<p>সারা দেশে ক্ষতিগ্রস্ত সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রগুলো অবিলম্বে মেরামত করে খুলে দেওয়া এবং সংস্কৃতি চর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। তাঁরা বলেছেন, কোটা সংস্কার তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে অনেক কিছু প্রায় স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এলেও এখনো মুক্তভাবে সংস্কৃতি চর্চা করা যাচ্ছে না। রাজধানী ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমি সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র এখনো বন্ধ আছে।</p> <p>গতকাল শুক্রবার ‘দ্রোহ-দাহ-স্বপ্নযাত্রা’ শিরোনামে সাংস্কৃতিক সমাবেশের আয়োজন করে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন আন্দোলনে নিহত ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া এবং প্রবীণ কৃষক নেতা ও যশোর ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক, লোকসংগীত শিল্পী রণজিৎ বাওয়ালি। আলোচনায় অংশ নেন শহীদ আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের কোষাধ্যক্ষ দীনবন্ধু দাশ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।</p> <p>আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রণীত সব ধরনের ‘নিপীড়নমূলক’ আইন বাতিল এবং এসব আইনে গ্রেপ্তার সবাইকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয় সমাবেশে। এ ছাড়া, সব ধর্মীয় ও জাতিসত্তার অধিকার নিশ্চিত করা এবং মাজার-মন্দির ও নারীর ওপর আক্রমণ বন্ধের দাবি জানান গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের নেতারা।</p> <p>উদ্বোধনী বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ‘ছাত্ররা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে আমার একমাত্র সন্তান নিহত হয়েছে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা তার স্বপ্নকে স্বার্থক করে তুলবেন, সেটাই আমার প্রত্যাশা।’</p> <p>বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু। এতে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত-সহিংসতা ও প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নতজানু নীতির কারণে দেশে ‘ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী অপশক্তির আস্ফাালন’ জনমনে ভীতি ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।</p> <p> </p> <p> </p>