<p>দেশের চিকিৎসক ও হাসপাতালগুলোর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলর (বিএমডিসি)। চিকিৎসকদের পেশাগত অসদাচরণ, চিকিৎসায় অবহেলা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা—এসব নিয়ে অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত, শুনানি ও নিষ্পত্তি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এটির আইনি ভিত্তি শক্তিশালী ও কার্যপরিধি ব্যাপক হলেও কর্মসক্ষমতা বেশ সীমিত।</p> <p>এর অন্যতম কারণ হিসেবে জনবল সংকট ও জায়গা স্বল্পতার কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, গত চার দশকে দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে অনেক। কিন্তু দক্ষ চিকিৎসক তৈরিতে করতে পারছে না। কারণ শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা পান না। বিশেষ করে বেসরকারি মেডিক্যালগুলোর অবস্থা বেগতিক।</p> <p>মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, দেশে প্রায় ৩৬ হাজার চিকিৎসক নিবন্ধন নবায়ন ছাড়াই পেশা চর্চা করছেন। ভুয়া চিকিৎসকের সংখ্যাও অনেক। যাঁরা বিভিন্ন সময় ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে বিএমডিসিতে নিবন্ধন করেছেন। তবে এর সঠিক তথ্য নেই বিএমডিসির কাছে। নিবন্ধন ছাড়াই কত মানুষ চিকিৎসক পরিচয়ে কাজ করছেন, তাও তাঁরা জানেন না।</p> <p>রাজধানীর বিজয়নগরে বিএমডিসি কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বিএমডিসির সভাপতি এসব কথা বলেন।</p> <p>বিএমডিসির হিসাবে, গত চার দশকে দেশে মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ ও মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল বেড়েছে ২৬ গুণ। নিবন্ধিত চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসক সহকারী বেড়েছে অন্তত ১৭ গুণ।</p> <p>মতবিনিময়সভায় বিএমডিসির স্থায়ী স্বীকৃতি (প্রতিষ্ঠানের) প্রদান কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ও বিএমডিসির রেজিস্ট্রার মো. লিয়াকত হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিএমডিসির বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিকল্পনা নিয়ে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।</p> <p>সভায় জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির কোনো নিজস্ব ভবন নেই। পাঁচ হাজার ফিটের স্টেট মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির নিজস্ব ভবনে নার্সিং কাউন্সিলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ধারণ ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। একটি পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভা করার পর্যাপ্ত জায়গা পর্যন্ত নেই।</p> <p>সীমিত স্থান সংকুলানের পাশাপাশি সীমিত জনবল প্রতিষ্ঠানটির কর্মসক্ষমতা বেশ সীমিত হয়ে পড়েছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অপরিমিত ও দুর্বল অবকাঠামো, অপূর্ণঙ্গ জনবল ও অসন্তোষজনক তাদের বিরুদ্ধে বিএমডিসির ভূমিকা অপ্রতুল।</p> <p>বিশেষ করে ভুয়া চিকিৎসক চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসকদের পেশাগত অসদাচরণ, অবহেলার অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত, শুনানি, পুনর্বিবেচনা ও নিষ্পত্তির দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হচ্ছে। অভিযোগ সত্যতায় চিকিৎসকের  নিবন্ধন স্থগিত হলে সেটির তদারকির জন্য কেউ নেই।</p> <p>১৪ বছরে নিষ্পত্তি ৭১ অভিযোগ : ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ৪৩৩টি অভিযোগ যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএমডিসির নথিতে ১৪৭টি অভিযোগের পৃথক তথ্য রয়েছে।</p>