </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিউমোকক্কাল ও হিমোফিলাস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ভাইরাস। বর্তমানে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসের</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মাধ্যমে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের হাতে নতুন কোনো উদোগ বা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধযোগ্য টিকা নেই। এতে কয়েক বছর ধরে এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি থেমে আছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বশেষ ২০২২ সালে বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপের (বিডিএইচএস) তথ্য বলছে, ২০১১ সালে দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে ১১.৭ শিশু মারা যেত নিউমোনিয়ায়। ২০১৭-১৮ সালে তা কমে হয় ৮.০। সর্বশেষ ২০২২ সালে যা হয়েছে ৭.৪। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোটা দাগে তিন কারণে দেশে নিউমোনিয়া আক্রান্ত কমানো যাচ্ছে না। এক. নতুন টিকা না থাকা। দুই. বায়ুর মান অবনতি। তিন. আবদ্ধ ঘরে রান্নার ধোঁয়া। তাঁরা বলছেন, নিউমোনিয়া কোন জীবাণুর মাধ্যমে হচ্ছে, সেটির ৫০ শতাংশই এখনো অজানা। সেটি ভাইরাস নাকি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে হচ্ছে, তা জানা নেই। এটি জানার উপায় আছে, কিন্তু ইচ্ছা নেই। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে এর কারণ জানার উদ্যোগ নিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে কত শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বা মারা যাচ্ছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে নিউমোনিয়ায় বছরে মারা যাচ্ছে ২৪ হাজার শিশু। ছয় লাখ ৭৭ হাজার শিশু নিউমোনিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে আজ সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপ্রাদ্য </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আসুন নিউমোনিয়া বন্ধ করার লড়াইয়ে সক্রিয় সহযোগী হই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টিকা নিয়েও আক্রান্ত নিউমোনিয়ায় : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তেরো</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মাসের শিশু আরবি। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় দুই মাস ধরে রাজধানীর শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। শিশুটির মা সুমাইয়া আকতার জানান, শিশুটিকে নিউমোনিয়ার টিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছয় মাস বয়স থেকে তার সর্দি-জ্বর-ঠাণ্ডা প্রায়ই লেগে থাকে। সব সময় চিকিৎসকের কাছে দৌড়াতে হয়। সুমাইয়া থাকেন সাভারের আশুলিয়ায়। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে শিশুটির পেছনে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিনই ওষুধ লাগছে হাজার টাকার। এখন ধার করে কোনো রকমে খরচ জোগাড় করছে তাঁর পরিবার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইসিডিডিআরবির মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী ডা. আহমদ এহসানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, নিউমোনিয়া কমানোর একটা উপায় টিকা। গত এক দশক ধরে রোগটি প্রতিরোধে দেশে হিব ও পিসিভি টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকা দুটি কাজ করে নিউমোকক্কাল ও হিমোফিলাস ভাইরাসের বিরুদ্ধে। গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বেশি হচ্ছে রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল-আরএসভি ভাইরাসের মাধ্যমে। যার টিকা এখনো ইপিআইয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিশ্বে এ টিকার গবেষণা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ পর্যায়ে চলছে। তিনি বলেন, নিউমোনিয়া কম হয় যখন বাতাস বিশুদ্ধ থাকে। গত ১০ বছরে ঢাকাসহ অন্যান্য শহরের বাতাসের মানের উন্নতি হয়নি। এ জন্য সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। এ ছাড়া জ্বালানির ধোঁয়া, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রান্নাঘর থেকে বায়ুদূষণের মাত্রা কমিয়ে আনা যাচ্ছে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিউমোনিয়া রোগী ব্যবস্থাপনা ঠিক নেই : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আহমদ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এহসানুর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিউমোনিয়ার চিকিৎসার আগে দরকার বিপজ্জনক পরিস্থিতি বোঝা, অক্সিজেন স্বল্পতা নিরূপণ করা। যথাযথ ওষুধ ও অ্যন্টিবায়োটিক দেওয়া। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে যত শিশুর নিউমোনিয়া সন্দেহ করা হয়, তাদের মধ্যে অর্ধেক সঠিক জায়গায় চিকিৎসা নেয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ অ্যান্টিবায়োটিক নেয়। বাকিরা নেয় না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসপাতালের ভেতরে যাদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে গবেষণা করে দেখা গেছে, সঠিক সময়ে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক পায় এক-চতুর্থাংশ। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবস্থাপনায় আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. আহমদ বলেন, গবেষণায় ১০০টি শিশুর মধ্যে পাঁচটি শিশুও পাওয়া যায়নি, যাদের অক্সিজেন স্বল্পতার বিষয়ে সঠিক তথ্য ছিল। অক্সিজেন দিচ্ছে চোখ বন্ধ করে অন্ধের মতো। যার দরকার ছিল সে হয়তো পাচ্ছে না। যার দরকার নেই, তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। এভাবে অক্সিজেন নষ্ট হচ্ছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মৃত্যু কমানের কোনা প্রভাব পড়ছে না।</span></span></span></span></p>